নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আগের দিনের ব্যাটিং ব্যর্থতার হতাশা কাটিয়ে গতকালের সকালে সেশনটা বাংলাদেশের জন্য ছিল আশাজাগানিয়া। তবে পরের সেশনে এসে আবারও সেই আক্ষেপের করুণ সুর। তবে শেষ সেশনে আবার দারুণ বোলিংয়ে মিরপুর টেস্টে দ্বিতীয় দিনশেষে নিজেদের লড়াইয়ে রাখল বাংলাদেশ। ঋষভ পন্ত ও শ্রেয়াস আইয়ারের প্রতি-আক্রমণের বীপরিতে বল হাতে বাংলাদেশকে বলতে গেলে টিকিয়ে রেখেছেন দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম। চা-বিরতির পর ৮৮ রান যোগ করতে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রানে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ভারত। পন্ত ও শ্রেয়াস সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে থামেন, প্রথম জন আউট হন ৯৩ রানে, পরের জন ৮৭ রানে। সাকিব ৪ উইকেট নেন ৭৯ রানে, তাইজুল ৪ উইকেট নিতে খরচ করেন ৭৪ রান। ৮৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশ দিনের বাকি অংশ কাটিয়েছে নিরাপদেই। ৬ ওভার শেষে অবিচ্ছিন্ন নাজমুল হোসেন ও জাকির হাসানের ওপেনিং জুটি, দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সঙ্গে ব্যবধান এখন ৮০ রান।
গতকাল দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ কাটে তাইজুলের বোলিংয়ে। ৬৭ রান যোগ করতে ৩ উইকেট হারায় ভারত, সবকটিই নেন তাইজুল। রাহুল ও গিল- দুজনই হন এলবিডব্লিউ। সামনে এসে খেলতে গিয়ে মিস করেন ভারত অধিনায়ক রাহুল, বাংলাদেশ সে উইকেট পায় রিভিউ নিয়ে, গতকাল একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন রাহুল, বাংলাদেশের একটি রিভিউও ব্যর্থ হয়েছিল তার বিপক্ষে। গিল আউট হন সুইপ করতে গিয়ে। অষ্টম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭ হাজার রান পূর্ণ করা পূজারা আউট হন ইনসাইড-এজে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে। মুমিনুল ক্যাচ ঠিকঠাকই নিয়েছেন, এমন রায় দেন টেলিভিশন আম্পায়ার মাইকেল গফ।
মধ্যাহ্নবিরতিতে অপরাজিত থেকে যাওয়া পন্ত ও কোহলির বিপক্ষে ‘হাফ-চান্স’ তৈরি করেছিলেন মিরাজ। তবে নিচু হওয়া বলে কোহলির আউটসাইড-এজ উইকেটকিপার নুরুলের প্যাডে লাগার পর যায় সিøপের নাগালের বাইরে দিয়, পরে পন্তের আউটসাইড-এজে লাফিয়ে উঠে হাত লাগাতে পারলেও ক্যাচ নিতে পারেননি সিøপে থাকা লিটন দাস। দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকেই অবশ্য সফল হয় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের গুডলেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কোহলি। দেশের মাটিতে তাসকিনের সেটি প্রথম টেস্ট উইকেট। এরপর অবশ্য প্রতি-আক্রমণ শুরু করেন পন্ত ও শ্রেয়াস। দুজনকেই আউট করার সুযোগও হারায় বাংলাদেশ।
শর্ট বলের তত্ত্ব কাজে লাগানোর চেষ্টা করে চেষ্টা করে যাওয়া তাসকিনের বাড়তি বাউন্সের বলে সø্যাশ করতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ তুলেছিলেন শ্রেয়াস, তবে লাফিয়ে উঠে করা মিরাজের ভালো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। উল্টো মুখ থুবড়ে পড়া মিরাজ এরপর মাঠ ছাড়েন রক্তাক্ত নাক নিয়ে। পরে অবশ্য মাঠে ফিরে বোলিং-ও করেন। ১৯ রানে প্রথম জীবন পাওয়া শ্রেয়াস পরেরটি পান ২১ রানে, সাকিবের বলে তাঁকে স্টাম্পিংয়ের সহজতম সুযোগ হাতছাড়া করেন নুরুল হাসান। পরের জীবন পান পন্ত। মিরাজের বলে লং অনে ক্যাচ তুলেছিলেন, তবে বাউন্ডারির বেশ ভেতরে ছিলেন মুশফিক, হাত লাগালেও রাখতে পারেননি ক্যাচ। তার উচ্চতার কেউ পন্তের মতো কারও ব্যাটিংয়ের সময় কেন সীমানায় ফিল্ডিং করবেন, সে প্রশ্নটাও তোলা যায় ভালোভাবেই। জীবন পাওয়ার সময় পন্তের রান ছিল ৫৯। তাইজুলকে ছক্কা মারার পর ডাবলস নিয়ে এর আগেই ৪৯ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি।
সুযোগ হাতছাড়ার ‘শাস্তি’ বাংলাদেশকে ভালোভাবেই দেন পন্ত ও শ্রেয়াস। দ্বিতীয় সেশনে ভারত ২৫ ওভারে ৫.৬০ হারে তোলে ১৪০ রান। ৪৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন পন্ত, শ্রেয়াসের লাগে ৬০ বল। দুজনই অবশ্য পরের সেশনে গিয়ে থামেন সেঞ্চুরির আগেই। মিরাজকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড পন্ত থামেন ৯৩ রানে, এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ বার নড়বড়ে নব্বইয়ে গিয়ে আউট হলেন এ বাঁহাতি, ক্যারিয়ারে যাঁর সেঞ্চুরি ৫টি। শ্রেয়াসের সঙ্গে তার জুটি থামে ১৬১ বলে ১৫০ রানে।
পরের তিনটি উইকেট সাকিবের। ফুললেংথের বলে তুলে মারতে গিয়ে একেবারে সীমানার ওপর নাজমুলের হাতে ক্যাচ দেন অক্ষর প্যাটেল। সুইপ করতে গিয়ে শ্রেয়াস হন এলবিডব্লিউ, টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৮০ পেরিয়েও ৯০-এর আগেই থামলেন তিনি। শ্রেয়াসের মতো অশ্বিনও হন এলবিডব্লিউ, এর আগে তার বিপক্ষে সাকিবের নেওয়া দুটি রিভিউ ব্যর্থ হয়েছিল। মাঝে তাইজুলের বলে সিøপে ক্যাচ দেন উমেশ যাদব, সিরাজকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেটটি নেন সাকিব। সিরাজ হন স্টাম্পিং।
সাকিব-তাইজুলদের বোলিংয়ের পর নতুন আশা দেখছেন ব্যাটসমানরা। আজ গোটা দিনই ব্যাটিংয়ের ইচ্ছা ম্যাচ শেষে জানিয়েও গেছেন চট্টগ্রাম টেস্টে টেলএন্ডার হিসেবে আশা জাগানিয়ে ব্যাটিং করা সেই তাইজুলই!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।