Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের আবাসন খাতে পুনরুদ্ধার আগামী বছর শুরু হতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চীনের রিয়েল এস্টেট খাতের পুনরুদ্ধারে নানা ধরনের নীতিসহায়তা দিচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় আগামী বছর খাতটি ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করবে বলে আশা অর্থনীতিবিদদের। আরো প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা ও কোভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের বিষয়টি সংকটপীড়িত খাতটি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন তারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ৯-১৭ নভেম্বরের মধ্যে রয়টার্স ১৬ জন বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদের ওপর জরিপটি পরিচালনা করে। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছরের প্রথমার্ধেও চীনে বাড়ির দাম নিম্নমুখী থাকবে। তবে পুরো বছরের হিসাবে বাড়ির দাম কিছুটা বাড়বে। জরিপ অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে নতুন বাড়ির দাম দশমিক ৫ শতাংশ কমবে। এ হার সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাসে দেয়া ২ শতাংশের চেয়ে অনেক কম। আবার পুরো বছরের হিসাবে বাড়ির দাম ১ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। চায়না রেনেসাঁ হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ লি জংগুয়াং বলেন, আগামী বছর রিয়েল এস্টেট খাতের সূচকগুলো একটি টার্নিং পয়েন্ট দেখতে পাবে। সে সময় কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় অর্থনীতিও ¯িতিশীল হতে শুরু করবে। পাশাপাশি ভোক্তাদের আস্থারও উন্নতি হবে। চীনের ১৭ ট্রিলিয়ন ডলার সমমান অর্থনীতিতে রিয়েল এস্টেট খাতের অবদান প্রায় এক-চতুর্থাংশ। গত মাসেও খাতটির সংকট আরো গভীর হয়েছে। নতুন করে কভিডজনিত বিধিনিষেধ এবং শিল্পজুড়ে প্রতিবন্ধকতাগুলো খাতটিকে আরো চাপে ফেলে দিয়েছে। অক্টোবরে নতুন বাড়ির দাম সাত বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে দ্রুততম গতিতে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি বিক্রি টানা ১৫তম মাসের মতো নিম্নমুখী রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আবাসন খাতে নগদ অর্থপ্রবাহ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর ফলে খাতটি কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে। তবে জরিপে বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদরা বাড়ির দাম হ্রাস, দীর্ঘস্থায়ী কভিড বিধিনিষেধ এবং নির্মাণ বিলম্ব চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে আবাসন খাতের বিক্রি ৫ শতাংশ কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ হার সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাস ১৫ শতাংশের তুলনায় অনেক কম। অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন আগামী বছর বাড়ি বিক্রি মাত্র ১ শতাংশ কমবে। আবাসন খাতের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান চায়না ইনডেক্স একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট হুয়াং ইউ আশা করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বাজারটি স্থিতিশীল হবে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ এ খাতে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করছে। তবে খাতটি পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো কিংবা ভি-আকৃতির পুনরুদ্ধার হবে বলে মনে হয় না। এখন নীতিনির্ধারকদের উচিত আবাসনের চাহিদা বাড়াতে জোর দেয়া। তিনি বলেন, বাড়ি ক্রয় সমর্থনে আরো নীতির প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রধান শহরগুলোয় বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে কিছু বাধা সহজ করা প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে খাতটি মন্দার মধ্যে ডুবে রয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির মূল চালক রিয়েল এস্টেট খাত ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। বিপুল পরিমাণ ঋণে জর্জরিত খাতটি নানা ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করছে। সে সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এ খাতের জন্য বরাদ্দ অতিরিক্ত সুবিধা বন্ধ করে দেয়। অবশ্য এর জন্য দায়ীও ছিলেন আবাসন খাতের কিছু ব্যবসায়ী। তারা ঋণ পরিশোধে ও প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিলেন। যেহেতু আবাসন প্রকল্পগুলোর কাজ থমকে ছিল, তাই ক্রেতারাও আগাম মূল্য পরিশোধ করছিলেন না। ফলে খাতজুড়ে রীতিমতো বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। বর্তমানে প্রণোদনার ঘোষণা দিয়ে নীতিনির্ধারকরা দীর্ঘস্থায়ী মন্দা রোধের চেষ্টা করছেন। বেইজিং গত সপ্তাহে কিছু কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে এবং আরো কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে বলে মনে করছেন দেশটির কর্মকর্তারা। আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ সরকার জিরো কভিড নীতি থেকে সরে আসবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এমনটা হলে দেশটির অন্যান্য খাতের পাশাপাশি আবাসনও পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটবে। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ