মৌলিক গবেষণা ও প্রযুক্তিতে এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে পড়ে থাকার কারণে মেধাবী জনগোষ্ঠীকে শক্তিশালী ও সুসংহত করতে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন চীন। সাংহাই ভিত্তিক চায়না ইউরোপ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলের ম্যানেজমেন্ট প্রেসিডেন্ট চীনা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াং হং এই মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, “আমাদের বিশাল জনসংখ্যার কারণে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতে স্নাতকদের সংখ্যায় বিশ্বে নেতৃত্ব দেয় চীন। ২০২৫ সালের মধ্যে মেধাবী এই জনগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু যে সমস্যাটির দিকে আমাদের তাকানো উচিত তা হলো- মূল প্রযুক্তি ও মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে ‘এই মেধাবীরা কেবল সংখ্যায় বড়, কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী নয়’।
জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি ভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড এমার্জিং টেকনলোজির এক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে ৭৭ হাজার জন পিএইচডি গ্র্যাজুয়েট হওয়ার আশা করা হচ্ছে চীনে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সংখ্যা মাত্র ৪০ হাজার।
চীনে মেধাবীদের বিশাল এই সংখ্যা সত্বেও ওয়াং বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নতুন উদ্ভাবনী প্রতিভার পাশাপাশি মৌলিক গবেষণাকে সরাসরি উত্পাদনশীলতায় কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখনও যথেষ্ট ব্যবধান রয়েছে।
ফুদান ইউনিভার্সিটিতে ফলিত অর্থনীতিতে পোস্টডক্টরালে অধ্যয়নকারী ওয়াং বলেন, চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় মাঝারি থেকে উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিভার অভাব রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ২০ শতাংশের সমান।
ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ চায়না’স সায়েন্স, টেকনলোজি অ্যান্ডন এডুকেশন পলিসির এ বছরের শুরুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, চীনের ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় প্রতিভার ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে অনুমান রয়েছে।
ওয়াংয়ের মতে, চীনে নির্দিষ্ট শিল্পে প্রতিভার অভাব ছাড়াও উদ্ভাবনী, উচ্চ-স্তরের সমন্বিত এবং শিল্প প্রতিভা চীনে খুবই সীমিত।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে চীনের র্যাংকিং নাটকীয়ভাবে ৩৪ থেকে ১১ হয়েছে। আবার উচ্চ-মধ্যম আয়ের গোষ্ঠীর শীর্ষে রয়েছে দেশটি।