Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জমজমাট ব্যবসা করছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২২, ১০:০০ পিএম

ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই) তালিকাভুক্ত প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম এবছর বেশ চাঙ্গা ছিল। এনএসই’র তালিকাভুক্ত বেসরকারি এবং ভারতের সরকারি খাতের প্রতিরক্ষা কোম্পানি উভয়ই এই বছর একটি চাঙ্গা বাজার উপভোগ করেছে। ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড এসব কোম্পানির মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ভারত ডায়নামিক্স মিসাইল তৈরি করে। এবছর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১৩৬.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তার ২০২২-২৩ বাজেটে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে ৫.২৫ লাখ কোটি রুপি করেছে। গত বছরে এ ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৪.৭৮ লাখ কোটি রুপি। এই ব্যয়ের মধ্যে, অর্থমন্ত্রী সংগ্রহের জন্য ১.৫২ লাখ কোটি রুপির মূলধন ব্যয় নির্ধারণ করেছেন যার ৬৮ শতাংশ দেশীয় ক্রয়ের জন্য সংরক্ষিত ছিল।

ভারত ফোর্জ এবং অ্যাস্ট্রা মাইক্রোওয়েভের মতো বেসরকারি অস্ত্র তৈরি কোম্পানিগুলিও ২০২২ সালে তাদের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। ভারত ফোর্জ, যার সহযোগী কল্যাণী স্ট্র্যাটেজিক সিস্টেমস লিমিটেড, আর্টিলারি এবং সাঁজোয়া যান তৈরি করে থাকে। এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এবছর ১৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে ভারতের এনএসই ভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য মাত্র ৩.৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত, প্রতিরক্ষা স্টকগুলি বাজারের এই প্রধান বেঞ্চমার্ককে ছাড়িয়ে গেছে। অস্ত্র খাতের এক বিশেষজ্ঞ বলেন, অস্ত্র উৎপাদন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি উদীয়মান অনুভূতি সৃষ্টি করেছে যা ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পকে একটি সূর্যোদয়ের জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নীতিগত পদক্ষেপ যেমন- প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতা নীতি অনুসরণ করে দেশীয় অস্ত্র তৈরিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। স্বদেশীকরণে উদ্বুদ্ধ করে ভারতের বিভিন্ন বাহিনীকে কিছু ভারতে তৈরি সামরিক সরঞ্জাম কেনার বাধ্যবাধকতা এবং এজন্যে মূলধন বরাদ্দ -প্রতিরক্ষা খাতের জন্য বাজারের মনোভাবকে শক্তিশালী করছে।

ব্রোকারেজ ফার্ম স্বস্তিকা ইনভেস্টমার্টের ইক্যুইটি রিসার্চের প্রধান সন্তোষ মীনা মনে করেন, ‘ভারত থেকে অস্ত্র রপ্তানি বৃদ্ধির সাথে এই নীতিগত হস্তক্ষেপগুলি কাজে দিয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতকে উল্লেখযোগ্য গতি এনে দেওয়া সম্ভব হওয়ায় কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য লাফিয়ে উঠেছে। সামগ্রিকভাবে, কোভিড মহামারী, চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত সমস্যা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব থেকে শিক্ষা নিশ্চিত করেছে যে প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতা ভারতে যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিরক্ষা কোম্পানির টার্নওভার, মূল্যায়ন, গুণিতক এবং লাভ সবই বেড়েছে। এর ফলে স্টক বেড়েছে বলে নয়াদিল্লির একজন ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

অথচ ২০২২ সালের আগে, ভারতের প্রতিরক্ষা কোম্পানির স্টকগুলির শেয়ারমূল্য তাদের নির্ধারিত মূল্যের অনেক নীচে লেনদেন করছিল এবং মালিকানাও ছিল কম। পলিসি, ম্যাক্রো এবং মার্কেট ফ্যাক্টরগুলো সব মিলে এই শেয়ারের দাম বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তৈরির জন্য ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এবছর এর প্রতিটি শেয়ার ৩৯১.৪৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯২৭.৩০ রুপিতে। নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি এবং সরবরাহের বাইরে, কোম্পানিটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য পানির নিচে অস্ত্র, বায়ুবাহিত পণ্য এবং সহযোগী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করে।
হিন্দুস্তান এ্যারোনেটিক্স লিমিটেড জঙ্গি বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি করে। এ বছরের শুরুতে এ কোম্পানির শেয়ার মূল্য ছিল ১২৩৩.৭০ রুপি, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬১৭.৯৫ রুপিতে। এর শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১১২.২ শতাংশ। বেসরকারি অস্ত্র তৈরি কোম্পানি এ্যাস্ট্রা মাইক্রোওয়েভ সাব সিস্টেম ও রাডার প্রযুক্তি, এ্যান্টেনা, রিসিভার, কমান্ড গাইডেন্ট ইউনিট সরবরাহ করে। এ কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য প্রতিবছর বাড়ছে ৩৮.১ শতাংশ হারে। এ্যাস্ট্রার মত এমএমএমই কোম্পানিও লাভ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারত সরকার প্রতিরক্ষা খাতের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২৫ বিলিয়ন ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ