Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিজয় সুসংহত করার প্রধান বাধা সাম্প্রদায়িকতা- ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের বর্ণাঢ্য র‌্যালি

প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৩ এএম, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। শোভাযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিজয় সুসংহত করার পথে প্রধান বাধা সাম্প্রদায়িকতা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ, প্রতিহত ও পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণ করাই হোক আজকের শপথ।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ফটক থেকে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। শুক্রবার বিকেল তিনটা ২০ মিনিট থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তরপাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেটের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। মিছিলটি শুরু করার কথা ছিল বেলা চারটা ৩১ মিনিটে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ক্ষণে। কিন্তু বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের  সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য এক ঘণ্টা আগেই শুরু হয় এই মিছিল।
পবিত্র জুমার নামাজের পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও মহল্লা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রায় আসতে শুরু করেন। বাস, মিনিবাস, ট্রাক, পিক-আপ ভ্যানে বাজনা বাজিয়ে ও নানা ঢঙে সেজে দলের কর্মী-সমর্থকেরা আসতে থাকেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের অনেকের পরণে ছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজের মোড়ানো পোশাক। দলে দলে হাতে ছোট ছোট পতাকার পাশাপাশি বিশালাকার পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শুধু জাতীয় পতাকাই নয়, হাতি, ঘোড়ার গাড়ি ও দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়েও শোভাযাত্রায় অংশ নেন তারা। তবে নজর কাড়ে বিশালাকায় দুটি হাতি। হাতি দুটি শুঁড় উঁচিয়ে অভিবাদন জানায় শোভাযাত্রায় আগত নেতাকর্মীদের। বিজয় উদযাপনে আওয়ামী লীগের বর্ণিল শোভাযাত্রা দেখল রাজধানী। বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে, নানা ঢং এ সেজে দলের কর্মী-সমর্থকরা অংশ নিয়েছে এই শোভাযাত্রায়। হাতে বাংলাদেশের পতাকা, মুখে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনী জয় বাংলার সেøাগান।
শোভাযাত্রায় বড়দের সঙ্গে অংশ নেয় ছোটরাও। তবে তারা মিছিলে নয়, ভ্যান বা গাড়িতে বসে মুক্তিযোদ্ধার সাজে সেজে আসে। কারও হাতে খেলনা বন্দুক, কেউবা শরণার্থীর বেশে যোগ দেয় শোভাযাত্রায়। একাত্তর সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী রাজাকার, আলবদর ও আলশামসকে পাকড়াও করার বিভিন্ন কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হয় এই শোভাযাত্রায়। সেøাগান আর গানে গানে চলতে থাকা শোভাযাত্রাটি শেষ হয় ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে গিয়ে।
শোভাযাত্রার আগে ট্রাকের ওপর নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন, সে বিচার শেষ হবেই। সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, মুজিব আদর্শ বাস্তবায়ন এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলে আজ এখানে সবাইকে শপথ নিতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ দলের বিভিন্ন সহযোগী এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রার কারণে রাজধানীর প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব, আসাদগেট এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। রাজধানীর প্রায় সব সড়কেই পড়ে এর প্রভাব। ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ব্যাপক যানজটের কবলে পড়েন হাজারো মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে এক মঞ্চে আসার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে এক মঞ্চে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
গতকাল শুক্রবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী। পরে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। স্বাধীনতার চেতনার ধারক মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি যারা, তাদের একমঞ্চে আসতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করতে হবে। দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সবাইকে একমঞ্চে আসতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি বিচারাধীন। বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে সরকারের কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, দেখুন।’ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশের বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
‘মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীর বীর সন্তানদের প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এই আহবান জানান।
এ সময় তিনি আরও বলেন,  সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের যে চ্যালেঞ্জ,  সেই চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। আপাদত দৃষ্টি তারা উপরে উপরে অথবা প্রকাশ্যে কোন শত্রুতা দেখাচ্ছে না। তবে তারা তলে তলে ভয়াবহ কোনো হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা সেটা বলা যাচ্ছে না। তাই সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ