Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিলিস্তিনি শিশুদের স্কুল গুঁড়িয়ে দিল ইসরাইল

ইহুদিবাদীদের আগ্রাসনে আরো ২ ফিলিস্তিনি শহীদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে বর্বর ইহুদিবাদীদের হামলায় আহত আরো দুই ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে একজন বুধবার নাবলুস শহরে ইসরাইলি সেনাদের আগ্রাসনে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। অন্যজন গত জুলাই মাসে ইসরাইলি সেনাদের হামলায় আহত হয়েছিলেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুরুতর অবস্থায় এই দুই ফিলিস্তিনি হাসপাতালে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হলো। ফিলিস্তিনি হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শহীদ দুই ফিলিস্তিনি হলেন ২২ বছর বয়সী মোহাম্মদ হিশাম মোহাম্মদ আবু কিশ্ক এবং ৩০ বছর বয়সী মোহাম্মদ আহমদ হাসান হারজুল্লাহ। এর মধ্যে আবু কিশ্ক তলপেটে গুলি বিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। আর হারজুল্লাহ আহত হয়েছিলেন গত জুলাই মাসে। এদিকে, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের নিপীড়ন-নির্যাতন চলছেই। ইহুদি এই দেশটির দমন-নিপীড়ন থেকে বাদ যাচ্ছে না ফিলিস্তিনি শিশুদের স্কুলও। এবার ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি স্কুল গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলি বাহিনীর গুঁড়িয়ে দেওয়া ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চলে অবস্থিত এবং এটি সম্প্রতি নির্মাণ করা হয়েছিল। এছাড়া পশ্চিম তীরের এই এলাকায় ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির হুমকির সম্মুখীনও হচ্ছে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা এবং কর্মকর্তারা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনী বুধবার সকালে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইসফেই আল-ফাউকা গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে দিয়েছে। মাসাফের ইয়াত্তার স্থানীয় কাউন্সিলের প্রধান নিদাল ইউনিস আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইসরাইলি দখলদার বাহিনী পাঠদান সেশন চলাকালীন স্কুলটি ভেঙে দেয় এবং এসময় ছাত্ররা ভেতরেই ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা (ইসরাইলি সেনাবাহিনী) বাচ্চাদের ভয় দেখাতে এবং স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য শব্দ উৎপন্নকারী বোমা ব্যবহার করে।’ নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের মতে, ইসরাইলি হাইকোর্ট অব জাস্টিস বুধবার ওই স্কুলটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ স্থগিত করার যে অন্তর্র্বতী নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আল-জাজিরা বলছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে প্রশাসনিক বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছে ইসরাইলি সামরিক সংস্থা দ্য কোঅর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভেটিস ইন দ্য টেরিটরিস (সিওজিএটি)। সংস্থাটি বলছে, অবৈধভাবে নির্মিত একটি ভবন তারা ভেঙে দিয়েছে। কারণ ওই ভবনটি ফায়ারিং জোনের কাছেই অবস্থিত। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভেঙে দেওয়া এই স্কুলটি প্রায় এক মাস আগে নির্মিত হয় এবং দুই সপ্তাহেরও কম সময় ধরে এটি চালু ছিল। এছাড়া স্কুলটি মাসাফের ইয়াত্তার চারটি পৃথক গ্রামের ২২ জন শিক্ষার্থীকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করাচ্ছিল। মাসাফার ইয়াত্তা অঞ্চলের কর্মী ফাদি আল-উমুর আল জাজিরাকে বলেছেন, ভেঙে দেওয়া স্কুলটি ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রামের অধীনে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নির্মিত এক ডজনেরও বেশি স্কুলের মধ্যে একটি। ফিলিস্তিনিদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল বলেছে, স্কুলটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার খবরে তারা ‘আতঙ্কিত’ হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে এই ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা করেছে এবং একে ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ