বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
পরম কৌশুলী ও মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ রাব্বুল উম্মতে মোহাম্মাদীর বিশেষ সম্মান ও মর্যাদার কারণে তাদেরকে দোয়া করার আদেশ প্রদান করেছেন এবং তা কবুল করার ও ওয়াদা করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব; নিশ্চয়ই যারা অহংকার বশে আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সূরা আল মুমিন : ৬০)।
এই আয়াতে কারীমার প্রথমাংশে দোয়া করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং শেষাংশে সেই দোয়াকেই ‘ইবাদত’ শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। এর দ্বারা এ কথা পরিষ্কার বুঝা যায় যে, দোয়াই ইবাদত এবং ইবাদতই দোয়া। এই আয়াতে কারীমায় দোয়া ও ইবাদত শব্দদ্বয়কে সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর এক বাণীতে বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ তারপর তিনি উপরোক্ত আয়াত পাঠ করলেন। (সুনানে আবু দাউদ : ১৪৭৯; জামে তিরমিজী :২৯৬৯; সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৮২৮)।
মোটকথা প্রত্যেক দোয়াই ইবাদত এবং প্রত্যেক ইবাদতই দোয়া। কারণ এই যে, ইবাদত বলা হয় কারো সামনে চূড়ান্ত দীনতা ও হীনতা অবলম্বন করাকে। বলাবাহুল্য, নিজেকে কারো মুখাপেক্ষী মনে করে তার সামনে প্রার্থনা ও সওয়ালের হস্ত প্রসারিত করা বড় দীনতা, যা ইবাদতের মূল মর্ম। এমনিভাবে প্রত্যেক ইবাদতের মূল লক্ষ্য হলো আল্লাহ পাকের কাছে ক্ষমা, মাগফেরাত ও জান্নাত তলব করা এবং দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করা।
ঠিক এই বিষয়টিকে আমরা আল কোরআনের অন্য আয়াতে ও লক্ষ্য করে থাকি। সেখানে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে আহ্বান করে, যা কিয়ামত পর্যন্ত ও তার আহ্বানে সাড়া দিবে না? আর অবস্থাতো এরকম যে, এসব কিছু তাদের আহ্বান ও দোয়া সম্পর্কে অবহিতও নয়। যখন (কিয়ামতেরই দিন) মানুষদেরকে একত্রিত করা হবে, তখন সে সকল কিছু হবে তাদের শত্রু এবং সেগুলো তাদের ইবাদতকে অস্বীকার করবে। (সূরা আল আহকাফ : ৫-৬)।
আরবি ‘দোয়া’ শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো, ডাকা, আহ্বান করা, যাচনা করা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো প্রয়োজনে ডাকার অর্থে এর ব্যবহার হয়। কখনো ও জিকরকে ও দোয়া বলা হয়। যেমন পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরাফাতে আমার দোয়া ও পূর্ববর্তী সকল নবী রাসূলগণের দোয়া এই কালেমাÑ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদির।’ এতে জিকরকে দোয়া বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।