Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানবী (সা.) প্রদর্শিত পথেই আমলী জিন্দেগী লাভ করতে হবে

এশায়াত সম্মেলনে- প্রিন্সিপাল ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ্

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:২৬ পিএম

নফছকে নিয়ন্ত্রণ করে মহানবী (সা.) এর প্রদর্শিত পথেই আমলী জিন্দেগী লাভ করতে হবে। নফছানিয়াতকে যারা নিয়ন্ত্রণ করেছে তারাই সফলকাম। রাসূল (সা.) প্রতি মহব্বত রাখতে পারলেই পুর্নঈমানদার হওয়া যাবে। রাসূল (সা.) কে জীবনের চাইতেও বেশি মহব্বত করতে হবে। রাসূল (সা.) এর মহব্বত ছাড়া প্রকৃত মোমেন হওয়া যাবে না। আজ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকার গুলিস্থানের কাজী বশির মিলনায়তন সম্মুখস্থ ময়দানে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ আয়োজিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এশায়েত সম্মেলনে হাজার হাজার নবী প্রেমিকের ঢল নামে। সম্মেলন উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মল হক।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের পীর প্রিন্সিপাল শায়খ ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ আহমাদী বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা মানব জাতিকে ভালোবেসে সৃষ্টির মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। ছৈয়্যদুল মুরসালিন (সা.) কে ধূলির ধরায় প্রেরণ করে সৃষ্টিকে পূর্ণতা দিয়েছেন। হেদায়তের মিশন নিয়ে প্রিয় নবী (সা.) পৃথিবীতে তশরীফ আনেন এবং খতমে নবুয়্যতের মাধ্যমে নবুয়্যতের ধারার পরিসমাপ্তি হয়। পরবর্তীতে হেদায়তের এ মহান মিশন বেলায়তের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, ৫৭নং কানাডা শাখার সভাপতি ও কানাডা গাউছুল আজম জামে মসজিদের খতিব মীর মুহাম্মদ কায়কোবাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের প্রফেসর ড.জালাল আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর ড. মাওলানা মুহাম্মদ কফিল উদ্দীন সরকার ছালেহী ও মাওলানা জসিম উদ্দিন।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, নফছকে নিয়ন্ত্রণ করে মহানবী (সা.) এর প্রদর্শিত পথেই আমলী জিন্দেগী লাভ করতে হবে। নফছানিয়াতকে যারা নিয়ন্ত্রণ করেছে তারাই সফলকাম। রাসূল (সা.) প্রতি মহব্বত রাখতে পারলেই পুর্নঈমানদার হওয়া যাবে। রাসূল (সা.) কে জীবনের চাইতেও বেশি মহব্বত করতে হবে। রাসূল (সা.) এর মহব্বত ছাড়া প্রকৃত মোমেন হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, কলবে মরিচা ধরলে ঈমানের ঘাটতি দেখা দিবে। কলবকে পরিষ্কার করতে তিনি হক্কানি পীরের দরবারে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে মানুষ যখন আধুনিকতার নামে বেহায়পনার দিকে ঝুকে আল্লাহকে ভুলে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি কাগতিয়া দরবারের পীর ছাহেব মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান জানান। তিনি ঘোষণা দিলেন “হে যুবক! নামাজ পড়ো, রোজা রাখো, নবী করিম (সা.) এঁর উপর দরূদ পড়ো, মাতৃভূমি শান্ত করো”। এ মহান ঘোষণা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লো। ফলে যুবকেরা নামাজ-রোজার আহবানে, দরূদে মোস্তফার নূরের টানে, ফয়েজে কোরআন, তাওয়াজ্জুহ, জিকিরুল্লাহর মুহাব্বতে পাড়ি জমাতে শুরু করলো কাগতিয়া দরবার শরীফে। এ যুবকদের নিয়ে তিনি গঠন করলেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ। যারা পারষ্পরিক হৃদ্যতা, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ মেনে হেদায়তের পথে চলতে শুরু করলো। তাওয়াজ্জুহর প্রভাবে এ যুবকদের মধ্যে মানবীয় দোষ-ত্রুটি দূরীভূত হয়ে উত্তম গুণাবলীর সমারোহ ঘটলো। ফলশ্রুতিতে এ সকল যুবকরা আধুনিকতার ছোবলে গা না ভাসিয়ে হেদায়তের পথে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালনে অংশগ্রহণ করেছে। মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হতে মুক্ত এসব যুবকরা দেশ ও জাতির কল্যাণে অনন্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে প্রিন্সিপাল ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ আহমাদী এ দায়িত্ব নিখুঁতভাবে পালন করছেন।
তরিক্বতের যাবতীয় কাজ পরিচালনার পাশাপাশি মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের আলোকিত মানুষ তৈরিতে কাগতিয়া দরবার শরীফ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষার প্রচার-প্রসারেও দেশে বিদেশে বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আত্মশুদ্ধির এ মহান দর্শন যদি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া যায় তবে অশান্ত পৃথিবী হবে নবী প্রেমের আলোতে শান্তিময়। হাহাকার আর হতাশা ভুলে সৃষ্টি পাবে স্রষ্টার সন্ধান, হেদায়তময় এহসান। সুশৃঙ্খল এবং নিখাদ নবী প্রেম নিয়ে আয়োজিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনের সফলতা তারই বাস্তব উদাহরণ। এশায়াত সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনেরা বাণী প্রদান করায় প্রধান অতিথি তাদের নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সম্মেলন শেষে প্রধান অতিথি দেশ জাতির উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ