গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজকে আমাদের গণসমাবেশ ঠেকাতে সরকার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কিন্তু জনগণ সরকারকে বার্তা দিয়েছে যে তারা সরকারকে চায় না। ইনশাআল্লাহ গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে। জনগণ গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে প্রস্তুত। আমাদের কর্মসূচি আসবে। আমরা এখন চাল ডাল তেল ও নিতনিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। কিন্তু আগামী আন্দোলন হবে সরকারের পতনের আন্দোলন। আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে "শহীদ ডা. মিলন-গণতন্ত্রের মুক্তি এবং বর্তমান প্রেপ্রেক্ষাপট" শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডাঃ মোঃ আবদুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং ডাঃ মেহেদী হাসান ও ডাঃ মোঃ ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. শাহিদুর রহমান, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. পরিমল চন্দ্র মল্লিক, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. একেএম কবির আহমেদ রিয়াজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের গোলাম মাওলা শাহিন, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি বিলকিস জাহান চৌধুরী, এ্যামট্যাবের বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, ফিজিওথেরাপিস্ট ডা. মাহাতাব উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে ড্যাবের ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. আদনান হাসান খান মাসুদ, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, যুবদলের ওমর ফারুক মুন্না, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার সহ ড্যাবের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ডা. মিলন শহীদ হয়েছেন কেনো? তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। সেসময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সারাদেশে আন্দোলন ছিলো তুঙ্গে। সেসময় এরশাদের পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন মিলন। তার শাহাদাতের মধ্য দিয়েই আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ নেয়। মিলন সহ আরো ছাত্র ও শ্রমিক নেতার জীবন দেওয়ার পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছিলো। খালেদা জিয়ার আপোসহীন মনোভাব ছিলো এর নেপথ্য কারণ। এরপর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন। মানুষ খুশিমতো ভোট দিতে পেরেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়েছিল। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগও ক্ষমতায় এসেছিলো। এরপর শুরু হলো চক্রান্ত।
তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আমাদের নেত্রী বিদেশে যাননি। তাকে অনেক চাপ দেওয়া হয়েছিলো। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ওয়ান ইলেভেনের সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন ওয়ান ইলেভেনের সরকার নাকি তাদের আন্দোলনের ফসল। তারপর তারা ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। বিএনপির ৬‘শর বেশি লোক গুম। ১০০০ এর বেশি মানুষ খুন। খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। এটা জনবিচ্ছিন্ন সরকার। জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। টাকা লুটে আর পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির দাম বেড়েছে। দারিদ্রতা বেড়েছে। ৪০ ভাগ লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে। সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো সংকটের সমাধান হবে না। যারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তারা এর পুনর্গঠন করতে পারবেনা। দেশে বিচারব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
আমানউল্লাহ আমান বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার পেছনে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। আমাদের অনেক সহযোদ্ধা প্রাণ দিয়েছেন। ধীরে ধীরে বিভিন্ন পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তখনই খালেদা জিয়ার নামের আগে যুক্ত হয় "আপোসহীন নেত্রী" উপাধি। আর শেখ হাসিনা এরশাদের সাথে নির্বাচনে যাবে ঘোষণা দিয়ে পরবর্তীতে টাকার প্রলোভনে এরশাদের সাথে আঁতাত করে নির্বাচনে গিয়েছিলেন। তিনি হলেন প্রতারক।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষ ভোট দিতে পারেনা। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নেই। কিন্তু আবারো শেখ হাসিনার ভোটার বিহীন নির্বাচনের স্বপ্ন দু:স্বপ্নে পরিণত হবে। প্রয়োজনে কয়েক হাজার মানুষ রক্ত দিবে তবুও আর ভোটারবিহীন নির্বাচন হতে দেবোনা। ইনশাআল্লাহ তারেক রহমান চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিবেন। এবার যদি বিএনপির শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দেয় যেভাবে এরশাদের পতন হয়েছিলো সেভাবেই আন্দোলন হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মিলনের সহপাঠী অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদ বলেন, ডা. মিলন স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। সে সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু তার স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচার এরশাদের পুলিশ। আজো চলমান আওয়ামী দু:শাসনের বিরুদ্ধে আমাদরকে সেই রকম আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আসুন এই শপথ করি তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।