Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চীনে জনরোষ ও বিক্ষোভ দমনে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে পারে শি জিনপিং

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:২৩ পিএম
চীনে শূন্য-কোভিড নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মধ্যে ক্রমাগত ক্ষোভ দমনে শি জিনপিং সরকার ব্যাপক অভিযান চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন একসময় বেইজিংয়ে কাজ করা ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জন পমফ্রেট। তিনি বলেছেন, অনেক আগে তিয়েনআনমেন স্কয়ারসহ সারাদেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নাটকীয়ভাবে যে পরিবর্তন ঘটিয়েছিল তৎকালীন চীন সরকার, সেটিই ঘটতে পারে।
১৯৯৭ থেকে থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত চীনে ওয়াশিংটন পোস্টের ব্যুরো প্রধান ছিলেন পমফ্রেট। সেখানে পুরনো অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ১৯৯৯ সালের ২৫ এপ্রিল হাজার হাজার ফালুন গং   বেইজিংয়ের ঝোংনানহাই লিডারশিপ কমপাউন্ড ঘেরাও করেছিল। তারা সেখানে একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল, যা ছত্রভঙ্গ করে দেয় সরকার।
চীনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সরঞ্জাম সারাদেশে কয়েক মিলিয়ন কৃত্রিম-বুদ্ধিমত্তা-সক্ষম পাবলিক ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে। আর এর জন্য সরকারের বাজেট ‘সামরিক বাহিনীর চেয়ে বেশি’। মানুষ ও অ্যালগরিদম সেন্সরগুলো চীনের নাগরিকদের যোগাযোগ, ভ্রমণ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য ব্যবহৃত স্মার্টফোন অ্যাপগুলোতেও অ্যাক্সেস পেতে পারে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, চীনের পুলিশ দাঙ্গা-বিরোধী বিলিয়ন ডলারের সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে, যা ১৯৮৯ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ছিল না। সেজন্য এখন বিক্ষোভ দমনে ভিড় লক্ষ্য করে সরকারকে গুলি করতে হয়ে না।
২০তম পার্টি কংগ্রেসে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসেছেন করেছেন শি জিনপিং। এর তিনমাসের মধ্যে কোভিড-১৯ লকডাউন, সেখান থেকে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুর আর ওই মৃত্যুর পেছনে সরকারের কোভিড নীতি দায়ী করে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। বিক্ষোভকারীরা সাদা কাগজ হাতে ভিন্ন এক প্রতিবাদজানাচ্ছেন।
‘ইনসাইডওভার’ প্রকাশনায় কলামিস্ট ফেডেরিকো গিলিয়ানি যুক্তি দিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এমন সংকটে পড়েছেন যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর শিনজিয়াংয়ে কঠোর লকডাউনে ঘরে বন্দি থাকার অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।
আন্দোলনকারীরা এখন যেমন চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, এর আগে তেমন বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে হংকংয়ে। সেখানেও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে সাদা কাগজ তুলে ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয় মানুষ।
২০১৯ সালের গণবিক্ষোভে হংকংয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন চালায়। তাদের স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সাঁড়াশি অভিযান আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে খালি কাগজ তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
সম্প্রতি সাংহাইয়ের মত একইভাবে বেইজিংয়ের নামকরা সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও কাগজের টুকরা নিয়ে জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ঝেজিয়াংয়ে উঝেনের রাস্তায় এক নারী কবজিতে শিকল, মুখে টেপ লাগানো এবং হাতে সাদা কাগজ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
চীনে শি জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে বা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এমন বিক্ষোভ বিরল। কারণ সেখানে সরকারের সরাসরি কোনো সমালোচনার ফল হতে পারে কঠোর শাস্তি।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ