কাতার বিশ্বকাপে ইতিমধ্যে সব বড় দলগুলোর দম্ভ চূর্ণ করে দিয়েছে।ছোট দলগুলো প্রতিদিনই দেখিয়ে দিচ্ছে মাঠের খেলা ঠিকটাক খেলতে পারলে যে কোন দলকেই কুপোকাত করা সম্ভব।ইতিমধ্যে কাতার বিশ্বকাপে ধাক্কা খেয়েছে আর্জেন্টিনা,ফ্রান্স। বেলজিয়াম-জার্মানির মত দল ছিটকে গিয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই।এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল শুধুমাত্র ব্রাজিলের।প্রথম দুই ম্যাচে জয় নিয়ে তারা উঠে গিয়েছিল শেষ ষোলোতে। ইনজুরি ও ভাইরাল জ্বরের কারণে শেষ ম্যাচে অনেক খেলোয়াড়কে না পেলেও ক্যামেরনের বিপক্ষে ব্রাজিলই ছিল পরিষ্কার ফেভারিট।
তবে কাতার বিশ্বকাপে যে এসব ফেভারিট তকমা,অতীত ইতিহাস আর পরিসংখ্যান কোন কাজে আসছে না।কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ক্যামেরুন সেটি প্রমাণ করলো আরও একবার।পুরোটা সময় ব্রাজিলের বিপক্ষে ভালোভাবে রক্ষণটা সামলে আফ্রিকান দেশটি শেষ মুহূর্তে গিয়ে বসালো মরণ কামড়! তাতেই হারের লজ্জা ডুবল তিতের দল।
১-০ গোলের এই ঐতিহাসিক জয়ের পরেও আক্ষেপ থেকে যাচ্ছে ক্যামেরনের।পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে ক্যামেরুন থেকে এগিয়ে থাকায় 'জি' গ্রুপ থেকে ব্রাজিলের সাথে দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউটে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড।
ইনজুরি,ভাইরাল জ্বর ও নকআউট পর্বের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে আগের ম্যাচের শুরুর একাদশে ৯টি পরিবর্তন আনেন ব্রাজিল কোচ।ন রিচার্লিসন,গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, রদ্রিগো,আন্তোনি ও গাব্রিয়েল কেউই ছিলেন না শুরুর আক্রমণভাগে।
এর খেসারতটা দিতে হয়েছে ব্রাজিলকে।প্রথামর্ধপ পাস,পজিশনে এগিয়ে থেকেও লিড নিতে পারেনি পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আক্রমণ ভাগে তরুণ খেলোয়াড়রা এসময় মাঝমাঠের তৈরী করা সুযোগ গুলোর সফল পরিণতি দিতে ব্যর্থ হন।
তবে ব্রাজিল গোল না পাওয়ার পেছনে অবদান ছিল ক্যামেরনের গোলরক্ষক দেভিস এপাসির।। তিনি বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করে দলকে বিশ্বকাপের টিকিয়ে রাখেন।বিশেষ করে ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষকের দারুণ নৈপুণ্যেই জাল অক্ষত থাকে ক্যামেরুনের।মার্টিনেল্লির জোরালো হেড দারুণ দক্ষতার ঠেকিয়ে দেন দেভিস এপাসি।
৪৫তম মিনিটে মার্টিনেল্লিকে ফের গোলবঞ্চিত করেন এপাসি।এবার ডি-বক্সের মুখ থেকে নেওয়া আর্সেনাল ফরোয়ার্ডের জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান এপাসি।প্রথামার্ধে রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল ক্যামেরুন। বিরতির তারা খেলার ধরনের কিছুটা পরিবর্তন আনে। রক্ষণ সামলে তারাও সময়ে সময়ে যাচ্ছিল পালটা আক্রমণে।
৫১ মিনিটে নিজেদের মধ্যে বল ওয়ান টু ওয়ানে করে ব্রাজিল রক্ষণে চিড় ধরাব এমবেউমো, আবুবকররা। তবে ফিনিশিং এ তালগোল পাকিয়ে শেষ পর্যন্ত গোলমুখ খুলতে পারেনি দলটি।
শেষদিকে গোলপেতে মরিয়া মাঠে নামান রাফিনিয়ারা-মার্কিনিয়োসদের।মাঠে নেমে তারা সুযোগ তৈরি করতে পারলেও সফল হননি। উল্টো যোগ করার সময়ে গোল খেয়ে বসে সেলেসাওরা। ৯২ তম মিনিটে গোলটি করেন ক্যামরুনের তারকা স্ট্রাইকার ভিনসেন্ট আবুবাকার।গোল করার আনন্দে জার্সি খুলে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। ১০ জনের দলে পরিণত হয় ক্যামেরুন।সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি তিতের দল। অতিরিক্ত সময়ে অন্তত তিনটি সহজ সুযোগ ফিনিশিং এ গিয়ে নষ্ট করে ব্রাজিল।
এই হারের পরও অবশ্য ‘জি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠেছে ব্রাজিল। আর প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে ক্যামেরুন। সোমবার নকআউট পর্বের ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া