নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এই শতাব্দীতে ব্রাজিল বাদে বাকি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা একটা অলিখিত রীতি শুরু করেছিলো। শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পরের আসরেই গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায়! ঘরের মাঠে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্সের হাত ধরেই এই অধটন বা অভিশাপের শুরু। সবশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপেও শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল ফরাসিরা। তাই সেই রীতি অনুযায়ী দিদিয়ার দেশমের দলের এবার বাদ পড়ে যাওয়ার কথা গ্রæপ পর্যায় থেকেই। শুরুর আগেই যখন পল পগবা, কিম্পেম্বে আর শেষ দিনে করিম বেনজেমার মতো তারকাদের হারিয়ে আল জানোব স্টেডিয়ামে পরশু মধ্যরাতে ‘ডি’ গ্রæপের ম্যাচটিতে বহু শংকা নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স। কথায় আছে, যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রত্রি হয়। ম্যাচের বয়স দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগেই, ফরাসিদের জালে বল জড়িয়ে দিলো সকারুরা। তখনই ঘুরেফিরে আসছিল চ্যাম্পিয়ন অভিশাপের সেই পুরনো প্রবাদ। তবে ৯০ মিনিট শেষে স্কোর কার্ড দেখার পর আপনি শুরুর দিকটাকে মেলাতে পারবেন না। অলিভিয়ের জিরোর মাইলফলক স্পর্ষ করা জোড়া গোলে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল!
ম্যাচ শুরুর পরেই প্রতি আক্রমণে অস্ট্রেলিয়া বুঝিয়ে দিয়েছিল, তাদের হেলাফেলা করলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা বিশাল ভুল করবে। অন্যদিকে ফ্রান্স বস দেশম বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগেই জেনেছিলেন যে মধ্যমাঠের দুই কান্ডারি পগবা ও কান্তে এবার বিশ্বকাপ মিস করছেন। কাতারে দলের সঙ্গে এসেও আসর থেকে ছিটকে গিয়েছেন ডিফেন্ডার কিমবেপ্পে ও দলের প্রাণভোমরা বেনজেমা। সবমিলিয়ে দেশমকে মনে হচ্ছিল মাঝ দরিয়ায় দিকভ্রষ্ট এক নাবিক। এসবের সঙ্গে মরার উপর খারার ঘা হয়ে আসে ম্যাচের নয় মিনিটে। রাইট উইং থেকে আসা ম্যাথিউ লেকির দুর্দান্ত ক্রসে পা ঠেকিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ক্রেইগ গুডউইন। সেই ক্রস আটকাতে গিয়ে বেকায়দাভাবে মাটিতে পড়ে চোটে পড়লেন বর্তমান সময়ের বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা সেন্টারব্যাক লুকাস হের্নান্দেস। ফ্রান্স তখন এক গোলে পিছিয়ে। দলের ম‚ল লেফটব্যাক চোটে মাঠের বাহিরে। সব মিলিয়ে কোন দলের জন্য এরচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ শুরু আর হতে পারে না। তবে লুকাস হার্নান্দেসের জায়গায় মাঠে নামে, তার ভাই থিও হার্নান্দেস ম্যাচের চিত্রনাট্যই বদলে দিলেন। হঠাৎ করেই যেনো নিজেদের শক্তি মনে পড়ল এমবাপে-জিরু-গ্রিজমান আর রাবিওদের। আর তাতেই পুড়ে ছারখার অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মতই খেলা শুরু করে ফ্রান্স। এসি মিলানে খেলা থিও অসম্ভব কৌশলী আক্রমণের ব্যাপারেও। সে নামার পরই বাঁ দিকে থাকা ক্লিয়ান এমবাপে তার ন্যাচারাল খেলা শুরু করেন। উসমান দেম্বেলেও প্রাণ ফিরে পান। আর সত্যি বলতে বর্তমান ফ্রান্স দলের থিও, এমবাপে ও দেম্বেলেকে ওয়ান মার্কারে আটকে রাখা প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি।
থিও যা খেলেছেন, তা দেখে থিওকেই যদি কোচ দেশম ফ্রান্সের মূল লেফটব্যাক বানিয়ে দেন, তা প্রতিপক্ষের জন্য বাড়তি চিন্তার কারণ হবে। তবে আবার নিজেদের জন্যঅ সমস্যা দেকে আনবে তা। ঠিও আর এমবাপ্পে অসম্ভব ওফেনসিভ। থিও তাও প্রতি আক্রমণের সময় ডিফেন্সে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে এমবাপে একদমই অনাগ্রহী রক্ষণে সাহায্য করতে। তাই প্রতিপক্ষ যদি কোন বড় দল হয়, এবং আক্রমণের জন্য ফরাসিদের ডান পার্শ্ব নির্বাচন করে, তবে বিপদ আসতে পারে। রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডারের ভ‚মিকায় অরেলাঁ চুয়ামেনিকে রেখে রাবিওর হুটহাট উঠে যাওয়াও ঝামেলায় ফেলছিল অস্ট্রেলিয়াকে। প্রথম দুটি গোলের একটা করেছেন, একটা করিয়েছেন এই জুভেন্টাস মিডফিল্ডার রাবিও। ২৭ মিনিটে প্রথম গোলটা থিওর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে নিজেই করেছেন, ৩২ মিনিটে পরেরটা অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণভাগের ভুলের সুযোগ নিয়ে অলিভিয়ের জিরুকে দিয়ে করিয়েছেন।
ম্যাচে জিরু গোল পেয়েছেন দুটি। দুটি গোল করে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় থিয়েরি অঁরির সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এলেন তিনি। ৭১ মিনিটে এমবাপ্পের মাপা ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন জিরু। এর তিন মিনিট আগে অবশ্য দেম্বেলের ক্রসে মাথা ঠেকিয়ে নিজেও একটা গোল করে ফেলেছিলেন এমবাপ্পে। যদিও দুইয়ার্ধ মিলিয়ে এই পিএসজি ফরোয়ার্ড মিস করেছেন গোল করার নিশ্চিত দুটি সুযোগও। তারপরও বড় এই জয়ে গ্রæপের শীর্ষে উঠে গেল ফ্রান্স। এদিনই গ্রæপের আরেক ম্যাচে ডেনমার্ক গোলশূন্য ড্র করেছে তিউনিসিয়ার সঙ্গে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।