Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইসিকে প্রকৃত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায় বিএনপি : রিজভী

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের সোনার খাঁচায় পোষা পাখি নয়, সব দলের আস্থাশীল নির্বাচন কমিশন চায় বিএনপি। আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্টের সংলাপে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য তুলে ধরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কথা জানান।
তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা হচ্ছে যে, একটি নিরপেক্ষ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যা সরকারের আবরণীয় বা তাদের সোনার খাঁচার মধ্যে পোষা একটা পাখি হবে না। এটা সত্যিকার অর্থেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হবে, যে প্রতিষ্ঠান সরকারের রক্তচক্ষু অথবা তাদের অশুভ ইচ্ছাকে ডিফাই করে তারা (ইসি) জনগণের ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করবে। ভোটাররা উৎসাহিত হবে এবং তারা স্বস্তি ও শান্তির সাথে ভোট দিতে যাবে। জনগণ সেটাই প্রত্যাশা করে। বিএনপি সেটারই প্রতিধবনি করেছে তার ১৩ দফা প্রস্তাবে। আমরা প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে প্রত্যশা করবো সেই ধরনের নির্বাচন কমিশন, যেধরনের কমিশনের প্রতি সকল দলের আস্থা থাকবে, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির আস্থা থাকবে।
রিজভী আরো বলেন, সবদলের আস্থা ব্যতিরেখে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী যদি শুধুমাত্র শাসকদলের অনুগত লোকদের খুঁজেন, তাহলে তো এটা আস্থাশীল কোনো ঘটনা হবে না।
আমরা মহামান্য প্রেসিডেন্টকে বলব, সাংবিধানে তার যে দায়িত্ব আছে সব দলের সাথে কথা বলে সবার আস্থাশীল একটা নির্বাচন কমিশন। যে প্রধান নির্বাচন কমিশন ও ৪ জন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ হবে, তাদের প্রতি সব রাজনৈতিক দলগুলোর বিশ্বাস ও আস্থা থাকবেÑ হ্যাঁ তাদের অধীনে নির্বাচনটা স্বাধীন হবে, নিরপেক্ষ হবে, সুষ্ঠু হবে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
সংসদের বাইরে থাকা অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে এই আলোচনার মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সংলাপ শুরু হবে।
নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেলেও সন্ত্রাসীরা তাদের সহিংস ভঙ্গি প্রদর্শনের নানা আলামত ফুটে উঠেছে। স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের সংশয় ও ভীতি কাজ করছে। ইতোমধ্যে জেলার বহুল আলোচিত ৭ খুনের মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা বার বার বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই। সেজন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন তাদের অধীনে রক্তপাতের নির্বাচনের ন্যায় ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন আলোহীন, ভোটহীন, ভোটারশূন্য ও অন্ধকারতুল্য প্রবণতার নির্বাচন সফল করার তৎপরতা চালালে সেটি প্রতিহত করার জন্য জনগণ দিবানিশি প্রস্তুত থাকবে। কমিশনের মূঢ়দার আত্মঘাতী কর্মকা-ের উপযুক্ত জবাব পেতে কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার ভোট ডাকাতি ও কারচুপির আশ্রয় নিতে গেলে, সেসময় কমিশন নিষ্ক্রিয়, নিদ্রামগ্ন ও সরকারের স্বার্থরক্ষায় তৎপর থাকে, সেটির প্রতিক্রিয়ার জন্যও কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিগত সময়ে বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের বিবৃতিগুলোকে মিথ্যাচারের বিশাল দলিল হিসেবে অভিহিত করে রিজভী বলেন, সেগুলো ছিলো সরকারকে খুশি করার বিবৃতি এবং সরকারের পক্ষে কাজ করার দৃষ্টান্ত হয়ে ফুটে উঠেছে সেগুলোতে। দেশের জনগণের কাছে ওইসব বিবৃতি ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা পায়নি বরং সেগুলো হাস্যকর বলে মনে করেছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আসাদুল করীম শাহিন, বাবুল আহমেদ, কাজী আবুল বাশার, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ