পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ১৫ লাখ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে ‘ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী’ পরিচালন মুনাফা অর্জন করছে। পিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণের মাধ্যমে পরিচালন মুনাফা অর্জনের মতো দুরুহ কাজ সম্পাদন করলেও সম্প্রতি বিদ্যুতের পাইকারী মূল্য বৃদ্ধিতে কোম্পানিটির আর্থিক ভীত দুর্বল হবার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি অনেক দুরুহ হলেও নিকট অতীতে প্রতিষ্ঠানটির সিস্টেম লস ৩৫-৪০% থেকে এখন ১০%-এর নিচে নেমে এসেছে। ফলে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ অপচয় ও চুরি রোধ করাও সম্ভব হয়েছে। যা দেশের বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক ভিতকে টেকসই করতেও যথেষ্ঠ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
ওজোপাডিকো বছরে প্রায় ১৬-২০ কোটি টাকা কর প্রদান করছে। এর বাইরে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ওপর গ্রাহক পর্যায়ে পরিশোধিত ভ্যাটও সরকারি কোষাগারে নিয়মিত জমা দিয়ে আসছে ওজোপাডিকো। এমনকি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় গত অর্থ বছরে কোম্পানিটির বিদ্যুৎ আমদানি ও বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থ বছরে কর্মচারী কল্যাণ তহবিলে প্রায় দেড় কোটি টাকা প্রদানের জন্য তহবিল সংরক্ষিত রেখেছে।
২০০৫ সালে পরিচালন কার্যক্রম শুরুর পরে ওজোপাডিকো দ্রুত সিস্টেম লস উল্লেখযোগ ভাবে হ্রাস করার পাশাপাশি ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। তবে এখনো গ্রাহক সেবার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি কাঙ্খিত মান অর্জন করতে পারেনি বলে অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ এ লক্ষে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকার কথা বলেছেন। বর্তমানে এ অঞ্চলের ২১টি জেলা ছাড়াও ২০টি উপজেলায় প্রায় ১৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে ওজোপাডিকো। এমনকি সাগর বক্ষের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলা সদরেও নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবারহ করছে কোম্পানিটি। চলতি অর্থ বছরেই দেশের অন্যতম বৃহৎ এ ব-দ্বীপটির ঘরে ঘরে অফ-গ্রীড সোলার সিস্টেমে মনপুরার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষেও কাজ করছে ওজোপাডিকো।
সরকারি নীতিমালার আলোকে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর কাছে থাকলেও শুরু থেকেই এ অঞ্চলের ২০টি উপজেলায় ওজোপাডিকো বিদ্যুৎ সরবারহ ও বিতরণ করে আসছে। এসব উপজেলাতেও সিস্টেম লস উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে এখন ১০%-এর কাছে পীঠে।
ওজোপাডিকো বিদ্যুৎ বিভাগের পশ্চিম জোনকে ৬টি সার্কেলে ভাগ করে তত্ববধায়ক প্রকৌশলীদের মাধ্যমে ৪৮টি বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির এখনো পাাইকারী ক্রয় মূল্যেই প্রায় ৯০% বা ১৩ লাখ আবাসিক গ্রাহকেক বিদ্যুৎ সরবারহ করছে। এর বাইরে ০.৪ কেভি থ্রি- ফেজ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারের মতো। যা মোট গ্রাহকের মাত্র ১১.৪৫%। কিন্তু কোম্পনীটির ১১ কেভি গ্রাহক সংখ্যা হাতে গোনা দেড় হাজারেরও কম। যে হার মাত্র ০.০৯৫%। আর সমগ্র পশ্চিম জোনে কোম্পানিটির ৩৩ কেভি গ্রাহক আছে মাত্র ২৪টি। যা মোট গ্রাহকের ০.০০১৭%।
কোম্পনিটি পিজিসিবি’র গ্রীড সাব-স্টেশন থেকে ১ হাজার ৮৮৪ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রহণ করে ৭৬টি ৩৩/১১ কেভী সাব-স্টেশন থেকে ১০ হাজার ৬১০ কিলোমিটার ১১ কেভি, ১১/০.৪ কেভি ও ০.৪ লাইনের লাইনের মাধ্যম গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সরবারহ করে থাকে। বর্তমানে এ অঞ্চলের ২১ জেলা সদর ও ২০টি উপজেলায় কোম্পনিটির ১০ হাজার ১০টি ১১/০.৪ কেভি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবারহ করা হচ্ছে। এর বাইরে কোম্পনিটির নিজস্ব স্থাপনা সহ গ্রাহক পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সোলার পাওয়ার সিস্টেমে ১২শ’ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে।
তবে ওজোপাডিকো’র বিশাল বিতরণ ও সরবরাহ লাইনের বেশিরভাগই ২-৩ যুগের পুরনো। পাশাপাশি ঘন বসতিপূর্ণ শহর এলাকায় ১১ হাজার ভোল্টের ওভারহেড লাইন প্রায়সই মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে। পুরনো বিতরণ ও ৩৩ কেভি লাইনগুলো পারিবর্তনে ৩টি প্রকল্প চলমান থাকলেও তার কোনটিই সময় মতো শেষ হচ্ছে না। পাশাপাশি বরিশাল, যশোর ও গোপালগঞ্জ শহরের ১১ কেভি লাইনগুলো ভূগর্ভে স্থাপনের একটি প্রকল্প-সারপত্র প্রনয়ণ করা হলেও দাতার অভাবে কোনো অগ্রগতি নেই।
অপরদিকে, লাইনে ত্রুটিসহ যেকোনো অভিযোগ সুরাহা নিয়ে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টি রয়েছে। সুষ্ঠু সেবা প্রদানের লক্ষে কোম্পনিটির গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় যানবাহন পর্যন্ত নেই। পাশাপাশি কোম্পানি গঠনের ১৭ বছর পরেও এর মাঠ কর্মীদের সেবার মানসিকতা গড়ে ওঠেনি বলেও অভিযোগ সাধারণ গ্রাহকদের।
এসব বিষয়ে ওজোপাডিকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, জনবল সঙ্কট সহ অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ওজোপাডিকো অনেক দুর এগিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সুষ্ঠু সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জনে। বিতরণ লাইনসহ সরবারহ ব্যবস্থা আধুনিকায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে অতি সম্প্রতি গ্রাহক পর্যায়ে দাম না বাড়িয়ে এ কোম্পনিটির বিদ্যুতের পাইকারী দাম ২৩% বাড়ানোয় আর্থিক ভীত নড়বড়ে হয়ে পড়ার আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।