নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
লাঞ্চ বিরতির বাকি তখন আর কেবল চার বল। সেঞ্চুরি থেকে ছয় রান দূরে সাউদ শাকিল। মার্ক উডের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল পুল করার চেষ্টায় লাগল শাকিলের ব্যাটের কানায়। উইকেটের পেছনে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিলেন অলিভার পোপ। কিন্তু গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে বল কি মাটি স্পর্শ করল? প্রশ্নটা রয়ে গেল জোরালোভাবেই। ইংলিশদের অবশ্য অত ভাবাভাবির বালাই নেই। শাকিলকে ফিরিয়ে সবচেয়ে বড় বাধা সরিয়ে পরে তারা জিতে নিল উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ। গতকাল মুলতান টেস্টের চতুর্থ দিনে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ২৬ রানে হারাল ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচের সিরিজ জয় তারা নিশ্চিত করে ফেলল প্রথম দুই টেস্ট জিতেই। পাকিস্তানে ২৬ টেস্ট খেলে ইংলিশদের মাত্র চতুর্থ জয় এটি। সেখানে টানা দুই টেস্ট জিতল তারা ইতিহাসে প্রথমবার। গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার কাছে লাহোরে হারার পর এবার ইংল্যান্ডের কাছে রাওয়ালপিন্ডি ও মুলতানে হার, সেই ১৯৫৯ সালের পর দেশের মাঠে টানা তিন টেস্ট হারল পাকিস্তান।
শেষ দিনের সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায় অবশ্যই শাকিলের ওই আউট। মাঠের আম্পায়ার আলিম দারের ‘সফট সিগন্যাল’ ছিল আউট। তৃতীয় আম্পায়ার জোয়েল উইলসন বারবার রিপ্লে দেখেও মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে উল্টে দেওয়ার ‘শক্ত প্রমাণ’ পাননি। যদিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, বল মাটিতে স্পর্শ করেছে। ধারাভাষ্যে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইক আথারটনও বললেন, কিপারের গ্লাভস পুরোপুরি বলের নিচে ছিল না। ইংল্যান্ড আর জয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন কেবল শাকিলই। টিকে ছিলেন পাকিস্তানের আশা হয়ে। দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েও হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণাকে সঙ্গী করে ফেরেন ৯৪ রানে। এই উইকেটই শুধু নয়, এ দিন মূল পার্থক্য গড়ে দেন মার্ক উডই। স্পিন সহায়ক উইকেটেও গতি দিয়ে তিনি দলকে এগিয়ে নেন জয়ের পথে।
এদিন ৫৪ রানে দিন শুরু করেন শাকিল। পাকিস্তানের প্রয়োজন তখন ১৫৭ রান, ইংল্যান্ডের ৬ উইকেট। ইংলিশরা প্রথম সাফল্য পায় দিনের শুরুর দিকেই। জো রুটকে ড্রাইভ করতে গিয়ে সিøপে ধরা পড়েন ফাহিম আশরাফ (১০)। পরের জুটিতে আবার প্রবলভাবে জেগে ওঠে পাকিস্তানের আশা। শাকিল ও মোহাম্মদ নাওয়াজ দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। ওভারপ্রতি চার রান করে নিয়ে ছুটতে থাকেন দুজন। দ্বিতীয় নতুন বলেও তাদের থামাতে পারেনি ইংল্যান্ড। কিন্তু লাঞ্চের একটু আগে দুজনকেই বিদায় করেন মার্ক উড। শরীর তাক করে গতিময় বোলিংয়ের কৌশল কাজে লাগে, দুজনই আউট হন লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে। প্রথমে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ৭ চারে ৪৫ রান করা নাওয়াজ। পরের ওভারেই শাকিলের ওই আউট।
লাঞ্চের পর উডের এক ওভারেই তিনটি চার মেরে পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দেন অভিষিক্ত আবরার আহমেদ। কিন্তু বল হাতে ম্যাচে ১১ উইকেট শিকারি লেগ স্পিনারকে ১৭ রানে থামান জিমি অ্যান্ডারসন। এরপর পাকিস্তানের শেষ আশা ছিলেন কেবল অলরাউন্ডার আঘা সালমান। তিনি লড়াই চালিয়ে যান, কিন্তু লোয়ার অর্ডারে পাশে পাননি কাউকে। পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটসম্যান কোনো রান করতে পারেননি। সব মিলিয়ে ৩৮ রানের মধ্যে তারা হারায় শেষ ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরিতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হ্যারি ব্রুক। সিরিজের শেষ টেস্ট করাচিতে শুরু আগামী শনিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড : ২৮১ ও ২য় ইনিংস : ২৭৫।
পাকিস্তান : ২০২ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৫৫, আগের দিন ১৯৮/৪) ১০২.৩ ওভারে ৩২৮ (শাকিল ৯৪, নাওয়াজ ৪৫, সালমান ২০*, আবরার ১৭; রবিনসন ২/২৩, লিচ ১/১১৩, রুট ১/৬৫, উড ৪/৬৫, অ্যান্ডারসন ২/৪৪)। ফল : ইংল্যান্ড ২৬ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য মাচ : হ্যারি ব্রুক।
সিরিজ : ৩ ম্যাচে ২-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।