Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নতুন বছরে আরো খারাপ হতে পারে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি

বিশ্বের অনেক দেশ এখন মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে। পণ্যের দামের তুলনায় আয় না বাড়ায় খরচের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম

যুদ্ধ-বিগ্রহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানান কারণে ২০২২ সালটি অর্থনীতির জন্য সুখকর ছিল না। মাত্র ২২ দিন পর আসছে নতুন বছর ২০২৩। অর্থনীতিবীদরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, সামনের বছরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী দেখা দেয় করোনা মহামারি। এতে করে থমকে যায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। অনেকেই ভেবেছিল ২০২২ সালটি হবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। কিন্তু এ বছর বিশ্ব দেখল রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি, বড় বড় প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়। ইতিহাসবিদ অ্যাডাম ট্রোজের মতে এটি একটি ‘পলিক্রাইসিস’ বছর। এখন সামনের বছরে এরচেয়েও খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলছেন অর্থনীতিবিদরা। অ্যামস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি বিষয়ের অধ্যাপক রোয়েল বিটসমা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এ শতকের শুরুতে অসংখ্য সংকট শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন কঠিন পরিস্থিতি আমরা আর কখনো দেখিনি।’ করোনায় বিপর্যস্ত ২০২০ সাল শেষে বিশ্ব যখন ২০২১ সালে পা দিল তখন বাড়তে থাকল জিনিসপত্রের দাম, দেখা দিল মুদ্রাস্ফীতি। অর্থনীতিবিদরা বললেন, এই মুদ্রাস্ফীতি সাময়িক সময়ের জন্য। দ্রæতই এটি কমে যাবে। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হলো। বিশ্বের অনেক দেশ এখন মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও সেই অনুযায়ী বেতন না বাড়ায় এখন অর্থ খরচের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ব্যাংকগুলো ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে সুদের হার বাড়িয়েছে। এতে করে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে মন্দা দেখা দেওয়ার শঙ্কা। কারণ সুদের হার বাড়ানোর কারণে মানুষ ব্যাংক থেকে ঋণ কম নেবে। এতে করে ধীর হয়ে আসবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কোঅপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানিয়েছে, বিশ্বের ২০ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এ বছরের শেষ পর্যন্ত খুচরা পণ্যের দাম ৮ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। পরের বছরের শুরুতে তা ৫.৫ ভাগে নেমে আসতে পারে। ওইসিডি বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছে, তারা যেন সাধারণ মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসে। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব যেন সাধারণ মানুষের ওপর না পড়ে সে চেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ । এজন্য ৬৭৪ বিলিয়ন ইউরোর সহায়তা প্যাকেজ হাতে নিয়েছে তারা। এরমধ্যে জার্মানি নিজ নাগরিকদের জন্য খরচ করবে ২৬৪ বিলিয়ন ইউরো। কারণ রাশিয়ার জ্বালানির ওপর অতি নির্ভরশীল জার্মানিই সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে। জানা গেছে, জার্মানিতে এখন প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন ভেবে-চিন্তে খরচ করছেন। তারা প্রয়োজনীয় পণ্যটি আগে বেঁছে নিচ্ছেন। অর্থনীতিবিদদের মতে জার্মানি, ইতালি মন্দায় পড়বে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিও নি¤œমুখী রয়েছে।, তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এখনো আশা করছে ২০২৩ সালে ২.৭ ভাগ হারে অর্থনৈতিক পরিধি বাড়বে। ওইসিডির মতে এটি হতে পারে ২.২ ভাগ। এছাড়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ২৬৮ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে বন্যার কারণে শুধুমাত্র পাকিস্তানই ৩০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এএপপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ