নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সারা ফুটবল বিশ্বে এখন একটা কথায় চাউড় হয়েছিল। সাম্বার ছন্দে ফিরেছে সেলেসাওরা। কেবল দুইটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেই ব্রাজিলের পুরোনো রুপ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ম্যানেজার তিতে! খেলার কৌশল এঁকেছিলেন ৪-২-৩-১, আর এটাকিং মিডফিল্ডে দলের প্রাণভোমড়া নেইমারকে দিয়েছিলেন স্বাধীনভাবে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর দায়িত্ব। তাতেই আলাদীনের চেরাগের মতই বদলালো দলের চেহারা। তবে প্রথম ম্যাচে গোরালিতে মারাত্মক আঘাত পান নেইমার। যে কারণে খেলতে পারেননি সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ, এমনকি আজকের ম্যাচেও দেখা যাবে না এই পিএসজি ফরোয়ার্ডকে। তাতে আরেকটা ব্যাপার নিশ্চিতভাবে। সুইসদের মত ক্যামেরুনের বিপক্ষেও ব্রাজিল খেলবে ছন্দহীন রোবটিক ফুটবল। এসবের সঙ্গে সেলেসাও শিবিরের বর্তমান বড় আতঙ্কের নাম জ্বর ও কোভিড সমস্যা। অন্যদিকে গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচ থেকে মাত্র ১ পয়েন্ট তুলে নিয়ে দারুণ দুশ্চিন্তায় আছে ক্যামেরুন। শেষ ষোলর টিকেট পেতে অদম্য সিংহদের যে জয় ছাড়া বিকল্প নেই! লুসাইল আফ্রিকার দলটি কি পারবে আইকনিক ঘটনা ঘটাতে? নাকি ভঙ্গুর ব্রাজিলের বিপক্ষেও উড়ে যাবে? জানতে হলে টিভির পর্দায় চোখ রাখতে হবে আজ রাত ১টায়।
ক্যামেরুনের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে আমূল বদলে গিয়েছে সেলেসাওদের অন্দরমহলের আবস্থা। কোভিডের আতঙ্কে কাঁপছে ব্রাজিল শিবির! নেইমার সহ একাধিক ফুটবলার অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একই সাথে এই তালিকা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। জ্বর হয়েছিল বলে ৯৭৪ স্টেডিয়ামে সুইজদের বিপক্ষে খেলা দেখতে মাঠে যেতে পারেননি নেইমার। এবার শুনা গেল অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অ্যালেক্স সান্দ্রো, অ্যান্তোনিও, অ্যালিসন বেকার, লুকাস পাকেতা, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রাফিনহাসহ একাধিক ফুটবলার। কারও হালকা জ্বর ও গায়ে ব্যথা রয়েছে। কেউ কেউ আবার এর সঙ্গে বমিও করছেন। যার মর্থ দাঁড়ায়- কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় সব রকম উপসর্গ ব্রাজিল শিবিরে। ফুটবলারদের উপরে হোটেলের বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে। বুধবার বিকেলে দোহার আর আরবি স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে ব্রাজিলের অনুশীলনে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
কাতারে করোনা নিয়ে ন্যূনতম বিধিনিষেধও নেই। কেউ মুখাবরণ বা মাক্স ব্যবহার করছেন না। ফুটবলারদের বাধ্যতামুলক কোভিড পরীক্ষার নিয়মতো কবেই তুলে দিয়েছে ফিফা। ব্রাজিলের কর্তাদের আশঙ্কা, বিশ্বকাপের মধ্যে করোনো সংক্রমণ যদি ফের বাড়তে শুরু করে, বিপর্যয় এড়ানো অসম্ভব। চিন্তিত ব্রাজিল টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য বলছিলেন, ‘কাতারে কেউ মাস্ক পরছেন না। কোভিড সংক্রমণ রোখার ন্যূনতম ব্যবস্থাও নেই। এই মুহূর্তে মারণভাইরাসের দাপট অনেকটা কম ঠিকই, আবার যে কোভিড রক্তচক্ষু দেখাবে না, তার কি কোনও নিশ্চয়তা আছে? তাছাড়া কাতারে দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম। রাতে তাপমাত্রা দ্রুত নেমে যাচ্ছে। তার উপরে স্টেডিয়াম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ছে।’
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ফুটবলারদের মধ্যেও। মঙ্গলবার যেহেতু অনুশীলনের প্রথম ১৫ মিনিট সংবাদমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল, তাই মাঠেই নামেননি অ্যালিসন। হোটেলের জিমেই ফিটনেস ট্রেনিং করেছেন। সুইজারল্যান্ড ম্যাচের পরে রাফিনহা মিক্সড জোন দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন হাত দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে। আশঙ্কা ও উদ্বেগের মাঝেই আজকের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিতে। প্রথম একাদশে সাতটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। অ্যালিসনের পরিবর্তে খেলতে পারেন ওয়েভারটনের বা ম্যানচেস্টার সিটির এডেরসনের মাঝে একজন। রক্ষণে দেখা যেতে পারে দানি আলভেসকে।
এদিকে ক্যামেরুনের ম্যানেজার রিজোবার্ট সঙ ধারণা করছেন ব্রাজিলের বিপক্ষে তাদের জয়টা অসাধ্য কিছুই নয়। কোভিডের আঘাতে এই ব্রাজিল যে একদমই ভঙ্গুর। আফ্রিকার অদম্য সিংহরা এই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হারে স্বদেশী এমবোলোর গোলে। যেটা ছিল বিশ্ব মঞ্চে তাদের টানা ৮ ম্যাচ পরাজের গ্লানি! পরের ম্যাচটায় অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় সঙয়ের দল। সার্বিয়ার বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও ড্র করার কৃতিত্ব অর্জন করে তার, ফলে আজ রাতের ম্যাচের জন্য অল্প কিছু আশা বেচে রয়েছে তাদের। সার্বিয়ার বিপক্ষে চার্লস,আবুবক্কর ও চুপোর গোলে হার এড়িয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ক্যামেরুন। বিশ্বকাপে তারা ব্রাজিলের বিপক্ষে দুই বার মোকাবেলা (১৯৯৪, ২০১৪) করেছিল। দুইবারই বড়ত ব্যব্ধানে গার আফ্রিকান দলটির সঙ্গী ছিল। অন্যদিকে ব্রাজিল একখন পর্যন্ত ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৬টি ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে হারের স্বাদ পেয়েছে আর বাকি সবই জিতেছে।
গ্রুপ জি থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ব্রাজিল। আজরাতে তারা হার এড়ালেই নিশ্চিত গ্রুপ সেরা। অন্যদিকে একই সময়ে স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ ইতিমধ্যে ৩ পয়েন্ট পাওয়া সুইজারল্যান্ড লড়বে ১ পয়েন্ট অর্জন করা সার্বিয়ার বিপক্ষে। এই ম্যাচ যদি ড্র হয় আর অন্যদিকে ক্যামেরুন জয় লাভ করে তাহলে সুইরা রানার্স-আপ হয়ে যাবে পরবর্তী রাউন্ডে। আর সুইজারল্যান্ড যদি জিতে যায় তাহলে সার্বিয়া আর ক্যামেরুন বাদ। অন্য আরেকটি সমীকরন বলে ক্যামেরুনের চেয়ে ১ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা সার্বিয়ানরা যদি জিতে যায় আর আফ্রিকার দলটি যদি হারে তবে সার্বিয়া রানার্স-আপ হয়ে পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।