Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পুলিশ স্টেশন, চিন্তিত এফবিআই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

সম্প্রতি বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, বিশ্বের অন্তত ২১টি দেশে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন রয়েছে। পাঁচটি মহাদেশে ছড়িয়ে থাকা ২১টি দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। আর এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় হিন্দুস্তান টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে। সেখানে তিনি জানান, চীনের সরকার মার্কিন শহরগুলোতে অননুমোদিত পুলিশ স্টেশন স্থাপন করায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সম্ভবত প্রভাব বিস্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে এসব পুলিশ স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ইউরোপভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সেফগার্ড ডিফেন্ডারস চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে সংস্থাটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিসহ বিশ্বের বড় বড় শহরে কয়েক ডজন চীনের পুলিশের সার্ভিস স্টেশন’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিসহ বিশ্বের বড় বড় শহরে কয়েক ডজন চীনের পুলিশের সার্ভিস স্টেশন রয়েছে। এরপরই সরব হয় মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা। বিরোধী আইন প্রণেতারা এই চীন থানাগুলোর প্রভাব সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের কাছে উত্তর চেয়েছিলেন। মূলত চীনে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকারের বিরোধী যেসব মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে, তাদের নজরদারির আওতায় রাখতে বিভিন্ন দেশে গোপন পুলিশ স্টেশন স্থাপন করছে বেইজিং। নিউইয়র্ক ছাড়াও ৫টি মহাদেশের অন্তত ২১টি দেশের ২৫টি শহরে চীনের ৫৪টি থানা রয়েছে। এসব দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডের মতো শিল্পোন্নত ও ধনী দেশের পাশাপাশি রয়েছে নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়ার মতো সংঘাতপূর্ণ দরিদ্র বিভিন্ন দেশও। তবে এসব গোপন স্টেশনের তথ্য চীন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছাড়া খুব কম লোকই জানে। গোপন এসব পুলিশ স্টেশনগুলো কিছু চীনের নাগরিক বা বিদেশে তাদের আত্মীয়দেরকে ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি করার জন্য চীনে ফিরে যাওয়ার চাপ সৃষ্টিতে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কাজ করছে। এটি তাদের চীনে যুক্তফ্রন্ট ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের কার্যক্রমের সঙ্গেও যুক্ত করেছে। চীন কমিউনিস্ট পার্টির এই সংস্থাটি বিদেশে দলীয় প্রভাব ও প্রচারণার কাজ চালিয়ে থাকে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেট হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড গভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির শুনানিতে এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে বলেন, আমি এই বিষয়ে খুব উদ্বিগ্ন। আমরা এই পুলিশ স্টেশনগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত। তবে মার্কিন মাটিতে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশনের উপস্থিতি স্বীকার করার সময়, ক্রিস্টোফার রে এই বিষয়ে এফবিআই এর তদন্তমূলক কাজের বিবরণ দিতে অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এটা ভাবা বেশ আপত্তিজনক যে, যথাযথ সমন্বয় ছাড়াই চীনের পুলিশ নিউইয়র্কে দোকান স্থাপনের চেষ্টা করবে। এটি সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে এবং মানসম্মত বিচারিক ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকাণ্ডের প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। রিপাবলিকান সিনেটর রিক স্কট জিজ্ঞাসা করেন, এই ধরনের অনুমোদনহীন স্টেশনগুলো মার্কিন আইনকে লঙ্ঘন করেছে কিনা, জবাবে ক্রিস্টোফার রে জানান, এফবিআই আইনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। গ্রেগ মারফি ও মাইক ওয়াল্টজসহ মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা গত অক্টোবরে মার্কিন বিচার বিভাগকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই জাতীয় স্টেশনগুলোর বিষয়ে তদন্ত করছে কিনা সেখানে তা জানতে চান তারা। রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা যুক্তি দেন যে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশনগুলো চীনা বংশোদ্ভূত মার্কিন বাসিন্দাদের ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাসের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে ডাচ কর্তৃপক্ষের তদন্তের পরে নেদারল্যান্ডসে এমন স্টেশন থাকার কথা অস্বীকার করেছিল চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চীন জানিয়েছে, তারা চীনের নাগরিকদের নথি পুনর্নবীকরণ করতে সহায়তা করার জন্য সেখানে অফিস খুলেছিল। রে জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের মতাবলম্বী নয় এমন লোকদের যুক্তরাষ্ট্রে হয়রানি, নিপীড়ন, নজরদারি ও ব্ল্যাকমেইল করার জন্য চীনের সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে ওয়াশিংটন। এটি একটি বাস্তব সমস্যা এবং এ নিয়ে তারা তাদের বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ নয় যেখানে এটি ঘটেছে বলে জানান ক্রিস্টোফার রে। হিন্দুস্তান টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ