Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রেকর্ড হারে শেষ বাংলাদেশের ধবলধোলাই মিশন

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশবাসীর আশার পারদটা ছিল আকাশছোঁয়া। ভারতকে ধবলধোলাই করবে বাংলাদেশ। সেই প্রত্যাশার চাপেই হয়তো ভেঙে পড়ল। এতটাই করুণ অবস্থা দাঁড়াল যে, ৪১০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে, ১৪৯ রানে হারিয়ে ফেলল ৯ উইকেট। সেই মুহূর্তে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হার চোখ রাঙাচ্ছিল টাইগারদের। তবে তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানের ব্যাটে সেই লজ্জার হাত থেকে বাঁচল বাংলাদেশ দল। ম্যাচের ৩৪তম ওভারে উমরান মালিকের বলে ফিজ বোল্ড হলে ১৮২ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। চট্টগ্রামে বিরাট-রাহুলদের হোয়াইটোয়াশ করতে গিয়ে উল্টো ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে হারতে হলো টাইগারদের। রানের হিসেবে বাংলাদেশের এর চেয়ে বড় ব্যবধানে হার আছে মাত্র একটি, ২০০০ সালে পাকিস্তানের কাছে ২৩৩ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। শুরুটা ভালোই হয়েছিল টাইগারদের। ব্যক্তিগত ৩ রানে ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাটিংয়ে নেমে শট মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে ছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু সহজতম ক্যাচ ফেলে দেন কাপ্তান লিটন। ঠিক এই জায়গাতেই ম্যাচের হাওয়া বদলে যায়। বিরাট সাজঘরে ফিরলে হয়তো, রোহিত শর্মার পরিবর্তে খেলা ঈশান কিষান এতটা তাণ্ডব ছড়াতেন না। গতকাল এই ২৪ বছর বয়সি বাঁহাতি একাই গড়ে দিলেন দুই দলের পার্থক্য। মাত্র ৮৫ বলে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে নেন ইশান। ৮৫ বলে শতকটাকে ঈশান দ্বিশতকে নিয়ে যান। সেখান থেকে মাত্র ৪১ বলে তুলে নেন পরের শতকটি! গোটা ইনিংসে ২৪ চার ও ১০ ছক্কার মারে ১৩১ বলে ২১০ রান করেন ইশান। তাসকিনের বলে স্ট্রেইট ড্রাইভে ছয় হাঁকাতে গিয়ে লিটনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে কোহলির সঙ্গে ২৯০ রানের জুটি গড়েন ঈশান। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। এরপর প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর ওয়ানডেতে শতকের দেখা পান বিরাট কোহলি। ৮৫ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৪তম শতক তুলে নেন তিনি। ১১৩ রানে তাকে থামান সাকিব আল হাসান। মাঝে শ্রেয়াস আইয়ার ও অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে দ্রুত সাজঘরে ফেরান এবাদত হোসেন। শেষ দিকে অক্ষর প্যাটেলের ৩৭ ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ২০ রান করেন। তাতে সফরকারীদের ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটের বিনিময়ে ৪০৯ রানে।
পাহাড়সম রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ চাপে ছিল। তবে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লিটন। দুই ব্যাটার মিলে ৪ ওভারে তুলেন ৩৩ রান। এরপরই ছন্দপতন। অক্ষর প্যাটেলের প্রথম ওভারে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে মোহাম্মদ সিরাজের হাতে ধরা পড়েন বিজয়। ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন লিটনও। চারটি বাউন্ডারি ও ১ ওভার বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ২৯ রান করেন তিনি। এরপরও মোহাম্মদ সিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে শার্দুর ঠাকুরের হাতে ধরা পড়েন লিটন। ভারতের বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেলকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন সাকিব আর হাসান ও ইয়াসির আলী রাব্বি। উমরান মালিকের গতিতে পরাস্ত হন রাব্বি। ফেরার আগে ৩০ বলে করেন ২৫ রান করেন। এরপর ৫০ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন সাকিব।
অন্যকোন ব্যাটাররা শুধু এলেন আর গেলেন। তাতেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ১৮২ রানে। ভারতের জয় ২২৭ রানের। কোনো টেস্টখেলুড়ে দেশের বিপক্ষে এটিই তাদের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। আগামী ১৪ তারিখ থেকে একই মাঠে দুই দলের মধ্যকার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ