চীনে কঠোর কোভিড নীতিবিরোধী বিক্ষোভ দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রশাসনের জন্য জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কোভিড নীতি নিয়ে চীনের নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা গ্রহণযোগ্য সব মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কঠোর কোভিড নীতি চীনের লাখ লাখ নাগরিকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। গ্লোবাল স্ট্র্যাট ভিউর মতে, বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। খবর এএনআইয়ের।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) শূন্য কোভিড নীতি বাতিলের দাবিতে দেশটির সাংহাই থেকে বেইজিং, গুয়াংঝু থেকে চেংডুর মতো বড় শহরগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে। এসব বিক্ষোভ শির সুনামের জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়।
এই বিক্ষোভগুলি শি এবং তার নেতৃত্বে চীনের সাফল্য তুলে ধরার জন্য সিসিপির চেষ্টাকে এমন এক সময়ে আঘাত করছে, যখন তিনি কেবলই তৃতীয়বারের মতো সিসিপির নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
গ্লোবাল স্ট্র্যাট ভিউর মতে, অতীতে দেশটিতে হওয়া শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্তৃপক্ষ খুব কার্যকরভাবে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে চলমান বিক্ষোভে দমন-পীড়ন ১৯৮৯ সালের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে চালানো হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি দ্রুত সামনে নিয়ে আসবে। ফলশ্রুতিতে এই বিক্ষোভগুলো দীর্ঘমেয়াদে সামগ্রিকভাবে বেশ প্রভাব ফেলবে।
কর্তৃপক্ষের কঠোর কোভিড নীতিকে কেন্দ্র করে দেশটিতে ছড়ানো প্রথমবারের মতো ব্যাপক বিক্ষোভে বেশকিছু মিম, স্লোগান ও পোস্টার ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা শি জিনপিং ও কমিউনিস্ট পার্টির পদতত্যাগ দাবি করছেন। বিশেষ করে দেশটির জিনজিয়াংয়ের প্রাদেশিক রাজধানী উরুমকির এক আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহতের পর দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ,
লকডাউন চলায় ওই ভবন থেকে আগুনে আটকাপড়াদের বের হতে দেওয়া হয়নি। আর এতেই প্রাণহানির ওই ঘটনা ঘটে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের পর চলমনা বিক্ষোভই কমিউনিস্ট শাসিত দেশটির অন্যতম বড় বিক্ষোভ। আর এই বিক্ষোভে কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়ার মানে হলো বিক্ষোভ আরও ছড়ানো এবং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়া।