নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অঘটন, চমক আর উত্তেজনার বিচারে কাতার বিশ্বকাপ আগেই ছাড়িয়ে গিয়েছিল অতীতের অনেক আসরকে। রোমাঞ্চে ভরপুর ফুটবলীয় মহাযজ্ঞের শেষটা হলো আরও দারুণ, ফাইনালের দুই দলকে আলাদা করতে প্রয়োজন পড়ল টাইব্রেকারের। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘোঁচালেন লিওনেল মেসি।
গত রোববার কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিটেও জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি কোনো দল। প্রথমার্ধেই মেসি ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার গোলে এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচের শেষভাগে এসে খেলার চিত্র বদলে দেন কিলিয়ান এমবাপে, এক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে লড়াইয়ে ফেরান ফ্রান্সকে।
নাটকের তখনও বাকি। অতিরিক্ত সময়ে মেসির গোলে ফের এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা, শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দুয়েক আগে পেনাল্টি পেয়ে আবারও সমতা টানেন এমবাপে। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টিতে গিয়ে কাক্সিক্ষত জয়ের দেখা পায় আলবিসেলেস্তেরা। লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা আর্জেন্টিনাকে এনে দেন পরম অরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি। অমরত্বের জয়গান গেয়ে মহাতারকা মেসি ঘোচান তাদের দুর্বিষহ অপেক্ষার প্রহর। অবধারিতভাবে ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রোমাঞ্চকর ফাইনালের তালিকার শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে এই শিরোপা লড়াইটি। ফক্স স্পোর্টসের এক জরিপেও উঠে এসেছে বিষয়টি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমটির তালিকায় এর পরই স্থান পেয়েছে ১৯৫০ সালের সেই ‘মারাকানা ট্র্যাজেডি’র ব্রাজিল-উরুগুয়ের শিরোপা লড়াইটি। যেটিকে আসলে ঠিক ফাইনাল বলা যাবে না। কেননা তখনকার ফরম্যাট অনুযায়ী সেটি ছিল গ্রুপ পর্বের ‘ফ্যাক্টো ফাইনাল’। কেননা এগিয়ে থেকে লড়াইয়ে নামা ব্রাজিলের শুধু হার এড়ালেই নিশ্চিত হতো শিরোপা। সে লক্ষ্যে ৬৫ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল সেলেসাওরা। ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে এরপরের গল্পটা প্রায়সবারই জানা। তবে পাশার দান উল্টে ১৩ মিনিটের মধ্যে (৬৬ ও ৭৯) দুই গোল হজম করে ব্রাজিল। প্রথমবার আয়োজন করেই ২-১ ব্যবধানে শিরোপা জিতে নেয় সুয়ারেজ-ফোরলানের দেশ।
তৃতীয় স্থানে অনুমিতভাবেই স্থান পেয়েছে ১৯৬৬ সালে পশ্চিম জার্মানি বনাম ইংল্যান্ড ফাইনালটি। অনেকের মতে ঐতিহাসিক ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচটি বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সেরা ম্যাচ। যেখানে ফুটবলের দুই পাওয়ার হাউস ম্যাচের মাত্র ২০ মিনিটেই একটি করে গোল পায়। তাতেই পাওয়া যাচ্ছিল রোমাঞ্চের গন্ধ। দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড এগিয়ে যাওয়ার পর স্টপেজ টাইমে গোল করে অতিরিক্ত সয়ে ম্যাচ নিয়ে যায় পশ্চিম জার্মানি। তবে বাকিটা শুধুই ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিকম্যান জিওফ হার্স্টের বদৌলতে ৪-২ ব্যবধানে শিরোপা ঘরে রেখে দেয় ইংল্যান্ড।
তালিকার চার নম্বরের ম্যাচটি ইতিহাস হয়ে আছে ‘মিরাকল অব বার্ন’ নামে। ১৯৬৬ আসরে সুইজারল্যান্ডে শিরোপা হাতে তুলতেই পা দিয়েছিল তৎকালীন ফেভারিট হাঙ্গেরি। তবে তাদের স্বপ্ন ৩-২ গোলে গুড়িয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিয়ে শিরোপায় চুমু আঁকে জার্মানরা। কেননা মাত্র ৮ মিনিটের ব্যবধানে তারাই যে পিছিয়ে ছিল ২-০ ব্যবধানে! ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে জয়সূচক গোলটিতে স্বপ্ন ভাঙে হাঙ্গেরির।
এই তালিকার শেষ ম্যাচটি ম্যাচটি রোমাঞ্চের দিকে থেকে না হলেও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে ঠাঁই করে নিয়েছে তালিকার পঞ্চমে। মেক্সিকোয় ১৯৭০ সালের সেই ফাইনালে একতরফা দাপট দেখিয়ে ইতালিকে ৪-১ গোলে গুড়িয়ে শিরোপা উল্লাসে মাতে ব্রাজিল। তবে ম্যাচটির মাহাত্ম্য বেড়ে যায় ফুটবল কিংবদন্তি পেলের শেষ ম্যাচ বলেই। তাতে জিতে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি শিরোপার অধিকারী হন ‘কালো মানিক’। দলটির কোচ মারিও জাগালোও বনে যান প্রথম ব্যাক্তি যিনি ফুটবলার ও কোচ হিসেবে জেতেন বিশ্বকাপ শিরোপা। পাশাপাশি একটি মাইলফলকও ছোঁয় ম্যাচটি, সেবারই প্রথম শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।