Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পেরুতে সহিংসতায় নিহত ২ বন্ধের ঘোষণা বিমানবন্দর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় আন্দাহুয়াইলাস বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অভিশংসনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাস্তিয়োকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে পেরুর রাজধানী লিমাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অব্যাহত প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছে। রোববার সহিংস প্রতিবাদ চলাকালে অন্তত দুই জন নিহত হয়েছে ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ছবিতে আন্দাহুয়াইলাস বিমানবন্দর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানবন্দরটিতে ৫০ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মীকে বিক্ষোভকারীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গত বুধবারে ক্যাস্তিয়োকে অভিশংসিত করে আটক করার পর থেকে লিমাজুড়ে টানা বিক্ষোভ চলছে। নগরীটিতে রোববার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টায় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুড়েছে। পেরুর পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বেসামরিক বিমান চলাচল অধিদপ্তর করপ্যাক জানিয়েছে, শনিবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে আন্দাহুয়াইলাস বিমানবন্দরের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিমানবন্দরটির টার্মিনালে ৫০ জন কর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, কিছু লোককে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পেরুর কেন্দ্রীয় পুলিশ পরে জানায়, কর্মকর্তারা রাজ্য পুলিশকে নিয়ে বিমানবন্দরটিতে গিয়েছিলেন, সেখানে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সেখানে এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে জানিয়ে পুলিশ বলেছে, কী পরিস্থিতিতে তার মৃত্যু হয়েছে তা স্পষ্ট করতে তারা তদন্তের পদক্ষেপ নিচ্ছে। পেরুর ন্যায়পাল জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তি একজন কিশোর। পরে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিজার সেরভান্তেস জানান, আন্দাহুয়াইলাসের অস্থিরতায় দ্বিতীয় আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। ন্যায়পাল ও পুলিশ এসব সহিংসতা অবসানের আবেদন জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার শত শত মানুষ লিমার রাস্তায় নেমে ক্যাস্তিয়োর মুক্তি ও তার বদলে প্রেসিডেন্ট হওয়া দিনা বলুয়ার্তের পদত্যাগ দাবি করে। শনিবার আন্দাহুয়াইলাসের প্রতিবাদে তিন হাজার মানুষ শামিল হয়। এদের কিছু অংশ নগরীর কয়েকটি থানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার চেষ্টা করে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম। ন্যায়পাল জানিয়েছেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে ১৬ প্রতিবাদকারী ও চার পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। পেরুর দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষমতাচ্যুত ক্যাস্তিয়োর ব্যাপক জনসমর্থন আছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। ক্ষমতা হারানোর পর গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন। এর আগে পেদ্রো কাস্তিলো বলেছিলেন, তিনি কংগ্রেসের পরিবর্তে একটি ‘ব্যতিক্রমী জরুরি সরকারের মাধ্যমে’ দেশ পরিচালনা করবেন। তার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট বোলুয়ার্তেসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য। তারা জরুরি বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট কাস্তিলোকে অপসারণ করেন। এরপর তাঁকে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দিনা বোলুয়ার্তে তার বক্তৃতায় পেরুর নাগরিকদের জাতীয় ঐক্যের জন্য এক জোট হওয়ার আহ্বান জানান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাজনৈতিক যুদ্ধবিরতি চান। বিবিসি জানিয়েছে, পেদ্রো কাস্তিলো গত বছরের জুনে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি অন্তত তিনবার কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কাস্তিলোকে অপসারণের ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেছিলেন, তিনি কংগ্রেস ভেঙে দেবেন এবং জরুরি সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করবেন। তার এমন ঘোষণায় অনেকেই হতবাক হয়েছেন। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগও করেন। পেরুর সাংবিধানিক আদালতের প্রধান কাস্তিলোর বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার’ অভিযোগ করেন। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ