Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণ-পশ্চিমে ইউপি নির্বাচন ঘিরে মাঠ রাজনীতি সরগরম

প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা  : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট রাজনীতি এখন সরগরম। রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বর্তমানে আগের চেয়ে অতিমাত্রায় চাঙ্গা। দলীয় কর্মকা-ও চলছে নির্বাচনকেন্দ্রিক। প্রথমপর্যায়ে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে সেসব এলাকার মাঠ রাজনীতিতে ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথমপর্যায়ে আগামী ২২ মার্চের অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন ২ মার্চ। গ্রামগঞ্জে প্রধানত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে। এতে যেমন নতুন মাত্রা পেয়েছে, পাশাপাশি কেমন হবে কি হবেÑ গ্রামের পাড়া-মহল্লায় পুরোমাত্রায় রাজনীতি ঢুকে পড়ে কোনো সমস্যা হয় কিনা- এমন নানামুখী শঙ্কা বাসা বাধছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তাছাড়া ভোট কি ফ্রি ফেয়ার হবে? অস্ত্র ও মাসলম্যানদের ব্যবহার হবে না তো? ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কি সমান সুযোগ থাকবে সকল ক্ষেত্রে? পলিটিক্যাল ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের কি দাপট দমন হবে? ভোটাররা কি নির্ভয়ে-নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে?Ñ এমন প্রশ্নও রয়েছে।
মাঠ রাজনীতির খোঁজ নিয়ে সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনীতি এখন যা চলছে তা মূলত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরেই। প্রধান দু’টি দল ও জোটই ইউপি নির্বাচনে জয়ী হয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। দলীয়ভাবে এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কতটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে,  ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কেমনÑ ইত্যাদি বিষয়েও গ্রামের পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকানে আড্ডায় জোর আলোচনা চলছে। সরকারি দলের সমর্থকদের কথা, সরকার ইউপি নির্বাচনের ব্যাপারে মাথা ঘামাবে না। ফ্রি, ফেয়ার নির্বাচন উপহার দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় সরকার। বিরোধী সমর্থকদের কথা, নির্বাচনে বিরোধী দল যাচ্ছে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মানতে, নেতা ও কর্মীদের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি তাপ-উত্তাপ নেই।  নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের কথা, আশা করা হচ্ছে ইউপি নির্বাচন অবাধ, নিরপক্ষে ও সুষ্ঠু হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারই প্রথম দলীয় মনোনয়নে দলীয় প্রতীক নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন করছেন। এতে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় নির্বাচন দলীয় পর্যায়ে না হওয়াটা গ্রামের মানুষের জন্য ভালো। কারণ জাতীয় নির্বাচন আর স্থানীয় নির্বাচনের ভিন্ন প্রেক্ষিত রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হোক এই প্রত্যাশা করছেন সবাই।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমের মোট ১০টি জেলার মধ্যে ৬টি জেলার মোট ২৪৭টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র জানায়, যশোরে ১৭টি, খুলনায় ৬৭টি, বাগেরহাটে ৭৮টি, সাতক্ষীরায় ৭৮টি, ঝিনাইদহে ৫টি ও চুয়াডাঙ্গায় ২টি ইউনিয়নে নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি মেম্বার প্রার্থীরা জমজমাট করে রেখেছেন গ্রামগঞ্জের নির্বাচনী পরিবেশ। যশোরের একটিমাত্র উপজেলা মনিরামপুরে ইউপি নির্বাচন হবে প্রথমপর্যায়ে। এখানে ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১টিতে আবার নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সেটি হচ্ছে হরিহরনগর ইউনিয়ন। সেখানে এখনো মেয়াদ পূর্ণ হতে কয়েক মাস বাকি। নির্বাচন কমিশন অবশ্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন হবে। কিন্তু মামলার প্রস্তুতি চলছে বিধায় নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, অস্ত্রবাজ চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী অধ্যুষিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অস্ত্র ও পেশীশক্তিমুক্ত হতে হবে। তার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অভিযানের পাশাপাশি সবদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণ-পশ্চিমে ইউপি নির্বাচন ঘিরে মাঠ রাজনীতি সরগরম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ