Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য সাহায্য তহবিল গঠনে সম্মত ইইউ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মিশরের শার্ম আল-শেখে চলমান ‘কপ-২৭’ আবহাওয়া সম্মেলনের শেষ দিন শুক্রবারে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এদিন আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে ক্ষতির শিকার দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তায় তহবিল গঠনে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আবহাওয়া বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ও ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই ক্ষতিপূরণ তহবিল চাচ্ছিল কিন্তু ধনী দেশগুলো এর বিরোধিতা করে আসছিল। সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স তিমারম্যানস জানান, ইইউ আবহাওয়া বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোর জন্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড নামে একটি তহবিল গঠনে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জোট জি-৭৭ এ তহবিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। এবারের কপ-২৭ সম্মেলনে এটি অন্যতম প্রধান দাবি ছিল। এই তহবিলের অর্থ দরিদ্র দেশগুলোর ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামোর ওপর চরম আবহাওয়ার ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলা, উদ্ধারকাজ পরিচালনা ও পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে। এ বিষয়ে ফ্রান্স তিমারম্যানস জানান, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা তহবিল গঠনের আগে সময় নিয়ে, ভেবেচিন্তে অগ্রসর হওয়া উচিত। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেয়েছে, দ্রুত জি-৭৭ এর দাবি মেনে নিতে। তাই তারা তহবিল গঠনে রাজি হয়েছেন। দাতাদের দ্বারা পরিচালিত এই তহবিল নিঃশর্ত হবে না এবং অর্থ বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। ইইউ এর পক্ষ থেকে তহবিল গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্যারিবীয় দেশগুলোর জোটের মহাসচিব কারলা বারনেট। তিনি জানান, আবহাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও দ্বীপ দেশগুলোর জন্য আর্থিক সাহায্যের বিকল্প নেই। এই তহবিল এসব দেশের ভবিষ্যতের জন্য জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন ইইউ এর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন যে তার দেশ তহবিলে যোগ দেবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ইইউর এই উদ্যোগ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করছেন অনেকেই। কপ-২৭ সম্মেলনে জি-৭৭ জোটভুক্ত দেশগুলোর একজন আলোচক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইইউ এর তহবিল গঠনের ঘোষণা অপ্রত্যাশিত ছিল না। এর মাধ্যমে তারা দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত দেশগুলোকে আলোচনার টেবিলে বসিয়েছে। তা গ্রহণযোগ্য নয়।যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য আবহাওয়া তহবিল গঠনে আপত্তি জানিয়েছিল। তবে ইইউর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়ার পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি ওয়াশিংটন। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আবহাওয়া উপদেষ্টা ও ওয়াশিংটন ভিত্তিক প্রগ্রেসিভ পলিসি ইন্সটিটিউটের আবহাওয়া পরামর্শক পল ব্লেডসোয়ে জানান, দরিদ্র দেশগুলোকে আবহাওয়া পরিবর্তনের অভিযোজন প্রক্রিয়ায় খাপ খাওয়াতে এ তহবিল সহায়তা করবে। সর্বোপরি, এটি বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে অবদান রাখবে, যা প্যারিস আবহাওয়া চুক্তির অন্যতম শর্ত। এর আগে কপ২৭ সম্মেলনে চীনের আবহাওয়া বিষয়ক প্রতিনিধি ও কূটনীতিক শি জেনহুয়া জানান, আবহাওয়া সংকটের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির তহবিলে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য অর্থ দিতে রাজি তার দেশ। চীন ধনী দেশগুলিকে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে, কারণ তার দেশের এই ধরনের কার্যকলাপে যোগদানের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে গত বছরের কপ-২৬ সম্মেলনের বিষয়গুলোই এবারের সম্মেলনেও গুরুত্ব পেয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যে জোর দেওয়া হয়েছে এবারও। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিসে কপ-২১ নামের একটি সম্মেলনে আবহাওয়া চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ২০০টি দেশ এতে স্বাক্ষর করেছিল। আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ