নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রথম দুই সেশনের পারফরম্যান্স আহামরি ছিল না। তবু মুমিনুলের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে দিনের শেষভাগে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে সর্বস্বান্ত হয় টাইগাররা। সেই চিরচেনা মানসিকতা সাদা পোষাকে। হঠাৎই ছন্দপতন ব্যাটিংয়ে, শেষ ১৪ রান তুলতেই হারায় ৫ উইকেট। তাছাড়া গোটা ইনিংসেই উইকেটে সেট হয়েও দৃষ্টিকটুভাবে উইকেট বিলিয়ে আসেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ফলে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। জবাবে আট ওভার ব্যাটিং করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৯ রান করে প্রথম দিনের খেলা শেষ করে ভারত।
সকালে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান টসে জিতলেন, তখন এটি অনুমেয়ই ছিল যে তিনি ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিবেন। মিরপুরে ধীর গতির ও অসম বাউন্সের উইকেটে উইকেটে শুরুটা খুব একটা খারাপ হয়নি স্বাগতিকদের। দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন ও জাকির হাসান জুটি মধ্যমাঠে কাটিয়েছিলেন প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা। তবে দুজন ফেরেন ৪ বলের মধ্যেই। উনাদকাতের লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে গালিতে ধরা পড়েন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জাকির। উনাদকাত প্রায় ১২ বছর পর লাল বলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেই পেলেন উইকেট, সেটিও অভিষেক। জাকির অবশ্য ফিরতে পারতেন আগেই, উমেশের বলে ডিপ ফাইন লেগে বেঁচে যান সিরাজ ক্যাচ ফেলায়। পরের ওভারে অশ্বিনকে প্যাড-আপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ নাজমুল।
সোনার হরিণের মত রানের তালাশে থাকা মুমিনুল আসেন তিন নম্বরে। অশ্বিনকে দর্শনীয় এক কাভার ড্রাইভ করে জানান দিলেন এখনো অনেক কিছুই দেওয়ার আছে এই বাঁহাতি। পরের ওভারে উনাদকাতকে ক্লিপ করে মারেন আরেকটি বাউন্ডারি। দুই অঙ্কে পৌঁছাতে সেই চারের মারকেই বেঁছে নিলেন মিনি। অথচ এই ব্যাটসম্যান আগের ১০ ইনিংস ফিরেছিলেন মাত্র এক অঙ্কেই। দ্বিতীয় সেশনে কক্সবাজারের এই ব্যাটার পেয়ে যান অর্ধশতকের দেখাও। সে সেশনেই বাংলাদেশ হারায় ৩ উইকেট! ২০১৮ সালের পর প্রথমবার চারে নামা সাকিবের পর সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাস। মধ্যাহ্নভোজের পর প্রথম বলেই উমেশ যাদবকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তোলেন সাকিব। তাড়াহুড়ো করতে থাকা বাংলাদেশ কাপ্তান বিরতির আগে বেঁচে যান স্টাম্পিংয়ের হাত থেকে।
মুমিনুল ও মুশফিকের জুটি এরপর এগিয়েছে কখনো ধীরলয়ে, কখনো আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে। মুশফিক খোলস থেকে বের হয়ে এসে ৩৮তম ওভারে অশ্বিনের বলে হাঁকান টানা তিন চার। তার সঙ্গী মুমিনুল পরের ওভারে মারেন আরও দুটি চার। এরপরই মুশফিককে ফিরতে হয় উনাদকাতের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শরীর থেকে দূরে দাঁড়িয়ে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ব্যাটের খোঁচা দেন মুশফিক, ফলে থেমে যায় ৪৮ রানের এক সুন্দর জুটি। এরপরই আসে মুমিনুলের বহু কাক্ষিত পঞ্চাশ। উনাদকাতের বলে দুই চার মেরে মুমিনুল পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ১৬তম অর্ধশতক। বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের পর প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্ষ করলেন তিনি।
অন্য প্রান্তে যোগ দেওয়া লিটন যে এমন উইকেটে শটই খেলবেন, তা বুঝার জন্য খুব একটা বিজ্ঞ হবার প্রয়োজন নেই। সিরাজকে পাঞ্চ করে প্রথম চারটি মেরেছিলেন পয়েন্ট দিয়ে, ঠিক পরের বলে পুল করে মারেন ছক্কা। তবে ইদানীং এই অসাধারণ ব্যাটার ভালো শুরুর পর বড় করতে পারছেন না তার ইনিংসগুলো। গতকালও তাই হলো, অশ্বিনকে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ২৬ বলে ২৫ রান করা লিটন। শেষ সেশনের শুরুটা বেশ ধীর গতিরই হয়। মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে সতর্কই ছিলেন মুমিনুল। তবে বাংলাদেশ টেকেনি তাদের এই প্রতিরোধ। পুরাতন বলেও যে পেসারদের জন্য অনেক কিছুই করার থাকে সেটিই দেখালেন উমেশ। পরের ৩ উইকেট নেন এই পেসার। মিরাজ শরীরের বেশ কাছ থেকে কাট করতে গিয়ে ঋষভ পান্থকে ক্যাচদেন। পা নিয়ে না খেলাটা যে টেস্টের মেজাজের সঙ্গেই যায় না, সেটাই প্রমাণ করল টাইগার ব্যাটাররা। নুরুলের উইকেট ভারত পায় রিভিউ নিয়ে। তাসকিন পয়েন্টে সিরাজের হাতে ধরা পড়েন ড্রাইভ করতে গিয়ে। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সঙ্গীর অভাবেই না সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া হয় মুমিনুলের! শেষ পর্যন্ত নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি আউট হন অদ্ভুতভাবেই। অশ্বিনের অফ স্টাম্পের বাইরের ক্যারম বলটা ছেড়েই দিয়েছিলেন, তবে ভেতরের দিকে ঢুকে সেটি ছুঁয়ে যায় মুমিনুলের গ্লাভস। দুই বল পরেই খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে ইনিংস শেষ করেন অশ্বিন।
একটা সময় মনে হচ্ছিল বেশ ভালোভাবেই বছরের শেষ টেস্টের প্রথম দিনটা পার করতে পারবে টাইগার ব্যাটাররা। তবে টেস্ট মানসিকতা ও সংকৃতির অভাবে এখনও নবজাতকের মতই সাদা পোষাকে প্রতিটি দিন পার করতে হয়। এরপরও মাঝে-মধ্যে ব্যাক্তিগত নৈপুণ্যে বোলাররা বোর্ডে পায় কিছু পুঁজি। সেটা ভ্যেস্তে যায় ফিল্ডারদের হতশ্রী পারফরম্যান্সে। আজ কি তেমন একটা দিন পার করতে যাচ্ছে টাইগাররা?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।