মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে। পোয়াবারো হয়েছে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের। সুইডেন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) জানিয়েছে, সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সমস্যা থাকা সত্ত্বেও গত বছর বিশ্বের ১০০টি বড় বড় অস্ত্র ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো ৫৯২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
এসআইপিআরআইয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গত সাত বছর ধরেই বিশ্বজুড়ে অস্ত্র বিক্রি বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এই হার ২০২১ সালে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৯ শতাংশে। এর আগে ২০১৯-২০২০ সালে অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ।
এসআইপিআরআই বলেছে, ২০২১ সালে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় (সাপ্লাই চেইন) সমস্যার কারণে অস্ত্র বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত ছিল। ধারণা করা হয়েছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অস্ত্র বাণিজ্য আরও খারাপ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং বাণিজ্য বেড়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। কারণ অস্ত্র উৎপাদনের যে কাঁচামাল, তার সিংহভাগ সরবরাহ করে রাশিয়া। সরবরাহ ব্যবস্থার এ সমস্যার কারণে সবচেয়ে বিপদে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের অস্ত্র মজুতের যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে সমস্যার পড়তে হবে দেশটিকে।
অন্যদিকে যুদ্ধের কারণে রাশিয়া নিজেদের অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধ-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে বাইরের দেশগুলোতে অস্ত্রের কাঁচামাল সরবরাহ করছে না রাশিয়া। এই সবকিছু মিলিয়ে অস্ত্র উৎপাদন কমেছে। তবে অস্ত্র উৎপাদন কমলেও বেড়েছে অস্ত্র বিক্রি।
এসআইপিআরআই জানিয়েছে, বিশ্বে ১০০টি শীর্ষ অস্ত্র কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। মূলত অস্ত্র ব্যবসার অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি। বর্তমানে গোটা বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসার মোট মূল্য ৫৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর শেয়ার রয়েছে ২৯৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসা নিম্নমুখী হতে শুরু করে। তবে ইউরোপের অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে। অস্ত্র ব্যবসায় ইউরোপের কোম্পানিগুলোর শেয়ার রয়েছে ১২৩ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছরে সেখানে অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
এসআইপিআরআইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীনে অস্ত্র ব্যবসার বড় উত্থান ঘটেছে। চীনের শীর্ষ ৮টি অস্ত্র কোম্পানির মোট অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ১০৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়াতেও বেড়েছে অস্ত্র বিক্রি। এসআইপিআরআইয়ের ১০০টি শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় স্থান পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার চারটি কোম্পানি। এই চারটি কোম্পানি সম্মিলিতভাবে গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছে। তাদের মোট অস্ত্র বিক্রি পরিমাণ ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ বছরের শুরুর দিকে পোল্যান্ডের সঙ্গে বড় ধরনের অস্ত্র চুক্তি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর ফলে আগামী বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্ত্র বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ফ্রান্সের ডেজাল্ট অ্যাভিয়েশন গ্রুপের অস্ত্র বিক্রিও ২০২১ সালে ৫৯ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এসআইপিআরআইয়ের তালিকায় থাকা ১০০টি শীর্ষ অস্ত্র কোম্পানির মধ্যে ইউরোপের ২৭টি কোম্পানি রয়েছে। গত বছর তাদের সম্মিলিত অস্ত্র বিক্রি ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এ ছাড়া এ তালিকায় রয়েছে রাশিয়ার ৬টি কোম্পানি। তাদের সম্মিলিত বিক্রি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।