রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটা পাকিস্তানের জন্য ক্রমেই হয়ে উঠছে দুঃস্বপ্নের মত!প্রথম ওভার থেকে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যে জোরেশোরে ব্যাট চালানো শুরু করেছেন তা আর থামেনি।পাকিস্তানের প্রতিটি বোলারকে বেড়ধক পিটিয়ে ৭৫ ওভারেই চার উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলেছেন ৫০৬ রান!আলোক স্বল্পতর কারণে খেলা আগেই শেষ না হলে আজ স্টোকস এন্ড কোং কোথায় গিয়ে থামত কে জানে।
ইংলিশ শিবিরে সংক্রামক অসুখের কারণে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্টটি সময়মত শুরু হওয়া নিয়ে সন্দেহ ছিল গতকাল পর্যন্ত। তবে আজ সকালে এক সিদ্ধান্তে জানানো হয় যথাসময়ে মাঠে গড়াবে প্রথম টেস্ট।এখন পাকিস্তানী সমর্থকরা নিশ্চয়ই ভাবছেন আজ বরং খেলা শুরু না হলেই ভালো ছিল।
সেই যে দিনের প্রথম ওভারে জ্যাক ক্রলি নাসির শাহকে তিনটে চার মেরে রান উৎসবের শুরু করেছিলেন তা শেষ বল পর্যন্ত এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি।সমানে পিটিয়ে দুই ওপেনার ব্যাটসম্যানই তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি।এর মধ্যে জ্যাক ক্রলির সেঞ্চুরি আসে মাত্র ৮৬ বলে- যা কোন ইংলিশ ওপেনারের দ্রুততম শতরানের মাইলফলক।ডাকেটেও তিন অংকে পৌঁছেছেন শ খানেক বল খেলেই।
এই দুই ওপেনার ফেরার পর ইংলিশদের বড় তারকা ব্যাটসম্যান রুটও(২৩) দ্রুত ফিরলে পাকিস্তান ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে।তবে ক্রিজে নেমে ওলি পোপ ওপেনাররা যে জায়গায় শেষ করেছেন,ঠিক সেখান থেকে সেভাবেই এগিয়ে নিয়ে যান দলকে।সেঞ্চুরি তুলেন মাত্র ৮৯ বলে।তাকে ক্রিজে সঙ্গ দেওয়া হ্যারি ব্রুকস ছিলেন আরো খ্যাপাটে!সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাত্র ৮০ বলেই।এর মধ্যে সাদ খলিলের করা ৬৮ তম ওভারের প্রতিটি বলই মেরেছেন বাউন্ডারি ।৬ বলের ৬ চার মেরে ঢুকে পড়েছেন গৌরবের খুবই সংক্ষিপ্ত এক রেকর্ডের তালিকায়।যেখানে সনাৎ জয়সুরিয়ার মত কিংবদন্তির পাশে থাকবে তার নাম।
মূলত টেস্ট ক্রিকেটে ছয় বলে ৬ চার মারার রেকর্ড ব্রুকসের এর আগে করতে পেরেছিলেন মাত্র চার জন।
সন্দীপ পাতিন ( ইংল্যান্ডের বিপক্ষে,১৯৮২)
ক্রিস গেইল (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে,২০০৪)
*রামনারেশ সারোয়ান(ইন্ডিয়ার বিপক্ষে, ২০০৬)
*সনাৎ জয়সুরিয়া(ইংল্যান্ডের বিপক্ষে,২০০৭)
ওয়ানডে ক্রিকেটে এ রেকর্ডটি একমাত্র আছে তিলকারাত্নে দিলশানের। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার এই মারকুটে ব্যাটসম্যান এক ওভারে মেরেছলেন ছয়টি চার।
ইংলিশ টেস্ট ক্রিকেটে বর্তমান 'বাজবল' যুগ দুই পুরোধা কোচ ম্যাককালাম ও কাপ্তান স্টোকস বরাবরই টেস্ট ক্রিকেটে প্রথাগত ধারণার বাইরে গিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সতীর্থ অনুপ্রেরণা যোগিয়ে যাচ্ছেন। তবে আজ ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং নিশ্চয়ই তাদের ধারণাও কেউ ছাড়িয়ে গেছে।