কাতার বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার শক্তি ইরান। ওয়েলসের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের দুই গোলে নাটকীয় জয় পেয়েছে তারা। গতকাল আল রাইয়ানে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ইরান ২-০ গোলে হারায় ওয়েলসকে। ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখলো ইরানিরা। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে ওয়েলস ও ইরানের জন্য ম্যাচটি ছিল বাঁচামরার লড়াই। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ইরান ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে ওয়েলস। শেষ ষোলোতে ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প ছিল না দু’দলের সামনেই। এই সমীকরণ মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো ইরান।
কাল ম্যাচের প্রথমার্ধে ওয়েলসের আধিপত্য বেশি ছিল। শুরু থেকেই ইরানকে চাপে রাখে তারা। প্রথমার্ধে ৬৫ ভাগ বল দখলে রেখে আক্রমণ করে ওয়েলস। তবে গোল আদায় করার মতো কোন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। ১৩ মিনিটে কেইফার মুর ছোট বক্স থেকে শট নিলে সেই শট ইরানি গোলরক্ষক হোসেন হোসেইনকে পরাস্ত করার মতো যথেষ্ট ছিল না। তবে পাল্টা আক্রমণে ওয়েলসের রক্ষণে তিনবার হানা দিয়েছিল ইরান। ১৬ মিনিটে তো তাদের একটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। ইনজুরি সময়ে মাঝমাঠ থেকে আসা একটি বলের খুব কাছে ছিলেন সর্দার আজমুন। কিন্তু বল পায়ে সংযোগ ঘটাতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে নুরুল্লাহি বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শট নিয়েছিলেন। কিন্তু শটটি জমা পরে ওয়েলস ােগালরক্ষকের হাতে। দ্বিতীয়ার্ধে ইরান চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। এসময় তারা বেশ কিছু আক্রমণ সানিয়ে ওয়েলসের রক্ষণদূর্গে ভীতি ছড়ায়। বিরতির পর একের পর এক কর্নারও আদায় করে নিয়েছে ইরান। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো কখনও ওয়েলসের গোলরক্ষকে, আবার কখনো পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। এর মধ্যে ম্যাচের ৫২ মিনিটে ইরানের পরপর দুটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। আজমুনের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসলে বল চলে যায় আলি গোলিজাদেহ’র কাছে। তার জোরালো শটও ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ফিরতি বলে আজমুন হেড নিলে তা প্রতিহত করেন ওয়েলসের গোলরক্ষক হেনেসি। ম্যাচের ৭৩ মিনিটেও গোল পেতে পারতো ইরান। কিন্তু এজাতোলাহির শট বাইরে চলে যায়। ৮৪ মিনিটে সুযোগ তৈরি হয়েছিল ওয়েলসের সামনে। এসময় বক্সের মাথা থেকে ডেভিসের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ম্যাচের বয়স যখন ৮৬ মিনিট তখন বক্সের অনেক বাইরে এসে ইরানের মেহেদি তারেমিকে লাথি মেরে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ওয়েলসের গোলরক্ষক ওয়েইন হেনেসি। ফলে ১০ জনের প্রতিপক্ষ পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠে ইরান। একের পর এক আক্রমণ করে নাটকীয়ভাবে ম্যাচটি জিতেও নেয় তারা। ম্যাচের যোগকরা সময়ের (৯০+৮ মিনিট) অষ্টম মিনিটে রোজবেহ চেশমি প্রথম গোলটি করেন (১-০)। এর তিনি মিনিট পর (৯০+১১মিনিট) রামিন রেজাইন গোল করে ইরানের জয় নিশ্চিত করেন (২-০)।
এই জয়ে দুই ম্যাচে ৩ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ইরান। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট পাওয়া ওয়েলসের অবস্থান সবার শেষে। এক ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রæপে শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড।