Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভিবাসনের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব

হাইতিতে চরম মানবিক বিপর্যয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

গত বছর হাইতির প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ড ক্যারিবিয়ান দেশটি জুড়ে সন্ত্রাসের একটি নতুন ভয়াবহ অধ্যায় শুরু করেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং সন্ত্রাসী দলগুলির চরম সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডকে গৃহযুদ্ধের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। হাইতির ভয়বাহ সন্ত্রাস, খাদ্য সঙ্কট ও মানবিক বিপর্যয় যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশগুলিতে ব্যাপক অভিবাসনকে উৎসাহিত করতে পারে এই আশঙ্কায় বাইডেন প্রশাসনের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা দেশটিতে একটি বহুজাতিক সশস্ত্র বাহিনী প্রেরণের জন্য চাপ দিতে শুরু করেছেন।

তবে, বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং প্রাক্তন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন যে, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের অভ্যন্তরে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন যে, প্রেসিডেন্ট জোবাইডেনের প্রশাসন হাইতির পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য একটি বহুজাতিক বাহিনীকে সমাবেত করার ক্ষেত্রে প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে, যার মধ্যে মার্কিন সামরিক নেতারাও অন্তর্ভুক্ত। তারা এমন একটি অভিযানে নিয়োজিত হতে চান না, যার জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় এবং সরবরাহের প্রয়োজন হবে।

হাইতিতে একটি ‘র‌্যাপিড একশন ফোর্স’ মোতায়েনের আহ্বান জানিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত প্রস্তাবনা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থগিত রয়েছে, যদিও মার্কিন প্রশাসন এটিকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য মিত্রদের সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তারা বলছেন যে, এই বাহিনীতে মার্কিন সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়। কারণ, হাইতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ অগোছালো এবং কখনও কখনও নৃশংস হস্তক্ষেপের কারণে ক্ষতবিক্ষত, যার মধ্যে প্রায় দুই দশক ধরে ঘাঁটি গেড়ে থাকার ইতিহাসও রয়েছে।

মার্কিন বহুজাতিক প্রস্তাবনায় বাধ সেধেছে কানাডা ও ব্রাজিল। কানাডা বলেছে যে, হাইতির বিরোধীদলগুলি সমর্থন না দিলে এটি নিরাপত্তা সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে উৎসাহী নয়। ব্রাজিলের কর্মকর্তারা এই মাসে রয়টার্সকে বলেছেন যে, এর জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম, কারণ অনিশ্চিত পরিস্থিতি সহ হাইতিতে সশস্ত্র বাহিনী পাঠানোর ঝুঁকি বেশি। এদিকে, রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, হাইতির সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে জয়লাভ সেগুলিকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। অতীতের অভিজ্ঞতা দেখায়, এটি তাদের শক্তির প্রকৃত উৎসকে স্পর্শ করবে না, যা হাইতির অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের সাথে তাদের কয়েক দশকের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা ক্ষমতাসীনদের দ্বারা সমর্থিত, যারা হাইতিতে তাদের দখলকে শক্তিশালী করতে দলগুলিকে ব্যবহার করে থাকে।

সাম্প্রতিক মাসগুলিতে হাইতিয়ান সন্ত্রাসী দলগুলি সহিংসভাবে তাদের সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটিয়েছে এবং কর্তৃপক্ষের দিকে থেকে খুব বেশি প্রতিরোধ ছাড়াই দেশটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। যুদ্ধবাজদের মতো শাসনকারী অপরাধীদের আক্রমণের ঝুঁকি ছাড়া রাজধানী ঢোকা এখন অসম্ভবে পরিণত হয়েছে। ড. হুবার্ট মরকুয়েটের, যিনি পোর্ট-অ-প্রিন্সে হাসপাতাল চালান, বলেছেন, ‘আমি হস্তক্ষেপ পছন্দ করি না, তবে এটিই টিকে থাকার রাস্তা। আর কোন বিকল্প নেই।’ সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ