মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পাচার হওয়া নারীদের নিয়ে ভারতে একটি অপরাধী চক্র রমরমা যৌন ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। স¤প্রতি পুলিশের জালে ধরা পড়েছে সেই চক্রের হোতারা। এ বিষয়ে বিবিসি’র প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো। সাইবারাবাদ পুলিশের গোয়েন্দাদের কাছে নারী পাচার এবং যৌনকর্মীদের সম্বন্ধে যেরকম নিয়মিত তথ্য আসে, সেভাবেই শুরুটা হয়েছিল। কয়েকটা জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে যৌন কর্মী এবং খরিদ্দারদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তদন্ত চালাতে গিয়ে আরও তথ্য সাইবারাবাদ পুলিশের মানবপাচার রোধ বিভাগের হাতে আসতে থাকে। ‘প্রথম গ্রেফতাারিটা আমরা করেছিলাম নভেম্বরের মাঝামাঝি। তার নাম সালমান। এরপরে অর্ণভ নামে একজন ধরা পরে। এদের জেরা করে আর মোবাইল কল ডিটেইলস ইত্যাদি পরীক্ষা করে আমরা মূল চক্রী কোথায় থাকে সেটা জেনে যাই। হায়দ্রাবাদ শহরের কেন্দ্রস্থলে একটা উচ্চবিত্ত পাড়ায় হানা দিয়ে আমরা মূল চক্রী আদিম আর তার বান্ধবী হরভিন্দর কউরকে ধরে ফেলি। তারা দুজনেই তখন ড্রাগসের নেশা করছিল,’ বলছিলেন সাইবারাবাদ পুলিশের অপরাধ দমন শাখার অতিরিক্ত কমিশনার কভিথা দারা। একদিকে যখন হায়দ্রাবাদ আর সাইবারাবাদে যৌন ব্যবসা চালানো ব্যক্তিদের খোঁজ চলছিল, তখনই তেলেঙ্গানার অনন্তপুর আর বেঙ্গালুরুতেও পুলিশের দল পাঠানো হয়। একে একে মুম্বাই আর দিল্লি থেকেও চক্রীরা ধরা পরে। গোটা চক্রটির কাজকর্ম কীভাবে চলত তা যখন সামনে আসে, তাতেই দারা আর তার তদন্তকারীদের দল বুঝতে পারে বহু দূর পর্যন্ত এই চক্রের জাল ছড়িয়েছে। দারা জানাচ্ছিলেন, এই চক্রটির দালালরা বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকত। তারাই এলাকার অভাবী নারীদের খুঁজে বার করত, তাদের ছবি যোগাড় করে রাখত। এই নারীদের লোভ দেখানো হত ভাল বেতনের চাকরীর, উন্নত জীবনযাত্রার। গোটা কর্মকাÐে ব্যবহার করা হত সামাজিক মাধ্যম, বিভিন্ন ওয়েবসাইট এমন কি এদের একটা নিজস্ব ছোটখাটো টেলিফোন এক্সচেঞ্জও ছিল। কভিথা দারা বলছিলেন, নারীদের নির্দিষ্ট করার পরে চক্রের মাথারা তাদের খুব সন্তর্পণে বেছে নেয়া খরিদ্দারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রæপে দেয়া হত নারীদের ছবি। চক্রের একেকজন সদস্য মোটামুটিভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ খরিদ্দারকে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রæপটা বানাতো। কোনও নারীকে খরিদ্দারের পছন্দ হলে তার কাছে ওই নারীর যাতায়াত, থাকার বন্দোবস্ত সব করে দিত চক্রেরই অন্য কেউ। যৌন কর্মের জন্য বিভিন্ন হোটেল, লজ ইত্যাদি ব্যবহার করা হত। আবার যৌন কর্মীদের এক জায়গা থেকে অন্য শহরে বিমানেও পাঠানো হত। এই চক্রের মধ্যে ঋষি নামে একজনের আবার দায়িত্ব ছিল বিদেশ থেকে নারীদের নিয়ে আসার। বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড এমনকি রাশিয়া আর উজবেকিস্তান থেকেও নারীদের নিয়ে আসা হত খরিদ্দারকে সন্তুষ্ট করার জন্য। তবে যে ১৪ হাজারেরও বেশি নারী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের প্রায় অর্ধেকই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। এরপরে অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক প্রভৃতি রাজ্য থেকেও নারীদের আনা হত। বাংলাদেশি নারীদের সংখ্যাটা প্রায় শ’চারেক বলে মনে করছেন দারা। তবে এই ১৪ হাজার নারীকেই যে উদ্ধার করা গেছে, তা নয়। যে ১৩০ জনকে সরাসরি উদ্ধার করা গেছে, তাদের আদালতে হাজির করিয়ে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। কিন্তু সাইবারাবাদ পুলিশের কাছে এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ উদ্ধার না হওয়া নারীদের তথ্য যোগাড় করে তাদের নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা। সেজন্য তারা বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশকে চিঠি দিচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নারী পাচার রোধে কাজ করে, এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শক্তি বাহিনীর প্রধান ঋষিকান্ত বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন এই কাজ শুধু রাজ্য পুলিশ দিয়ে হবে না। ঋষিকান্তের কথায়, এই ঘটনায় আবারও সামনে এল যে বাংলাদেশ থেকে নারীদের পাচার করে ভারতে নিয়ে এসে যৌন পেশায় নামানো হচ্ছে। এটা তদন্ত করে দেখা দরকার যে সীমান্তের দুইদিকেই কারা এই নারীদের পাচার করাচ্ছে। তিনি মনে করেন, এত বড় চক্র সামনে আসার পরে বিষয়টি সন্ত্রাস দমনের কাজ করে যে জাতীয় তদন্ত এজেন্সি বা এন আই এ, তাদের হাতে এই তদন্ত প্রক্রিয়া তুলে দেওয়া উচিত। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।