চীনের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিদেশে শিক্ষা সফর এবং পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত খরচ মেটাতে হিমশিম খায়। এতে করে অনেকে প্রয়োজনীয় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন না। ফলে চাকরির বাজারে শহুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছেন না তারা। একটি গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
ওই গবেষণার অংশ হিসেবে গবেষকরা চীনের চারটি অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এতে দেখা যায়, গ্রাম থেকে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থী চাকরি পেলেও শহুরে শিক্ষার্থীদের সমপর্যায়ে যেতে পারে না বা তাদের মধ্যে শুরুর বেতনে পার্থক্য থাকে। এ ছাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা চাকরিতে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে অস্থিরতায় পড়েন।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে থাকেন। এতে গ্রামের শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ, সহযোগিতা এবং নেতৃত্বের দক্ষতায় পিছিয়ে পড়েন। আর এসব দক্ষতা চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
এদিকে অক্টোবরে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, দেশের ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী যুবকদের মধ্যে ১৭.৯ শতাংশ বেকার। যদিও গতমাসে চালানো এক জরিপে সামগ্রিকভাবে ৫.৫ শতাংশ বেকরত্বের কথা বলা হয়েছে। তবে এসব জরিপে গ্রামের কিছু শিক্ষার্থীর বেকারত্বের বিষয়টি আড়ালে পড়ে থাকে। কারণ জরিপে সাধারণত শহুরে যুবকদের ওপর মনোযোগ দেওয়া হয়।
অর্থাৎ শহরের পড়াশোনা করে গ্রামে ফিরে গিয়ে বসবাস করা শিক্ষার্থীরা এই জরিপ থেকে বাদ পড়েন। যেমন অতীতে চালানো একাধিক জরিপে প্রয়োজনীয় সামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও দেখা যায় যে, গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার আরও বেশি।
২০১৩ সালের শেষের দিকে চায়নিজ একাডেমি অব সোস্যাল সায়েন্স (সিএএসএস) প্রকাশিত দ্য সোস্যাল ব্লুবুক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের বেকারত্বের হার ৩০.৫ শতাংশ। শহরের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তা ১২.২৮ শতাংশ।
২০১৯ সালে স্নাতক পাস করা গ্রামীণ পরিবারের শিক্ষার্থীদের গরীব এলাকায় চাকরি পাওয়ার হার ২৩.৫ শতাংশ এবং একই সালে গ্রামের ভোকেশনাল পাস শিক্ষার্থীদের চাকরি প্রাপ্তির হার ২১.১ শতাংশ।