Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চীনের ‘সাদা কাগজ বিপ্লব’ বৈশ্বিক মনোযোগ কেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৫:৩১ পিএম

চীনের কমিউনিস্ট সরকারের কঠোর ‘শূন্য করোনা নীতির’ বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে মানুষ। তিন বছরের কাছাকাছি সময় ধরে চীনে করোনাভাইরাস শনাক্তে গণপরীক্ষা, বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন এবং লকডাউনের কারণে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছে তারা। বিক্ষোভের মুখে অবশ্য করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে শি চিনপিং সরকার। তবে বিক্ষোভের সময় প্রতিবাদকারীদের হাতে থাকা ‘সাদা কাগজ’ মনোযোগ কেড়েছে বিশ্বের। যেটিকে ‘সাদা কাগজ বিপ্লব’ আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
এএনআইর বরাতে দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা কাগজের ফাঁকা শিটগুলো কমিউনিস্ট শাসিত চীনের কঠোর শূন্য করোনা নীতির বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ করা গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সাদা কাগজ বিপ্লব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে করা সমালোচনামূলক অসংখ্য পোস্ট, সংবাদ নিবন্ধ ইন্টারনেট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
কোভিড নীতিবিরোধী বিক্ষোভে চীনের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে চীনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই।
আমেরিকান ম্যাগাজিন ন্যাশনাল রিভিউয়ের জন্য একটি লেখায় কলামিস্ট জিয়ানলি ইয়াং এবং ব্র্যাডলি থায়ার যুক্তি দিয়েছিলেন যে ‘সাদা কাগজের’ বিপ্লব দীর্ঘ হবে। তারা আরও দাবি করেন যে এর প্রভাব বহুমুখী এবং সম্ভবত একটি বৃহত্তর বিপ্লবের ফিউজ আলোকিত করবে, যা একটি মুক্ত চীন তৈরি করবে।
একটি যৌথ মতামতে, ইয়াং এবং থায়ের বলেছেন যে শি চিনপিং তার কমরেড এবং জনগণের মধ্যে ভয়কে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং একজন অদম্য মহান নেতা হিসেবে তার ভাবমূর্তি উন্নীত করার জন্য তার ক্ষমতার মধ্য থেকে সবকিছু করবেন, তিনি সেটা ভালোই জানেন।
তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে সমর্থন করার জন্য এবং বেইজিং সরকারকে বলপ্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখতে এবং বিশেষ করে তিয়ানানমেনে আরেকটি গণহত্যা প্রতিরোধ করার জন্য সমস্ত উপলব্ধ উপায় ব্যবহার করা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, সপ্তাহ শেষে চীনের বৃহত্তম শহর এবং আর্থিক কেন্দ্র সাংহাইতে হাজার হাজার মানুষ প্রকাশ্যে সরকারের কঠোর কভিড-১৯ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। তারা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্তৃত্ববাদী শাসনের নিন্দাও করতে শুরু করে।
বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর শিনজিয়াংয়ে কঠোর লকডাউনে ঘরে বন্দি থাকার অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।
ইনসাইডওভার প্রকাশনায় কলামিস্ট ফেদেরিকো গিউলিয়ানি বলেছেন, যে চীনা রাষ্ট্রপতি একটি অভূতপূর্ব সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশ্ব তীক্ষ্ণভাবে কমিউনিস্ট চীনের অচিন্তনীয় পতন দেখছে, কারণ বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে শি চিনপিং যদি কঠোর শূন্য করোনা নীতি না ছাড়েন তবে সেটি দেশকে বড় পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ