পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগরের সম্মেলনে বিশৃংখলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমন ছাত্রলীগ আমরা চাই না। নিজেদের সুশৃংখল করুন, সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না, এমন ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে, এমন ছাত্রলীগ দরকার নেই। দুর্নামের ধারা থেকে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই অঙ্গীকার। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার বার্ষিক যৌথ সম্মেলনে সময় দেওয়ার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ’৭১ সালে ড. কামাল হোসেনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, কামাল হোসেনের ভুমিকা রহস্যজনক।
সম্মেলনের শুরু থেকে মঞ্চে ছিলেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নানকের (জাহাঙ্গীর কবির নানক) মতো আপনাদের (ছাত্রলীগ) দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সময়ের অভাবে বক্তৃতা করতে পারলেন না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরে তো বলবেন খেয়াল থাকে না। আজ জুমার দিন, এটা খেয়াল থাকেনি?
সম্মেলনে আমন্ত্রিত চার নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি উল্লেখ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, নেতারা বক্তৃতা করতে পারেননি, তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করেও বলতে পারলেন না? আপনারা দুজনেই এক ঘণ্টা! মনে নেই আজ শুক্রবার? লেখকের (লেখক ভট্টাচার্য) না হয় মনে নেই, জয়ের কি মনে ছিল না? এটা কোন ছাত্রলীগ?
এ সময় নেতাকর্মীরা সেøাগান দিতে থাকলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পোস্টার নামাও সবাই। এটা কি বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ? এটা কি শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ? পোস্টার নামাতে বললাম অথচ এরা পোষ্টার নামাচ্ছে না। যার নামে সেøাগান দেবেন, তাকে সংগঠনের নেতা বানাবো না। নেত্রীকে বলে দেবো। সেøাগান যে দেবে, সে বাদ। বলে দিচ্ছি! এটা কি ছাত্রলীগ? এই ছাত্রলীগ কি আমরা করেছি?
তত্ত্বাবধায়কের ‘ভূত’ মাথা থেকে নামানোর পরামর্শ দিয়ে বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের পছন্দ নয়, পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে সেই জায়গা আপনাদের পছন্দ নয়। তারা (বিএনপি) এখন জঙ্গি-অস্ত্রবাজদের মাঠে নামিয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে বস্তায় বস্তায় টাকা আসে দুবাই থেকে। ‘পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক সিঙ্গাপুরে টাকা পাচার করেছে। এখনও যারা পাচার করছে তাদের খবর আছে। শেখ হাসিনা কাউকে ক্ষমা করবেন না।
কামাল হোসেনকে ‘রহস্যপুরুষ’ অবিহিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন ড. কামাল হোসেন মুখ খুলেছেন, তিনি বলেছেন ‘দেশের বাহিরে যেতে হবে তাই সরকার টাকা পাচার করছে।’ কামাল হোসেন একজন রহস্যপুরুষ। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, কামাল হোসেন সাহেব গাড়িতে করে এসে আজকের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে গাড়ি থেকে নেমে যায়, ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারপর খবর পেলাম, তিনি পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিলে মিশে চলে গেছেন পাকিস্তানে। কামাল সাহেব বঙ্গবন্ধুর দয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে ছিলেন। তিনি আরো বলেন, লজ্জা করে না? কীভাবে আপনি বাংলাদেশে থেকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর ইন্টারকন্টিনেন্টালে থেকে আশ্রয় নিতে গিয়ে ওদের (পাকিস্তানি) কাছে ধরা দিয়েছেন। আজকে কামাল হোসেন অর্থ পাচারের কথা বলে? ড. কামাল হোসেন সাহেব কী করেছেন? কালো টাকা সাদা করেছেন। আপনি অর্থ পাচার করেন। তারেকের নাম বলেন না। নিজে অর্থ পাচার করে আপনার ইহুদি জামাতার মাধ্যমে কত কোটি টাকা পাচার করেছেন দেশের মানুষ তার হিসাব চায়। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আদালতে গিয়ে তারপর আদেশ নিয়ে ট্যাক্স জমা দিয়েছেন। তিনি এখন শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে বড় বড় কথা বলেন।
ওবায়দুর কাদের বলেন, কামাল হোসেন সাহেব, আমরা তো জানতাম আপনার পকেটে সবসময় একটা ভিসা থাকে। হঠাৎ হঠাৎ এই আছেন এই নেই। দলের লোকেরাও বলে। এই হলো ড. কামাল হোসেন। এক এগারোতে কী ভূমিকা আপনাদের ছিল? সে দিন জরুরি সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে আপনারা এখানে বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার গঠন মাইনাস করে পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই রঙ্গিন খোয়াব রয়েই গেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন বক্তব্য দেয়া শুরু করেন তখন মঞ্চ থেকে নেমে যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক।
নোয়াখালী ব্যুরো, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে, আগুন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের পৃষ্টপোষকতা করা। সাম্প্রদায়িকতার বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। কয়েকদিন আগে কাঁচপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ঢাকা সিলেট সড়কের ভিত্তি প্রস্তর রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দিয়েছে। মতিঝিলে বিআরটিসির দোতলা বাস পুড়িয়ে দিয়েছিলো। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জানান দিচ্ছে আন্দোলনে তারা সহিংসতা যুক্ত করবে। আমরা ক্ষমতায় আছি, অশান্তি চাই না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে। বিএনপির ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশের কারণে তা পিছিয়ে ৬ ডিসেম্বর এনেছে। বাস মালিকদের অনুরোধ করেছি তারা যেন বিএনপির সমাবেশের সময় ধর্মঘট না করে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে মদদ দিয়েছে। আর তারেক রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হাওয়া ভবনে বসে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। তারেক রহমান বলেন আমরা নাকি সবাই দেশ ছেড়ে পালাবো। পালিয়ে গেছেতো তারেক, ২০০৮ সালে রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বিগত ২ বছর কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে সাংবাদিক মুজাক্কির ও সিএনজি চালক আলাউদ্দিন নিহত হয়েছে। আমি তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানুষ যে সীমাহীন কষ্ট, আতঙ্ক ও যন্ত্রণা সহ্য করেছে তার জন্য আমি কোম্পানীগঞ্জ বাসীর কাছে ক্ষমা চাই। আমি আমার ভাই কাদের মির্জা ও নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরীকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উচিত হবে কোম্পানীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূর নবী চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায়ক বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বাবু সুজিত রায় নন্দী।
সম্মেলন শেষে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।