চীনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্যান্টিনে কাজ করতেন ৫২ বছর বয়সী ঝাও ইয়ানফাং। বছর দুই আগে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল তাকে। এখন তিনি ফের কাজে ফিরেছেন। তবে এবার কাজ করছেন একটি নুডল রেস্তোরাঁয়।
বয়স্ক ঝাও একটি মোবাইল ডিভাইসে খাবারের অর্ডার ইনপুট করছিলেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে তিনি জানান, এই পরিশ্রম তিনি করছেন কেবল তার ছেলের জন্য। কোভিড মহামারীর সময়ে তার ছেলে চাকরি হারিয়েছেন। আর যমজ নাতিও রয়েছে তার।
ঝাও বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমার তিন দশকের কাজের অভিজ্ঞতা খাবার পরিবেশিকার জন্য যথেষ্ট হবে। কিন্তু আশা করিনি এটা এতটা চ্যালেঞ্জিং হবে।”
চীনে অবসরে যাওয়া মানুষদের মধ্যে ফের যারা চাকরি বা কাজে ফিরেছেন সেরকম লাখ লাখ মানুষের মধ্যে ঝা একজন। সরকারের শূন্য কোভিড নীতির ফলে ব্যবসা ও অর্থনীতি ভেঙে পড়ায় সংসারের খরচ চালাতে এই মানুষগুলো চাকরি বা সেরকমই কোনো কাজ খুঁজছেন।
কর্মশক্তিতে দীর্ঘদিন ধরে বয়স্কদের সংখ্যা হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে বেইজিংও এসব প্রবীণ মানুষদের কাজে ফেরাতে উৎসাহ দিচ্ছে। গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে আগামী আট দশকে চীনের ১৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মজীবী জনসংখ্যা ৬০ শতাংশের বেশি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, ২০২০ সালের শেষে মূল ভূখণ্ড চীনে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ২৬৪ মিলিয়ন মানুষ ছিল। ২০৩৫ সাল নাগাদ এই জনসংখ্যা ৪০০ মিলিয়নে উন্নীত হতে পারে, যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি হবে।
২০১৯ সালে চীনা একাডেমি অব সায়েন্সেসের ২০১৯ সালের অনুমান বলছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় পেনশন তহবিলের অর্থ শেষ হয়ে যেতে পারে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট লিখেছে, একটি সমস্যা যা সমাধান প্রয়োজন, তা হলো চীনের বাধ্যতামূলক অবসর। চীনে পুরুষদের জন্য অবসরে যাওয়ার বয়স ৬০, নারীদের জন্য ৫৫ আর কঠোর পরিশ্রমী বা শ্রমজীবীদের জন্য ৫০ বছর।
গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের স্টেট কাউন্সিল নিশ্চিত করেছে, বয়স্ক জনসংখ্যা নিয়ে উদ্ভূত নতুন বাস্তবতার কথা চিন্তা করে সরকার ক্রমান্বয়ে কর্মজীবীদের অবসরে যাওয়ার বয়স পিছিয়ে দেবে।