Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এএমআর প্রতিরোধে এন্টিবায়োটিকের খুচরা বিক্রি বন্ধ জরুরি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ৮:০২ পিএম

এন্টিবায়োটিক ওষুধের অকার্যকারিতা তথা এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশেও এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। খুচরা বিক্রি এএমআরের জন্য একটি বড় সমস্যা। তাই এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইন প্রয়োজন। আইনের সঠিক প্রয়োগের জন্য আইন প্রয়োগকারী ও মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তারা এও বলছেন যে, শুধু আইন দিয়েও এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। প্রয়োজন সচেতনতা।

বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে ‘এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা: প্রতিরোধ গড়ি সবাই মিলে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। আজ রবিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউএসএআইডি’র এমট্যাপস প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ কন্ট্রোল) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম। বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, ইউএসএআইডি’র গ্লোবাল হেলথ সিকিউরিটি এজেন্ডার স্পেশালিস্ট ড. আবুল কালাম আজাদ ফ্লেমিং ফান্ড বাংলাদেশ’র টিম লিড অধ্যাপক ডা. নিতীশ দেবনাথ, আইইডিসিআরের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিকেল মাইক্রোবায়োলজিস্টসের সভাপতি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা ঝোরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি।

অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের জন্য খুচরা বিক্রি একটি বড় সমস্যা। জ্বর হলেই সাধারণ ওষুধের সঙ্গে দেখা যায় এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট ২-৩টা নিয়ে যাচ্ছে। এটি সাধারণ মানুষের মাঝে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের বড় কারণ। এজন্য নিয়ম করা প্রয়োজন, কেউ এন্টিবায়োটিক কিনলে পুরো কোর্স কিনতে হবে, না হয় কিনবেন না।

ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, আমরা যদি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তুলনা করি, প্রধানত আমাদের অপারেশন থিয়েটার কিংবা বেড থেকে সংক্রমণ হওয়ারই কথা না। এটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু সেটি আমাদের এখানে হচ্ছে। আমাদের লোকজন বেশি, সুযোগ-সুবিধা কম। এছাড়া রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অপারেশনের যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করে বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে সংক্রমণ হয়ে থাকে। অনেক জীবাণু আছে, যা গরম পানিতে ফুটালেও মারা যায় না। এ জীবাণুও যাতে না থাকে, এর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ময়লা ফেলার জন্য আলাদা আলাদা বিন করে দিয়েছি। কিন্তু দেখা যায়, সব হাসপাতালের এই বিনগুলোর ময়লাকে নিয়ে সব একই জায়গায় ফেলা হচ্ছে। এতে সেখান থেকে পরিবেশ, মাটি, পানি এবং শস্য ক্ষেতেও জীবাণু সংক্রমিত হচ্ছে।

অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, কোন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না। এছাড়া চিকিৎসকরা কেনো তা লিখছেন সেটিও দেখতে হবে। চিকিৎসকদের এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া আমাদের ল্যাবরেটরি টেস্টের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

বক্তারা এন্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে টিকার ব্যবহার, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করার সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে নজর দেয়ারও পরামর্শ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ