মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনা মহামারি থেকেই বিশ্বে অর্থমন্দা পরিস্থিতির শুরু। জলবায়ু পরিবর্তন ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধাবস্থা সেই সংকটকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে বিশ্বের প্রতি কোণে। সম্প্রতি জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ২০২৩ সাল নাগাদ পৃথিবীতে প্রতি ২৩ জনের মধ্যে একজনের মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন হবে। অনেক দেশে শুরু হবে দুর্ভিক্ষ। আর এর অন্যতম কারণ অর্থমন্দা। গত বুধবার গ্লোবাল হিউম্যানিটারিয়ান ওভারভিউতে (জিএইচও) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার ত্রাণ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথ বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বৈশ্বিক ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন। তার উপস্থাপিত পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে বিশ্বে ত্রাণ সহায়তা দরকার হয়েছিল ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের। কিন্তু মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আগামী বছরের শুরুতেই এই সংখ্যা ৩৩ কোটি ৯০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতিসংঘ তার দাতাগোষ্ঠীকে ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলার সহায়তা দিতে আহ্বান জানিয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে এই তহবিল ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির পরও জাতিসংঘকে এমন পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। সংস্থাগুলো বলছে, দাতারা উদারভাবে সাহায্য করলেও চাহিদা অনেক বেশি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও ইয়েমেনের মতো অনেক দেশে খাদ্য সংকট চলছে। এতে ওই দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংঘাত বাড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে বিশ্বব্যাপী। আর জলবায়ু সংকটে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে ওঠা দেশটির একার পক্ষে সম্ভব নয়। জিএইচওতে বক্তব্যে গ্রিফিথ বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, ২০২৩ সালে বহু মানুষ ত্রাণের ওপর নির্ভর করবে। প্রতি ২৩ জনের মধ্যে একজন এটা ছাড়া অভুক্ত থাকবেন। এই সংখ্যা খুবই হতাশাজনক।’ জাতিসংঘের পরিসংখ্যান মতে, ৬৮ দেশে এখন জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দরকার। এর মধ্যে দশটি দেশের অবস্থা বেশি খারাপ। তাদের জন্য অবিলম্বে ১০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন, ইউক্রেন, ইথিওপিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো এবং সোমালিয়া দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। জাতিসংঘ ও তার অংশীদাররা এখন ২৩ কোটি মানুষকে ত্রাণ দিতে পারছে। সংস্থাগুলোর আশা, অন্য সংগঠন এবং দ্বিপক্ষীয় দাতাগোষ্ঠীরা বাকি ১০ কোটি ৯০ লাখের দায়িত্ব নেবে। তবে এখানেও শঙ্কা রয়েছে। যে পরিমাণ ত্রাণ প্রতিবছর প্রয়োজন হয়, এ বছর তার মাত্র ৪৪ শতাংশ পাওয়া গেছে। অবশ্য এজন্য গ্রিফিথ দাতাগোষ্ঠীকে দায়ী করতে চাইছেন না। তার মতে, বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে এমনটা হচ্ছে। তবুও তিনি শীর্ষ ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ আরও বলছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ৫৩ দেশের ২২ কোটি ২০ লাখ মানুষ খাদ্য অনিরাপত্তার কবলে পড়বেন। আর ৩৭ দেশের সাড়ে চার কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হবেন। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি এই সময়ে কলেরার মতো রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।