দেশের ৮ বিভাগে ৫১টি জেলায় ২ হাজার ২১ কিলোমিটার জাতীয়, আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়কে গাড়ি চলাচলের চাকা গতি আরো বাড়ল। এসব সড়কের মধ্যে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল হয়ে রংপুর পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচলে নতুন বিন্যাস সংযোজন করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সড়কের নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংস্কারের কাজ বাস্তবায়ন করেছে। একযোগে সারাদেশের ৮ বিভাগে ৫০টি জেলায় উন্নয়ন করা ২০৪৯ দশমিক ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব মহাসড়ক উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল টাঙ্গাইল ও খুলনা জেলা। বাকি জেলাগুলো প্রজেক্টরের মাধ্যমে যুক্ত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মূখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় এতে সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উন্নয়ন করা মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৩২টি, ময়মনসিংহ প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৬টি, চট্টগ্রাম প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৫টি, সিলেট প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৪টি, খুলনা প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৬টি, রংপুর প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৫টি, রাজশাহী প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৮টি এবং বরিশাল প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৪টি।

উদ্বোধন করা ১০০ মহাসড়কের নামের তালিকার মধ্যে ঢাকা প্রশাসনিক বিভাগে রয়েছে, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক, এলঙ্গা-জামালপুর জাতীয় মহাসড়ক, সালনা (রাজেদ্রপুর)-কাপাসিয়া- টোক-মঠখোলা মহাসড়ক, মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-কালিয়াকৈর-ধামরাই-নবীনগর মহাসড়ক, হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, জিঞ্জিরা-কেরাণীগঞ্জ-নবাবগঞ্জ-দোহার-শ্রীনগর মহাসড়ক (কদমতলী থেকে জনি টাওয়ার লিংকসহ), ইজতেমা মহাসড়ক (আর-৩০৩), ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক, জিরাবো-তৈয়বপুর-দিয়াখালী-তাজপুর জেলা মহাসড়ক, মাতুয়াইল-নিউটাউন-কোনাপাড়া-মানিকান্দি-শেখেরজায়গা জেলা-মহাসড়ক, তুরাগ-রুহিতপুর-বাউরভিটা জেলা মহাসড়ক (জেড-৫০৫৯), শ্রীপুর-বৈরাগীরচালা জেলা মহাসড়ক, কালীগঞ্জ-তুমুলিয়া-উলুখোলা জেলা মহাসড়ক, গোলড়া-সাটুরিয়া জেলা মহাসড়ক, নিমতলী-সিরাজদিখান-কাকালদী জেলা মহাসড়ক, মুন্সীগঞ্জ (হাসাড়া)-আলমপরি-শিবরামপুর (সিরাজদীখান)-নওয়াবপুর (কাসুর) জেলা মহাসড়ক, শিবপুর-দুলালপুর-লাকপুর-হাতিরদিয়া জেলা মহাসড়ক, জিহাসতলা- শেখেরচর জেলা মহাসড়ক, রাজবাড়ী-বাগমারা জৌকুড়া ফেরিঘাট সংযোগ সড়ক, আহাদীপুর-রাজবাড়ী-পাংশা-কুমারখালী-কুষ্টিয়া সড়ক (তত্ত্বীপুর-মাচমাড়া অংশসহ), শরীয়তপুর-নড়িয়া (ভোজেস্বর বাইপাসসহ) সড়ক, বোয়ালমারি (সাতৈর) মোহাম্মাদপুর সড়ক, রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি-জামালপুর মধুখালী সড়ক, বিজয়পাশা-তালারহাট-জয়নগরঘাট সড়ক, গোয়ালন্দ (জামতলা) গোদারবাজার-পাংশা-হাবাসপুর সড়ক, ভাঙ্গাব্রিজ-বোতলা-কমলাপুর-আইসার-ধামুসা-পিরেরবাড়ী-সড়ক, পাকুল্লা- দেলদুয়ার-এলাসিন সড়ক প্রশস্তকরণ (দেলদুয়ার-এলাসিন অংশ), ভাতকুড়া (করটিয়া)-বাসাইল-সখিপুর সড়ক প্রশস্তকরণ (ভাতকুড়া-বাসাইল অংশ), টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়ক, ঘাটাইল (পোড়াবাড়ী)-শালিয়াজানী-গোপালপুর-সরিষাবাড়ী (জগন্নাথগঞ্জ) সড়ক, ভরাডোবা-সাগরদিঘী-ঘাটাইল-ভূঞাপুর সড়ক, উজানপুর-বাজিতপুর-অষ্টগ্রাম সড়ক, ময়মনসিংহ প্রশাসনিক বিভাগ, ৩৩ ইসলামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস-হাকিম চেয়ারম্যানবাড়ি-ঋষিপাড়া সড়ক, নান্দাইল-আঠারবাড়ী-কেন্দুয়া সড়ক, ময়মনসিহ-গফরগাঁও- টোক সড়ক, নেত্রকোণা-পূর্বধলা- হোগলা-ধোবাউড়া সড়ক (জেড-৩৭০৭), (নেত্রকোনা-নারায়নডহর পর্যন্ত), ত্রিশাল-বালিপাড়া-নান্দাইল (কানুরামপুর) সড়ক, ভালুকা-গফরগাঁও- হোসেনপুর সড়ক, চট্টগ্রাম প্রশাসনিক বিভাগের, হাটহাজারী-ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি সড়ক, বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-নারায়নহাট-ফটিকছড়ি সড়ক, (হেঁয়াকো-ফটিকছড়ি অংশ), রাউজান-ব্রাহ্মণছড়ি (শহীদ জাফর সড়ক), প্রীতিলতা সড়ক (পটিয়া-বোয়াখালী-কানুনগোপাড়া সড়ক), মইজ্জারটেক-বোয়ালখালী-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা সড়ক, মইজ্জারটেক-বিএনডিসি মৎস বন্দর ফেরিঘাট সড়ক, ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার সড়ক, লক্ষ্মীপুর-চরআলেকজান্ডার- সোনাপুর সড়ক, সোনাপুর (মান্নাননগর)-চরজববর-স্টীমারঘাট সড়ক, ভূঁঞারহাট- চেয়ারম্যান ঘাট সড়ক, সোনাইমুড়ী-সেনবাগ-কল্যান্দী সড়ক, চাঁপাপুর-টমছমব্রিজ-বার্ড-কালিরবাজার-বরুড়া সড়ক, নিমসার-বরুড়া সড়ক, খাজুরিয়া-পয়েলগাছা-বরুড়া সড়ক, লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারাবাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট সড়ক।

সিলেট প্রশাসনিক বিভাগের রাস্তাগুলোর, ৫৪ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক আগের নাম: সিলেট (ওসমানী বিমানবন্দর বাইপাস)-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক, কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরিফপুর জেলা মহাসড়ক (জেড-২৮২২), চুনারুঘাট-সাটিয়াজুড়ী-নতুনবাজার সড়ক, সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, খুলনা প্রশাসনিক বিভাগের মধ্যে রয়েছে, যশোর-বেনাপোল সড়ক, দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (গোয়ালচামট)-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা- মোংলা (দ্বিগরাজ) সড়ক (মাগুরা শহর অংশ), খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়ক (খুলনা অংশ), খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়ক (সাতক্ষীরা অংশ), নওয়াপাড়া-বাগেরহাট-পিরোজপুর সড়ক, আহলাদিপুর-রাজবাড়ী-পাংশা-কুমারখালী-কুষ্টিয়া (চৌরহাস) সড়ক, চড়াইকোল আর-৭১১-শিলাইদহ লিংক রোড সড়ক, বাগেরহাট-চিতলমারী সড়ক, চিতলমারী-পাটগাতী (টুঙ্গিপাড়া) সড়ক,আড়পাড়া-কালিগঞ্জ সড়ক (ঝিনাইদহ অংশ), আড়পাড়া-কালীগঞ্জ সড়ক (মাগুরা অংশ), আড়পাড়া-শালিখা সড়ক, খালিশপুর-মহেশপুর-দত্তনগর-জিন্নানগর- যাদবপুর সড়ক, চুড়ামনকাঠি-চৌগাছা সড়ক, নড়াইল-ফুলতলা সড়ক, কচুয়া (পিংগুরিয়া)- তেলিগাতী- হেরমা-রামপাল সড়ক।

রংপুর প্রশাসনিক বিভাগ, খানসামা-রানীরবন্দর সড়ক, বীরগঞ্জ-খানসামা-দারোয়ানী সড়ক, চিরিরবন্দর-আমতলী বাজার সড়ক, বীরগঞ্জ-কাহারোল সড়ক, পঞ্চগড়-গোয়ালপাড়া-রুহিয়া, গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ ভায়া নাকাইহাট জেলা মহাসড়ক, সোনাহাট সেতু এ্যাপ্রোচ হতে সোনাহাট স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ক, নীলফামারী বাইপাস সড়ক, রানীসংকৈল-হরিপুর সড়ক, জয়পুরহাট-রাজাবিরাট- গোবিন্দগঞ্জ সড়ক, ধূপণী বেলকা সড়ক, দারিয়াপুর-কামারজানি সড়ক, মধুপুর-শ্যামপুর জেলা মহাসড়ক, সাহেবগঞ্জ-হারাগাছ জেলা মহাসড়ক, লালমনিরহাট- মোঘলহাট সড়ক, রাজশাহী প্রশাসনিক বিভাগ, জয়পুরহাট-আক্কেলপুর-বদলগাছি সড়ক, ক্ষেতলাল- গোপিনাথপুর-আক্কেলপুর সড়ক, নন্দিগ্রাম-তালোড়া-দুপচাঁচিয়া-আক্কেলপুর জেলা মহাসড়ক, নন্দিগ্রাম-কালিগঞ্জ-রাণীনগর জেলা মহাসড়ক, হরিশপুর বাইপাস মোড় হতে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় সড়ক, ৯৪ রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়ক, সিরাজগঞ্জ-কড্ডা-সমেশপুর সড়ক, উল্লাপাড়া-লাহিড়ীমোহনপুর-ভাঙ্গুড়া (ময়দানদিঘী বাজার) সড়ক, বরিশাল প্রশাসনিক বিভাগে মধ্যে বরিশাল-ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক, পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক, মাদারীপুর-পাথারিয়ারপাড়-ডাসার আগৈলঝড়া জেলা মহাসড়ক, গুইংগারহাট-চরপাতাস্কুল-দলিলখাঁর হাট-দৌলতখান হ্যালিপ্যাড-দৌলতখান বাজার জেলা মহাসড়ক।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান ইনকিলাবকে বলেন, ১০০টি রাস্তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হলো। এর ফলে রাজধানী থেকে জেলার যোগাযোগ আরও উন্নত বৃদ্ধি হলো। উন্নয়ন কাজের এখন দুর্ঘটনা কমে আসবে।