গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে। বুধবার রাত পৌনে ৮ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ফারদিন নুর পরশ নিহত হওয়ার ঘটনায় র্যাব তার পারিবারিক সূত্র, অধিকতর তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ, সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের আলোকে রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে।
র্যাব জানায়, গত ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশ্যে বের হয় ফারদিন। বিকাল আনুমানিক ৫টায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার পরিচিতার সাথে তিনি দেখা করে। এরপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমন্ডিসহ পাশবর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করে।
খন্দকার মঈন বলেন, রাত প্রায় ৮টায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ পাশর্বর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরার উদ্দেশ্যে গমন করে। আনুমানিক রাত পৌনে ১০টায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিক্সা থেকে নেমে যায় এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করে।
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, পরবর্তীতে তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় গমন করে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, রাত ২.১ মিনিটে (সিসিটিভি ফুটেজ টাইম ২.৩ মিনিট) যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা থেকে নিহত ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২.২০ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২টা ২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল। এরপর রাত ২টা ৩৪ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ব্রিজের তারাবো প্রান্ত থেকে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দুরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার। রাত ২টা ৩৪.৯ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং রাত ২ টা ৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয়।
ঝাঁপ দেয়ার পর রাত ২.৩৪ মিনিটে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ২.৩৫ মিনিটে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও রাত ২টা ৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
র্যাব মুখপাত্র জানান, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সকল সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফারদিনের মৃত্যু সংক্রান্ত অন্য কোন সূত্র/আলামত পাওয়া গেলে, তবে তা বিবেচনায় নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।