Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজে ফিল্ডিংই ভাগ্যবদল বাংলাদেশের

স্নায়ুচাপে ভুগছিল ভারতও

স্পোর্টস রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ দল থেকে যদি কোন প্রতিনিধি আসে সংবাদ সম্মেলনে, বেশিরভাগ সময়ই হয়ে যায় তা আত্মপক্ষ সমর্থনের এক সম্মেলন। এমনকি ২০ ওভারের ম্যাচে ৩-৪টা ক্যাচ ড্রপ করার পরও এটা ক্রিকেটের অংশ বলে, হতশ্রী ফিল্ডিংয়ের দায় পার করতে চায় টাইগার বাহিনী। তবে গতকাল সাকিব আল হাসান ছিলেন বড্ড ব্যাতিক্রম! সরাসরিই শিকার করলেন বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ের করুণ চিত্র। তাতে কি বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলনের সংস্কৃতি একটা ভিন্ন মাত্রা পেল না? মিরপুর টেস্টে দুই ইনিংসেই উইকেট নেওয়ার বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছে সাকিব বাহিনী। কখনও ক্যাচ মিস তো কখনও স্টাম্পিং। ব্যর্থতার মাশুলও দিতে হলো দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও হাত ফসকানোর মাধ্যমে। সাকিবও হতাশার সুরে শুনিয়ে গেলেন ব্যর্থতার গল্প।
মিরাজ ও সাকিবের ঘূর্ণি বোলিংয়ে ম্যাচে তৈরি হয় রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি। কিন্তু শেষটা প্রত্যাশামাফিক হয়নি। গোটা টেস্টেই অনেকগুলো সুযোগ হাতছাড়া করেছে স্বাগতিকরা। সবচেয়ে বড় আফসোস থেকে যেতে পারে শেষটি নিয়ে। অশ্বিনকে ব্যক্তিগত ১ রানে সাজঘরে পাঠানো যেত। তখন পড়ে যেত ভারতের অষ্টম উইকেট। কিন্তু মিরাজের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ ধরতে পারেনি মুমিনুল হক। পরে অশ্বিনই মিরাজের এক ওভারে ১৬ রান নিয়ে খেলা শেষ করে দেন। ৬২ বলে ৪ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। একাধিক সুবর্ণ সুযোগ হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়ায় মেলেনি কাক্সিক্ষত ফল।
সংবাদ সম্মেলন সাকিব বলেন, এগুলো ক্রিকেটের অংশ হলেও বাংলাদেশকে নিয়ে হতাশ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, ‘একটু তো হতাশাজনক। কারণ এগুলোই হয়তো অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ওদের হয়তো প্রথম ইনিংসে রান ৩১৪ না হয়ে ২৫০ হতে পারত। দ্বিতীয় ইনিংসেও অবশ্যই সুযোগ ছিল। এসব ক্রিকেটের অংশ। তবে হতাশানজক যে অন্য দলগুলো এসব মিস করে না, আমরা যেগুলো করি।’ শেষ পর্যন্ত ফিল্ডিং বড় একটা পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে, সাকিব স্বীকার করলেন সেটিও, ‘আমি নিশ্চিত, অন্য কোনো দলই এতগুলো সুযোগ দেবে না, যতটা সুযোগ আমরা দিই। অনেক ক্ষেত্রেই খুবই নিয়মিত সুযোগগুলো আমরা মিস করে ফেলি, যেটা অন্য দেশগুলো করে না।’
ভারতকে সবশেষ কবে টেস্টে এমন চেপে ধরতে পেরেছিল বাংলাদেশ? উত্তটা হবে এর আগে টাইগাররা কখনোই ভারতীয়দের বিপক্ষে এতটা ভালো খেলেনি টেস্টে। গতকাল সফকারীদের লক্ষ্য ছিল মোটে ১৪৫ রানের। তবে সেই লক্ষ্যই এক পর্যায়ে হয়ে গিয়েছিল পাহাড়সম। সাকিব, মিরাজদের স্পিনে কাবু হয়ে ভারতের টপ অর্ডার ধসে যাওয়ার পর ম্যাচ হেলেছিল বাংলাদেশের দিকেই। শেষ পর্যন্ত অশ্বিন ও শ্রেয়াস ম্যাচটা বের করে নেন। এই সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া লোকেশ রাহুল জানালেন, একটা পর্যায়ে মারাত্বক স্নায়ুচাপ আকড়ে ধরেছিল ভারতীয়দের। ভয়ের সেই শীতলতা বয়ে গিয়েছিল গোটা ভারত ড্রেসিংরুমকে। সকালে একের পর এক উইকেট পতনে তাদের ড্রেসিংরুমে ছড়িয়ে পড়েছিল আতঙ্ক, ‘কঠিন ম্যাচ ছিল। স্বস্তির ব্যাপার যে কাজটা আমরা শেষ করতে পেরেছি। আমরা বেশ সমস্যায় পড়েছিলাম, ড্রেসিংরুম স্নায়ুচাপে ভুগছিল। খুবই খুশি যে অশ্বিন ও শ্রেয়াস জুটি গড়ে ম্যাচটা জিতিয়েছে। কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল, এটাই টেস্ট ক্রিকেটকে মজার করেছে। যখন কন্ডিশন কঠিন হয়, তখনই আপনি পরীক্ষার সামনে পড়েন। আমরা এভাবে খেলতে পছন্দ করি। কঠিন ম্যাচ কিন্তু যখন স্মরণীয় জয় আসে তখন সেটা মধুর ব্যাপার।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ