চীনে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দমনমূলক নীতির মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ তৈরিতে কঠোর অভিযান শুরু করেছে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। এই নীতি তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভাবনা হলেও সরকার দমন-পীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। যদিও বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের জ্যাক মা এর জবরদস্তিমূলক সাম্প্রতিক ‘অন্তর্ধান বা নিরুদ্দেশ’ হওয়ার বিষয়টি কমিউনিস্ট পার্টির কৌশলের কথাই বলছে।
ফাইন্যান্সিয়াল পোস্ট জানিয়েছে, সরকার সবসময় অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। আগেও একই ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছিল সিসিপি সরকার।
জ্যাক মা-এর হদিস না মেলার আগে ২০২০ সালে তার জায়ান্ট গ্রুপ অ্যান্ট ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের আইপিও পাওয়ার পথে ছিল। কিন্তু চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) পক্ষে নিয়ন্ত্রকরা সেটি আটকে দেয়। হঠাৎ এই আইপিও আটকে দেওয়ার বিষয়টি বড় বড় ব্যবসায়িক গ্রুপ এবং এর মালিকদের বিরুদ্ধে সিসিপির স্বেচ্ছা হস্তক্ষেপ নির্দেশ করে। এসব ব্যবসায়ীরা মূলত সিসিপি সরকারের একটি দূর্বল আর্থিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছিল।
২০২০ সালের অক্টোবরে সাংহাইয়ে জ্যাক মা চীন সরকারের অর্থ বিভাগের সমালোচনা করেছিলেন। খোলাখুলিভাবে তিনি বলেছিলেন, প্রযুক্তি শিল্পকে টেনে ধরে রেখেছে চীনের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। আর ব্যাংকগুলো ‘বন্ধকী করবকারির’ মানসিকতায় কাজ করছে। তার ওই ব্ক্তব্য সিসিপির অনেকের মধ্যে ব্যাপকভাবে অস্বস্তির কারণ হয়েছিল। এর ফলেই বিশ্বের অন্যতম ধনকুবেরের ‘পতন’ ডেকে আনে।
২০২১ সালে অ্যান্ট গ্রুপের সহযোগী কোম্পানি আলিবাবাকে চীনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জরিমানা করে। চীনের ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর মার্কেট রেগুলেইশন (এসএএমআর) আলীবাবাকে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার জরিমানা করে।
আলীবাবার বিরুদ্ধে বাজারে মনোপলি বা একক নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব তৈরির মতো বিশ্বাসভঙ্গের তদন্ত শুরু করে চীনা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অ্যান্ট গ্রুপ থেকে এই প্রতিষ্ঠানের অনলাইন আর্থিক সেবা দেওয়ার বিভাগকে আলাদা করে ফেলারও নির্দেশ দেয় তারা।