Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলল কানাডা, জিতল বেলজিয়াম

চীনের প্রাচীর কর্তোয়া | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

পরশু রাতে আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে এফ গ্রুপের ম্যাচে লড়াইয়ে নেমেছিল বেলজিয়াম-কানাডা। গোটা ম্যাচে একটি দল শট নিয়েছে ২১টি। আরেক দল সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল, মাত্র নয়টি। এটাই তো স্বাভাবিক তাই না? আপনারা যারা খেলা দেখেননি, তারা ভাবছেন এটাই তো স্বাভাবিক। রেঙ্কিংয়ের ২ নাম্বারে থাকা বেলজিয়াম শট অনেক বেশি নিবে। এবার সত্যটা জানুন, আর চোখ ছানাবড়া করুন। পরশু রাতে কানাডায় ২১ শট নেয়ার কীর্তি গড়েছে। চমকটা এখানেই। একজন ভালো মানের ফিনিশার থাকলে বেলজিয়ামকে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের তৃতীয় অঘটনের জন্ম দিত তারা। সেই দাপুটে ফুটবলটা অবশ্য স্কোরলাইনে প্রতিফলিত হয়নি। কেবলমাত্র খেলোয়াড়দের মান ও অভিজ্ঞতার জোরে জিতেছে বেলজিয়ানরা। স্ট্রাইকার মিচি বাতশুয়াইর গোল আর গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার নৈপুন্যে এ যাত্রায় পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই মান বাঁচিয়েছে রবার্তো মার্তিনেজের দল। অন্যদিকে ১-০ গোলে হেরে হৃদয় ভেঙেছে ফুটবপ্রেমীদের মন জয় করা কানাডার।
কানাডার খেলা সর্বশেষ বিশ্বকাপের বাঙালির একটা আবেগ জড়িয়ে আছে। ম্যারাডোনার একক আধিপত্যের বিশ্বকাপ ১৯৮৬ সালে কানাডা সর্বশেষ বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলতে পেরেছিল। পরশু মধ্যরাতে দলটি শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলা শুরু করেছিল । দীর্ঘ বিরতির পর আবারও কাতার বিশ্বকাপ দিয়ে ফেরা দলটির মধ্যে ভয়ডর বলে আদৌ কিছু আছে বলে মনে হয়নি।
কানাডার হয়ে জোনাথন ডেভিড, কখনও আলফোনসো ডেভিস, কখনও জুনিয়র হয়লেট আবার কখনও তাহোন বুকাননের আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল বেলজিয়ামের বয়সি রক্ষণভাগে। বেলজিয়ামের তিন সেন্টারব্যাকের দুজন টোবি অল্ডারউইরেল্ড আর ইয়ান ভার্তোনে ইউরোপের কোনো শীর্ষ লীগে খেলেন না এখন। আরেকজন লিয়ান্ডার ডেনডনকার আদতে একজন মিডফিল্ডার। এই জোড়াতালি দেয়া রক্ষণে ঠিকঠাক প্রেস করলেই যে ফল মিলবে, এই বিশ্বাসে মাঠে নেমেছিল কানাডা। কিন্তু পেছনে যে এক থিবো কোর্তোয়া ছিলেন! তাহন বুকাননের শট ডি-বক্সের মধ্যে লেফট উইংব্যাক ইয়ানিক কারাসকোর হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় কানাডা। বায়ার্ন মিউনিখে খেলা লেফটব্যাক আলফোনসো ডেভিসের মাটি কামড়ানো শট আটকে নায়ক বলে যান কোর্তোয়া। ফিরতি বলেও গোল করতে পারেননি ডেভিস, বল মেরেছেন আকাশে। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সেন্টারব্যাক অল্ডারভেইরেল্ডের একটা লং বল ধরে কানাডার গোলকিপার মিলান বোরহানকে পরাস্ত করেন ফেনেরবাচের স্ট্রাইকার মিচি বাতশুয়াই। পেনাল্টি ছাড়াও গোটা ম্যাচে এমন আরো তিনটে সেভ করেছেন রিয়াল গোলকিপার, সাধারণ গোলকিপার থাকলে যেসব শটে হয়তো গোল হতো নিশ্চিত। শেষদিকে স্ট্রাইকার কাইল ল্যারিনের কয়েকটা প্রচেষ্টাও গোলে রূপান্তরিত হয়নি। ম্যাচ শেষে দলের পারফরম্যান্সে মুগ্ধতার কথা বললেন কোচ হার্ডম্যান, ‘কানাডা দেখিয়েছে, বিশ্বকাপে খেলার যোগ্য তারা। দীর্ঘ সময় পর আমরা বিশ্ব মঞ্চে ফিরেছি।’
কানাডাকে হারিয়ে এই নিয়ে বিশ্বকাপের গ্রæপ পর্বে টানা আট ম্যাচ জিতল বেলজিয়াম। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলটির কোচ মার্তিনেজ এক বাক্যে স্বীকার করেছেন, ভালো খেলেননি তারা, ‘এটি টেকনিক্যালি সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স ছিল। আমরা খুব ভালো ডিফেন্ড করেছি এবং একটি দারুণ গোল করেছি। কানাডার পারফরম্যান্সে আপনাকে অনেক সম্মান দিতে হবে। তাছাড়া আমাদের যা করার কথা ছিল আমরা তা ঠিকঠাক করতে পারিনি। তবে জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল।’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে মরক্কোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ক্রোয়েশিয়া। ফলে আপাতত গ্রুপশীর্ষে বেলজিয়ামই।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ