বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
আরবি ‘আজান’ শব্দটির মূল ধাতু হচ্ছে আলিফ, জাল, নুন, তথা ‘ইজনুন্’। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অনুমতি, স্বীকৃতি, অনুমোদন। এই মূল ধাতু হতে গঠিত হয়েছে, ‘আজান’ শব্দটি। এই শব্দে চারটি বর্ণ রয়েছে। যথা: আলিফ, জাল, আলিফ, নুন। এই ‘আজান’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ঘোষণা দেয়া বা এলান করা।
আর ব্যবহারিক অর্থে আজান হচ্ছে ইসলামী শেয়ার, চিহ্ন ও নিদর্শন যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট বাক্যাবলির দ্বারা আল্লাহপাকের সত্ত্বা, সর্ব শ্রেষ্ঠত্ব ও একত্বের ঘোষণা প্রদান করা হয়। এবং বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তাফা (সা.) -এর বিশ্বরিসালাতের দৃপ্ত ঘোষণা উচ্ছকিত করা হয়। একই সাথে সালাত অর্থাৎ নামাজে অংশ গ্রহণ করার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যা মানুষের মুক্তি ও নিষ্কৃতির চিরভাস্বর পথের দিশা হয়ে আছে। এক্ষেত্রে দিশাহারা বা পথভ্রষ্ট হওয়ার কোনোই সুযোগ ও অবকাশ নেই।
‘আজান’ শব্দটি আল কোরআনে একবার ব্যবহৃত হয়েছে। কোরআনুলকারীমের ৯নং সূরা আত্ তাওবাহ -এর ৩ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মহান হজ্জের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি এটি একটি ‘ঘোষণা’ যে নিশ্চয় মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ দায়মুক্ত এবং তাঁর রাসূল ও। সুতরাং তোমরা যদি তাওবাহ কর, তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে জেনে রেখ যে, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবে না এবং কাফেরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।’ এই আয়াতে কারীমায় ‘আাজান’ শব্দটি ‘ঘোষণা’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
আর আরবি মূল ধাতু ‘ইজনুন্’ হতে উৎসারিত এবং আজজানা ‘ইউআজ্জিনু’ ক্রিয়া পদ হতে ‘মুয়াজ্জিন’ শব্দটির অর্থ হলো আজানদাতা বা আজান ঘোষণাকারী। এই শব্দটি আল কোরআনে দু’বার এসেছে। যথা : (ক) ইরশাদ হয়েছে : আর জান্নাতবাসীগণ জাহান্নামবাসীদেরকে সম্বোধন করে বলবে, আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তা সত্য পেয়েছি। তোমাদের প্রভু তোমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তোমরা তা’কি সত্য পেয়েছে? তারা বলবে হ্যাঁ। অত:পর একজন ঘোষণাকারী তাদের মধ্যে ঘোষণা করবে, জালিমদের উপর রয়েছে আল্লাহর লা’নত। (সূরা আল আ’রাফ : আয়াত-৪৪)।
(খ) ইরশাদ হয়েছে : অত:পর তিনি (হযরত ইউসুফ (আ.)!) যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিলেন, তখন তিনি স্বীয় মহোদয়ের মালপত্রের মধ্যে পানপাত্র রেখেছিলেন। তারপর এক ‘ঘোষণকারী’ চিৎকার করে বললেন, হে যাত্রীদল! তোমরা অবশ্যই চোর। (সূরা ইউসুফ : আয়াত-৭০)। এই দু’টি আয়াতেই ঘোষক অর্থাৎ ‘মুয়াজ্জিন’ শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।