পাকিস্তান ক্রিকেটে বোর্ডে (পিসিবি) লেগেছে পালা বদলের হাওয়া। গত এপ্রিলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারান ইমরান খান। এরপরই এটা অনুমেয় ছিল যে, পিসিবিতে আসবে বহু রদবদল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরীফ দায়িত্ব নেওয়ার পর কেবল অপেক্ষা ছিল, রমিজ রাজার নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট বোর্ডের উপর খড়গ নেমে আসার। তবে রমিজের অধীনে ক্রিকেট দলের সফলতার কারণে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছিলেন না শাহবাজ। অবশেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দলটির ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে মোক্ষম সুযোগটি পেয়ে যায় পাকিস্তানের প্রধান নেতৃত্ব। দিন তিনেক আগে পিসিবির চেয়ারম্যান পদ থেকে রমিজ রাজার বদলে নাজাম শেঠিকে পুর্বহাল করে শুরু হয় বসে যাত্রা। এর পরের ঝড়টা যায় মোহাম্মদ ওয়াসিমের ওপর দিয়ে। প্রধান নির্বাচক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিকে আপাতত সে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
পিসিবিতে শেঠি দায়িত্ব নিয়েই সব কমিটিতে পরিবর্তন আনেন। এর পথ ধরেই জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের অন্তবর্তীকালীন দায়িত্ব পেয়েছেন আফ্রিদি। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে শনিবার দেওয়া বিবৃতিতে তিন সদস্যের নির্বাচক কমিটিতে আফ্রিদির সাবেক সতীর্থ আব্দুর রাজ্জাক ও রাও ইফতেখার আঞ্জুমের নামও ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য, পরে তাদের মেয়াদ বাড়তেও পারে। কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের জন্য আগেই দল ঘোষণা করেছে সদ্য সাবেক প্রধান নির্বাচক ওয়াসিমের কমিটি। আফ্রিদির কমিটির দায়িত্ব হবে এই দলটি পর্যালোচনা করা।
আফ্রিদিকে প্রধান নির্বাচক হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শেঠি। বিবৃতিতে নতুন এই কমিটির ওপর আস্থা রেখে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলের অন্তবর্তীকালীন নির্বাচক কমিটিকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। হাতে অল্প সময় থাকার পরও তারা সাহসী সিদ্ধান্ত নেবেন এবং আসছে নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য আমরা শক্তিশালী ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দল গঠন করতে পারব, এই ব্যাপারে আমার কোন সংশয় নেই। শাহীদ আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার ছিলেন। তিনি কোনোরকম ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছেন। তার আছে প্রায় ২০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সবসময় দলের তরুণ মেধাবীদের সমর্থন করেছেন তিনি।’
আফ্রিদির নাম ১৪ সদস্যের ওই পরিচালনা পর্ষদে আসলে, প্রথমে তিনি নতুন দায়িত্বে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। কারণ হিসেবে বলেন, তার দাতব্য সংস্থার কাজে ব্যস্ত থাকায় বোর্ডের দায়িত্ব নেওয়াটা ঠিক হবে না। পরে অবশ্য শুক্রবার নতুন পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। আফ্রিদি এই ব্যাপারে জানান,‘পিসিবি ম্যানেজমেন্ট কমিটির দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি এবং আমার সামর্থ্যের সবটুকু দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আমাদের আবারও জয়ের ধারায় ফিরতে হবে এবং সেটা মেধাভিত্তিক ও কৌশলগতভাবে দল গঠনের মাধ্যমেই সম্ভব। শিগগিরই আমি নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনায় বসব এবং আসছে ম্যাচগুলোর জন্য আমার পরিকল্পনা তাদের জানাব।