Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নব্বইয়ের ম্যারাডোনায় প্রেরণা খুঁজছেন মেসিরা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ম্যাচ শুরুর আগে কে ভেবেছিল স্কোরলাইনটা এমন হবে! খেলা শুরুর আগে বরং আলোচনা ছিল, আর্জেন্টিনা কত গোলে সউদী আরবকে হারাবে। আগের দিন ইরানকে ইংল্যান্ড ৬-২ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর আর্জেন্টিনার সমর্থকদের স্বপ্ন ছিল, হয়তো মেসির দল সউদী আরবের বিপক্ষেও মাতবে গোল-উৎসবে। খেলার শুরুতেই (৯ মিনিটের মাথায়) ভিএআর সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পেয়ে, সেটি থেকে গোল করে মেসি যখন আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিলেন, তখন সমর্থকদের প্রত্যাশা তুঙ্গে। কিন্তু ৯০ মিনিট শেষে সেই প্রত্যাশা দুঃস্বপ্নে পরিণত। অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিল সউদী আরব।
বিশ্বকাপ তৃতীয় দিনেই দেখল ইতিহাসের অন্যতম বড় অঘটন। তাতে মেসির বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচেই পড়ে গেল সংশয়ে। আর্জেন্টিনার পরের দুটি ম্যাচ যথাক্রমে মেক্সিকো আর পোল্যান্ডের বিপক্ষে। দুই প্রতিপক্ষই নিঃসন্দেহে সউদী আরবের চেয়ে কঠিন। সউদী আরবের বিপক্ষে হারের পর গোটা আর্জেন্টিনা দলই যে নিদারুণ চাপে, সেটি বলতে ফুটবল-বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই।
পরের দুটি ম্যাচ আর্জেন্টিনার জন্য বড় পরীক্ষার, রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা। এদিনের আগে টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনা দলকে এখন বাকি ২টি ম্যাচে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া পারফরম্যান্সই খুঁজে নিতে হবে। নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপটা রাঙানোর লক্ষ্যটা প‚রণ করতে হলে মেসিকেও ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
পেনাল্টি থেকে গোলটি করা বাদ দিলে সউদী আরবের বিপক্ষে মেসিকে তার মতো করে পাওয়া যায়নি একেবারেই। হারটা তাই আর্জেন্টিনার জন্য বড় ধাক্কা, ম্যাচ শেষে বলেছেন লাওতারো মার্তিনেজও, ‘এই হার আমাদের জন্য বড় ধাক্কা। এমন হারের পর হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক।’ তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে এমন কিছু হয়, এমনটা ভেবেই সান্ত¡না খুঁজছেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার, ‘এমন হতেই পারে। তবে এ মুহ‚র্তে আমাদের যেটা প্রয়োজন, সেটি হচ্ছে অনুশীলনে নিজেদের ভুলভ্রান্তিগুলো খুঁজে বের করা ও নতুন করে সবকিছু নিয়ে ভাবা ও পরিকল্পনা করা।’
ডিয়াগো ম্যারাডোনা সব সময়ই আর্জেন্টিনা দলের প্রেরণা। সউদী আরবের বিপক্ষে হারের পর মেসিদের এখন সেই প্রেরণা খুঁজতে ফিরে তাকাতে হবে ৩২ বছর পেছনে। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ক্যামেরুনের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। পরের দুটি ম্যাচে একটিতে জয় ও অন্যটিতে ড্র করে গ্রæপের সেরা তৃতীয় হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছিল তারা। তখন অবশ্য বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ছিল ২৪। ছয় গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডে স্থান পেত তৃতীয় স্থান অর্জনকারী চারটি দল। আর্জেন্টিনা ছিল তাদেরই একটি।
এর পরের গল্প তো ইতিহাসেই লেখা। দ্বিতীয় রাউন্ডে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে গোলকিপার সের্হিও গয়কোচিয়ার বীরত্বে যুগোসøাভিয়া ও ইতালিতকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা। যদিও ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরে গিয়েছিল তারা। আগের দিনই ১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের অন্যতম তারকা ক্লদিও ক্যানিজিয়া বলেছিলেন, তিনি এবার মেসির আর্জেন্টিনার সঙ্গে নব্বইয়ের ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার দারুণ মিল দেখছেন। সউদী আরবের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর ক্যানিজিয়ার পর্যবেক্ষণ সত্যি করতে প্রার্থনাতেই বসতে হবে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ