Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তাওহীদের দিকে ও সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীনের দিকে আহ্বান করতেই হবে-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মহান রাব্বুল আলামীন তাওহীদের দিকে এবং সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করার নির্দেশ সমস্ত নবী রাসূলদের দিয়েছেন এবং তাঁদের অনুসারীদেরকে ও এ কাজ নির্বাহ করার জন্য ওসিয়ত করেছেন।
আল কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, সুতরাং আপনি (হে প্রিয় রাসূল সা.) আহ্বান করুন এবং দৃঢ় থাকুন, যেভাবে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন। আর আপনি তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করবেন না; এবং বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাজিল করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে, আল্লাহ আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদের ও প্রতিপালক। আমাদের আমল বা ক্রিয়া-কর্ম আমাদের (উপর বর্তাবে); এবং তোমাদের আমল ক্রিয়া-কর্ম তোমাদের (উপর বর্তাবে); আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসম্বাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে একত্র করবেন এবং তাঁরই কাছে ফিরে যেতে হবে। (সূরা আশ্শুরা : আয়াত-১৫)।

এই আয়াতে কারীমার অর্থ ও মর্মের প্রতি গভীর দৃষ্টিতে অবলোকন করলে অনুধাবন করা যায় যে, এই আয়াতটি দশটি বাক্য সম্বলিত এবং এর প্রত্যেকটি বাক্যে বিশেষ বিশেষ বিধান বর্ণিত হয়েছে। সমগ্র কোরআনুলকারীমে ‘আয়াতুল কুরসীই’ এর একমাত্র দৃষ্টান্ত বা উদাহরণ। তাতেও দশটি বিধান বিধৃত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে কারীমার দশটি বিধান হচ্ছে এই যথা :

প্রথম বিধান : (হে প্রিয় রাসূল সা.) আপনি আহ্বান করুন। যদিও মুশরিকদের কাছে আপনার তাওহীদের দাওয়াত কঠিন মনে হয়, তথাপি আপনি এই দাওয়াত ত্যাগ করবেন না এবং উপর্যূপরী এই দাওয়াতের কাজ অব্যাহত রাখুন।

দ্বিতীয় বিধান : আপনি এই সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীনে নিজে অবিচল থাকুন, যেমন আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ ভারসাম্য ও সমতা কায়েম রাখুন। কোনো দিকেই যেন কোনোরূপ বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন না হয়। অবিশ্বাসী কাফেরদেরকে আকৃষ্ট ও সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে এই দ্বীনের মধ্যে কোনোরূপ বরবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। কিছু নাও এবং কিছু দাও নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সাথে কোনো আপোষ করবেন না। মোটকথা, এরূপ দৃঢ়তা সহজ সাধ্য নয়।

এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে। তখন রাসূলে পাক (সা.) বললেন, সূরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সূরা হুদের ১২ নং আয়াতে এই আদেশ এভাষায়ই বিবৃত হয়েছে। সেখানেও দ্বীনের উপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তৃতীয় বিধান : তাওহীদ ও দ্বীনের প্রচারের দায়িত্ব পালনে আপনি কারো বিরোধিতার পরোয়া করবেন না। শুধু কোনো না কোনোভাবে ইসলামের গণ্ডির মধ্যে এসে যাক, এ প্রত্যাশার বশবতী হয়ে এদের কুসংস্কার ও গোঁড়ামী এবং জাহেলী আচার-আচরণের জন্য দ্বীনের মধ্যে কোনো অবকাশ সৃষ্টি করবেন না। আল্লাহ পাক তাঁর দ্বীনকে যেভাবে নাজিল করেছেন কেউ মানতে চাইলে সেই খাঁটি ও মূল দ্বীনকে যেন সরাসরি মেনে নেয়। অন্যথায় সে জাহান্নামে হুমড়ি খেয়ে পড়তে চায় পড়ুক। মানুষের ইচ্ছানুসারে আল্লাহর দেয়া দ্বীনের পরিবর্তন সাধন করা যায় না। মানুষ যদি নিজের কল্যাণ কামনা করে তাহলে যেন নিজেকেই পরিবর্তন করে নেয় এবং দ্বীন অনুসারে জীবন গড়ে নেয়।

চতুর্থ বিধান : আর আপনি ঘোষণা করুন, আল্লাহপাক যত কিতাব নাজিল। করেছেন, সবগুলোর প্রতি আমি ঈমান এনেছি। অন্যকথায়, আমি সেই বিভেদ সৃষ্টিকারী লোকদের মত নই, যারা আল্লাহর প্রেরিত কোনো কোনো কিতাব মানে আবার কোনো কোনোটি মানে না। আমি আল্লাহর প্রেরিত প্রতিটি কিতাবই মানি।



 

Show all comments
  • MD Akkas ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৪৯ এএম says : 0
    ইয়া আল্লাহ আপনি আমাদেরকে আপনার দিনের পথে চলার তৌফিক দান করুন। বর্তমান দিনের দায়ীদের কে সঠিক বুঝ দান করুন।সরকার ও সরকারের দালালদেরকে আপনি হেদা য়েত নসিব করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন