নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : কোনো এক আন্তর্জাতিক আসরের স্বর্ণজয়ী ভারোত্তোলক যদি অন্য কোনো টুর্নামেন্টে ক্লিনার ও লোডারের ভূমিকায় থাকেন তখন তাকে কি পরিচয়ে সবাই চিনবেন? নিশ্চয়ই খেলোয়াড় নয়। একজন ভারোত্তোলকের সব সময়ই স্বপ্ন থাকে যে, তিনি বিদেশের মাটিতে খেলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন। দেশের সম্মান নিয়ে কখনোই ছিনিমিনি খেলবেন না। কিন্তু এমন কাজই করেছেন বাংলাদেশের দুই তারকা ভারোত্তোলক। গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম স্বর্ণপদকটি জয় করেন প্রতিভাবান নারী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সিমান্ত। ওই আসরে ব্রোঞ্জপদক জিতেছিলেন লাল-সবুজদের তরুণ ভারোত্তোলক মোস্তাইন বিল্লাহ। অথচ মাত্র দশ মাসের ব্যবধানে এ দু’জনকে দেখা গেল কাতারের এক টুর্নামেন্টে ক্লিনার ও লোডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষে দেখা গেছে স্বর্ণপদক গলায় ক্যামেরায় পোজ দিচ্ছেন মাবিয়া আক্তার সিমান্ত ও রেশমা আক্তার। পদক গলায় ছবি তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও প্রকাশ করেছেন। যা শুধু হঠকারিতাই নয়, জাতির সামনে মিথ্যাচারও।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। আর ভারোত্তোলন খেলার দেখভালের জন্য রয়েছে ফেডারেশন। কিন্তু এ দুই সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিন ভারোত্তোলককে নিয়ে ক’দিন আগে কাতার যান ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদ। উদ্দেশ্য কাতারের দোহায় এশিয়ান কাতার কাপ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা। ভারোত্তোলকরা হলেনÑ গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী মাবিয়া আক্তার সিমান্ত, ব্রোঞ্জজয়ী মোস্তাইন বিল্লাহ এবং ভারোত্তোলক রেশমা আক্তার। গত মঙ্গলবার এই দলের সঙ্গে গেছেন এনএসসি’র কোচ শাহরিয়া সুলতানা সূচী এবং ফারুক সরকার কাজলও। কিন্তু সেখানে গিয়ে বাংলাদেশের তারকা ভারোত্তোকরা ক্লিনার ও লোডারের কাজও করেছেন। টুর্নামেন্ট শুরুর পরই এর একটি লাইভ ভিডিও রেকর্ড নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশন। সেখানে দেখা যায় একজন ভারোত্তোলকের ভার তোলার পর মোস্তাইন বিল্লাহ মেঝের ঘাম পরিষ্কার করছেন। এরপর দেখা গেছে মোস্তাইন ও সিমান্ত ভারোত্তোলকদের ওজন প্লেট পরিবর্তন করে দিচ্ছেন। দৃশ্যটি দেখার পরও কি কেউ বিশ্বাস করবেন এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের কোনো ভারোত্তোলক খেলেছেন। দেশের হয়ে তারা জিতেছেন স্বর্ণপদক?
বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, এশিয়ান কাতার কাপ চ্যাম্পিয়নশিপের বিষয়ে কোন তথ্যই নেই আন্তর্জাতিক ওয়েটলিফটিং ফেডারেশন এবং এশিয়ান ওয়েটলিফটিং ফেডারেশনের কাছে। যদিও কাতার ওয়েফলিফটিং ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক জায়েদ মুবারক ‘চতুর্থ কাতার কাপ’ নামক টুর্নামেন্টের একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠান বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশন বরাবরে। কিন্তু এশিয়ান ভারোত্তোলন ফেডারেশনে এখনো ‘সাধারণ সম্পাদক’ পরিচয় দেয়ায় আমন্ত্রণপত্রটি নিজের মেইলে আনেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন। যা শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বলেই মনে করেন দেশের ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া এনএসসি এবং ফেডারেশনকে না জানিয়ে বাংলাদেশের তিন ভারোত্তোলক কিভাবে কাতারে গেলেন তাও কারো জানা নেই। ‘আগমন ভিসা’ থাকায় কাউকেই জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি ভারোত্তোলকরা। যদিও এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের নাম ছিল না। স্থানীয় মিডিয়া কাতার ট্রিবিউন এবং অন্য মিডিয়াগুলো ঘেটে এমন প্রমাণই মিলেছে। পুরুষ বিভাগে ৭৭, ৮৫, ৯৪ ও ১০৫ প্লাস কেজিতে খেলা হলেও নিয়মিত ইভেন্ট ৬২ কেজিতে খেলা মোস্তাইন বিল্লাহ কোথায় খেললেন তা জানেন না ভারোত্তোলন সংশ্লিষ্ট কেউই। আর মহিলা বিভাগে ৫৩, ৬৯ ও ৭৫ প্লাস কেজিতে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।