গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর নয়াপল্টনে জড়ো হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রায়টকার দিয়ে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে পুরো এলাকা যেন রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। বর্তমানে কার্যালয়ের সামনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এদিকে, দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করছেন, বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অনেকেরই পায়ে, হাতে ও বাহুতে গুলি লেগেছে।
জানা গেছে, বিএনপি নেতা খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ছাত্রনেতা মেহবুব মাসুম শান্তসহ অসংখ্য নেতাকর্মী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে পুলিশ নয়াপল্টনে বিভিন্ন গলিতে ঢুকে অভিযান চালিয়ে সামনে যাকেই পাচ্ছে তাকেই মারধরের পর ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিন সকালে থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার পক্ষে স্লোগান দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। ব্যবহার করা হয় রায়টকার ও জলকামান।
অন্যদিকে স্লোগান দিয়ে পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে ফকিরাপুল মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের ছোড়া অসংখ্য টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দলীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকা।
জানা যায়, কার্যালয়ের বাইরে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা। আর কার্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপি নেতাদের দাবি, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভেতরে অমানবিক অবস্থায় আছেন নেতাকর্মীরা। কার্যালয়ের বাইরে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করায় নেতাকর্মীরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
এ ছাড়া কার্যালয়ের চারপাশের দোকনপাট সবকিছু বন্ধ রয়েছে। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
এই ব্যাপারে মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিনা উসকানিতে আমাদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়লে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছি।
ঢাকায় আগামী ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ সামনে রেখে গত দুদিনের মতো আজও নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার পক্ষে স্লোগান দেন তারা।
বিভাগীয় গণসমাবেশের ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকায় আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ নিয়ে সরগরম দেশের রাজনীতি। সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ও বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াতে থাকে। সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা বললেও, বিএনপি নয়াপল্টনে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে কিংবা বিকল্প কোনো ভেন্যুতে সমাবেশ করতে চায়। এ নিয়ে পরস্থিতি ক্রমেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এদিকে সমাবেশে যোগ দিতে ইতোমধ্যে সারা দেশ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। অনেকে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিদিন ভিড় করছেন। আজও তেমনিভাবে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আজ সকালেই হুট করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের বাড়তি সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পরে দুপুরে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায় নেতাকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।