অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন করোনা মহামারির সময় গোপনে পাঁচ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিষয়টি এতোটাই গোপন ছিল যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরাও তা জানতেন না। ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য, অর্থ, সম্পদ, স্বরাষ্ট্র ও রাজস্ব মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন স্কট মরিসন। আগস্ট মাসে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ পত্রিকায় নতুন প্রকাশিত একটি বইয়ের সারাংশ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। বুধবার অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে মরিসনের সমালোচনা করা হয়। এছাড়া এ বিষয়ে আনা প্রস্তাব ৮৬-৫০ ভোটে পাস হয়। মরিসনের কর্মকাণ্ড ‘অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করে দিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করা হয়। স্কট মরিসন হলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী যার বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্টে সমালোচনা প্রস্তাব পাস হলো। করোনার সময় মরিসন সীমান্তে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ তার পূর্বসূরী মরিসনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গত মে মাসে নির্বাচনে মরিসনের জোটকে হারায় অ্যালবানিজের দল। অবশ্য সমালোচনা প্রস্তাবে পার্লামেন্টে ভোটের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ‘আজ যারা আমার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার কথা ভাবছেন তাদের আমি একটি বিষয়ট বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করছি: আপনারা কি কখনও এমন কোনও পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করেছেন যার ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অজানা ছিল।’ তিনি স্বীকার করেন কাউকে না জানানোর জন্য অনিচ্ছাকৃত অপরাধ ঘটেছে এবং যারা এতে আহত হয়েছেন তাদের কাছে ক্ষমা চান তিনি। মরিসন বলেন, ক্ষমতা নেওয়ার পর তিনি শুধু একটি কাজ করেছেন, সেটি হচ্ছে- সম্পদমন্ত্রীর দেওয়া একটি গ্যাসকূপ খনন প্রকল্পের অনুমোদন তিনি বাতিল করে দিয়েছিলেন। এদিকে হাইকোর্টের সাবেক বিচারক ভার্জিনিয়া বেল বিষয়টি তদন্ত করার পর বলেন, স্কট মরিসনের কাজ আইনগতভাবে বৈধ ছিল, যদিও বিষয়টি ‘সরকারের প্রতি আস্থা কমিয়েছে’। আর তাই ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে তিনি আইনের ফাঁক বন্ধ করার প্রস্তাব দেন। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রী পদে নিয়োগের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানানো বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেন বেল। রয়টার্স।