নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা চলতি বছরেই পার করেছিলেন করিম বেনজেমা। মেসি-রোনালদো যুগের মাঝেই প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন এই বছরই। সেই অনুষ্ঠানেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে তার ভেতরে তৈরি রোমাঞ্চের কথা। কিন্তু বিধি-বাম, বিশ্বকাপের মঞ্চে যোগ দিয়ে পড়েন অস্বস্তিতে। ফিরে আসে তার পুরাতন চোট। ফলে দেশের হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা আর দেখেনি আলোর মুখ। তার দল ফ্রান্সও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনাল হেরে ডুবেছে হতাশার সাগরে। লুসাইলের সেই রক্ত হিম করা ফাইনালের পর দিনই নিজের ৩৫তম জন্মদিনে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণাই দিয়ে দিলেন বেনজেমা।
নিজের ৩৫তম জন্মদিনে স্বীকৃত টুইটার অ্যাকাউন্টে এই ঘোষণা দেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। বেনজেমা লিখেন, ‘আজ আমি যেখানে আছি সেখানে পৌঁছতে যে পরিশ্রম ও ভুলগুলো আমি করেছি তা নিয়ে আমি গর্বিত। আমি আমার গল্প লিখেছি ও আমাদেরটা (ভক্তদের উদ্দেশ্যে) শেষ হতে চলেছে।’ গুঞ্জনটা শুরু হয়েছিল কাতার থেকে বেনজেমা ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই। সবাই ধারণা করছিল কোচ দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবণতি হয়েছে। তবে দুজইন মুখে কুলুপ এঁটে স্বাভাবিক আচরণ করছিলেন।
বিশ্বকাপ শুরুর তখন বাকি ২৪ ঘণ্টারও কম সময়, সেই মুহূর্তে ঊরুর চোটে স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়েন বেনজেমা। তার জায়গায় নতুন কাউকে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফান্স। আর বেনজেমা ফিরে যান ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে। সেখানে অনুশীলনে যোগ দেন ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকা। এমনকি বিশ্বকাপ চলাকালেই চোট কাটিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন বেনজেমা। মাঝে রিয়ালের হয়ে লেগানেসের বিপক্ষে খেলেন একটি প্রীতি ম্যাচও। মাঠে ছিলেন ৬০ মিনিটেরও বেশি সময়। যার অর্থ দাঁড়ায় দেশম যদি ফ্রান্স দলের সঙ্গে বেনজেমাকে কাতারে রেখে দিতেন তাহলে নিশ্চিতভাবেই নকআউট পর্বে তার সার্ভিস পেতেন।
এদিকে মরক্কোর বিপক্ষে সেমি-ফাইনালের আগে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে ফ্রান্স দলকে শুভেচ্ছা জানান বেনজেমা। ওই ম্যাচে ২-০ গোলে জিতে ফাইনালে পা রাখে ফরাসিরা। এরপর চারদিকে আবার গুঞ্জন ছড়ায়, ফাইনালের আগে দলে যোগ দিতে পারেন বেনজেমা। শোনা গিয়েছিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁও নাকি চেয়েছিলেন, বেনজেমা দলের সঙ্গে থাকুক। এই তারকাকে ফাইনালে দেখা যাবে কি-না, এমন প্রশ্নে কোচ দিদিয়ে দেশম বলেছিলেন, ‘আমি আসলে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাচ্ছি না। আমি দুঃখিত, পরবর্তী প্রশ্নটা করুন দয়া করে।’ আর তখনই থলের বিড়াল বের হয়ে আসে।
সেই সম্ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়ে বেনজেমা ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘আমি পরোয়া করি না’। ফরাসি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জানা, দোহা থেকে ফেরার পর দেশমের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি বেনজেমা, দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। এরপরই সেই মহাকাব্যিক ফাইনালে, যেখানে আর্জেন্টিনার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। তখন বেনজেমার সাবেক ক্লাব সতীর্থ মেসুত ওজিল টুইট করে বলেন, ‘বেনজেমা নেই তো পার্টিও নেই!’ অন্যদিকে ফাইনালের পরদিনই ফরাসি স্ট্রাইকার জানিয়ে দিলেন ব্লু জার্সি গায়ে তিনি আর নামবেন না সবুজ ঘাসে।
বেনজেমা ২০০৭ সালে অভিষেকের পর ২০০৮ ও ২০১২ ইউরো কাপে খেলেন ফ্রান্সের হয়ে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপ দলের সদস্যও ছিলেন এই স্ট্রাইকার। পরের বছর সেক্সটেপ কাণ্ডে সতীর্থকে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে জাতীয় দলের বাইরে ছিটকে পড়েন। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছরের অপেক্ষা শেষে গত বছরের ইউরোর আগে দেশম দলে ডাকেন তাকে। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়িয়ে হয়ে উঠেছিলেন দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ফ্রান্সের হয়ে ৯৭ ম্যাচ খেলে বেনজেমা গোল করেন ৩৭টি, আর করিয়েছেন ২০টি। দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তিনি আছেন পঞ্চম স্থানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।