Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কূটনীতিকদের বক্তব্যে তোলপাড়

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৭ এএম

বিদেশিদের এমন বক্তব্যে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের লজ্জা হওয়া উচিত : তৈমূর আলম খন্দকার
জাপান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিধ্বনি : অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় : অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন
ভোটের অনিয়মের কিছু দলিল তাদের হাতে পৌঁছেছে : মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ

দেশের সব দলের অংশগ্রহণে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি ক‚টনীতিকরা একাট্টা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, তুরস্ক, অষ্ট্রেলিয়া, চীন, জাপানসহ উন্নয়নসহযোগী সব দেশের ঢাকায় কর্মরত ক‚টনীতিকরা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েই যাচ্ছেন। তারা বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন, সুশীল সমাজ আয়োজিত সেমিনারে বক্তৃতা করছেন; এমনকি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বৈঠক করে এবং আসন্ন ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায়’ সহায়তার প্রস্তাব দিচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার ধারাবাহিকভাবে আসন্ন নির্বাচন ‘গ্রহণযোগ্য’ করার ব্যাপারে তাদের দেশের অবস্থান তুলে ধরছেন। গত কয়েক দিনেÑ চীন, নেদারল্যান্ড, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে কথা বলেছেন। সবার এক দাবি উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা দেখতে চান। গত বুধবার তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান বলেছেন, ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনে সব দল সংলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।’ ১৪ নভেম্বর কানাডিয়ান হাইকমিশনার লিলি নিকোলাস, ১৫ নভেম্বর নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন এবং সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ড, ৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ১৩ জুলাই ইইউ রাষ্ট্রদূত এবং ১২ জুলাই জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং নির্বাচনের বিষয়ে বক্তব্য দেন। গত মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বক্তৃতা করেন। সেই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুনেছি ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশ কর্মকর্তারা আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছেন। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে আমি এমন দৃষ্টান্তের কথা শুনিনি। আশা করব, আগামী নির্বাচনে তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না। পুলিশ কর্মকর্তারাও আরো সতর্ক হবেন।’

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির বক্তব্যকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। কেউ কেউ এটাকে ক‚টনৈতিক শিষ্টাচারবহিভর্‚ত হিসেবে অবিহিত করেছেন। এ বক্তব্যে প্রকাশের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত মঙ্গলবার ফেইসবুক পেইজে দেয়া এক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের অ্যাম্বাসেডরকে ডেকেছিলাম। তাকে যা যা বলা দরকার আমরা বলেছি। সবকিছু বিস্তারিত গণমাধ্যমে বলার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না’। এদিকে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ‘নির্বাচনে পুলিশের ভ‚মিকা সম্পর্কে’ জাপানি রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

জাপানের রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য নিয়ে কৃষিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, নির্বাচন কমিশনারসহ কয়েকজন মন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের অনেকেই জাপানের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ উল্লেখ করলেও বেশির ভাগ মানুষ বলেছেন, দেশের জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের কথা বলে তিনি সঠিক কাজ করেছেন। উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে এটা দেখা তার দায়িত্ব। কেউ কেউ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কয়েকজন মন্ত্রীর কাÐজ্ঞানহীন বক্তব্য সরকারকে বিপাকে ফেলছে। কেউ লিখছেন প্রতিটি দেশের নাগরিকের সঙ্কট সমস্যা নিয়ে কথা বলার অধিকার সবার রয়েছে। কেউ লিখেছেন জাপান নিঃশর্তভাবে ঋণদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ দেখা উচিত।

জাপানের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারি একটি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অনাকাক্সিক্ষত। বিদেশি ক‚টনীতিকরা শিষ্টাচার লংঘন করলে সরকার কঠোর হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বন্ধুদের পরামর্শের প্রয়োজন নেই। বন্ধুদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য সরকার আশা করে না। গত ৪ বছরে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ জাপান সরকার করেনি। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক কুষ্টিয়ায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে জাপান কেন, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রদূতের নাক গলানো আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। তাদের আবারো সতর্ক করা হবে। কারো কাছে পদানত হওয়া অথবা দেশের আত্মমর্যাদা রক্ষায় আমরা কাউকে ছাড় দেব না। গত বুধবার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক‚টনীতিকদের শিষ্টাচারবহির্ভ‚ত কথা বলার পেছনে বিএনপিই বেশি দায়ী। কেননা, তারা বারবার তাদের কাছে গিয়ে কথা বলাতে বাধ্য করে। ক‚টনীতিকদের পায়ে পানি ঢালে। জাপানের রাষ্টদূতের বক্তব্য নিয়ে মন্ত্রীদের মতোই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো: আনিছুর রহমান। তিনি বাঙ্গালকে হাইকোর্ট দেখানো প্রবাদের মতোই বলেছেন, বিদেশি ক‚টনীতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশন (প্রকৃতপক্ষে ভিয়েনা কনভেনশন) দ্বারা সীমাবদ্ধ, তাদের এর মধ্যে থাকা উচিত। কেবল জাপানের রাষ্ট্রদূত নয়, সম্প্রতি অন্যান্য দেশের ক‚টনীতিকরাও নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। তারা কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছেন, এটা তারাই ভালো জানেন।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বক্তব্য দেশের জনগণ কীভাবে গ্রহণ করে, সেটা আগে দেখা দরকার। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা এটাকে ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ অভিযোগ তুলেছেন; কিন্তু জনগণ গ্রহণ করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আবদুল মোমেন ওয়াশিংটনে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি বিøংকেনকে যখন ‘বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যবস্থা করেন’ অনুরোধ করেন বা ভারতে গিয়ে মোদি সরকারের দায়িত্বশীলদের বলেন ‘শেখ হাসিনাকে আবার বাংলাদেশের ক্ষমতায় রাখতে যা যা করা প্রয়োজন করতে হবে’ তখন কি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হয় না? বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য ও অতিকথন তাদের বিপদে ফেলে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের গণতান্ত্রিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এতে পরিষ্কার তারা মনে করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। কিন্তু তারা উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায়। যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর (র‌্যাব) কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পাতানো নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র আগেও জানত। এখন তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র চাচ্ছে সে কারণে উদ্যোগ নিয়েছে। তারা তাদের সহযোগী দেশগুলো দিয়ে এখন গণতন্ত্রের জন্য চাপ দিচ্ছে। জাপান হচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ। জাইকা নিঃশর্তে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থের জোগান দিয়ে যাচ্ছে। এখন সরকারের মন্ত্রীদের উল্টাপাল্টা কথায় জাপান যদি বলে তোমাদের উন্নয়নের পার্টনার হতে পারি; দেশ যদি গণতন্ত্রের অভাবে দেউলিয়া হয় তার দায়িত্ব কে নেবে? জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে সে অবস্থা কি আছে? বুঝতে হবে যুক্তরাষ্ট্র যা চেয়েছে ২০০৮ সালে তাই হয়েছে। তখন কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াকে ব্যবহার করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশগুলোকে ব্যবহার করছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধে না গিয়ে কীভাবে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া যায়, সে ব্যপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, পৃথিবী এখন গেøাবাল ভিলেজ; বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। প্রতিটি দেশে একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে জনগণের ওপর কোনো অনাচার হলে আমরা এখন থেকে প্রতিবাদ করে থাকি। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কীভাবে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। এখন উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো বাংলাদেশের গণতন্ত্র চাচ্ছে। এটা ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ দাবি করে মন্ত্রীরা অনুযোগ করছেন। আসলে মন্ত্রীদের লজ্জা হওয়া উচিত। বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য সবার কথা বলা উচিত। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করায় ওই দেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ আমরা প্রতিবাদ করছি। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে বিদেশিদের কথা বলা যাবে না কেন? মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছি। অনেক রক্ত ঝড়েছে। এখন সে দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার, আইনের শাসন নেই। বিদেশিরা এসব নিয়ে কথা বলছেন। আসলে রাষ্ট্রের লজ্জা হওয়া উচিত।

জাপানের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, নির্বাচন এলেই আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে কিছু কথা আসে। সেটি অতীতেও হয়েছে, এবারও হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই বিদেশিদের আমাদের দেশীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আমরা দেখেছি ভারত-ফিলিপাইনসহ অনেক দেশেই অনেক কিছু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। কিন্তু সেখানে বিদেশিরা তেমন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ কী চায় তা দেশের নাগরিকরা ঠিক করবে। এখন বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে এ রকম তৎপরতা কোনোভাবেই করা ক‚টনীতিকদের উচিত নয়। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেছেন, ক‚টনৈতিক বিষয়ে প্রত্যেকটি দেশে কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় রয়েছে। সেগুলোতে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আর আমরা সবসময় দেখে আসছি এ বিষয়গুলো তখনই ঘটে, যখন রাজনৈতিক বিভক্তি দেখা দেয়। তখন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কিছু গোপনবিষয় বিদেশিদের জানিয়ে দেন। এটি খুবই অশুভ লক্ষণ। স¤প্রতি আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের নির্বাচন ও মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে বিদেশিরা কথা বলছেন। এর মানে হচ্ছে, এসব অনিয়মের কিছু দলিল তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। তাই তারা জোর দিয়ে কথা বলছেন। এটি কোনোভাবেই ভালো বিষয় নয়।

এ প্রসঙ্গে একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা না করে মন্ত্রীরা একের পর এক অর্বাচিনের মতো কটাক্ষপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। করোনাকালে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ১০ কোটি টাকা বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে দিয়েছে। কাজেই তাদের সঙ্গে বসে সঙ্কট উত্তোরণের পথ না খুঁজে আবোলতাবোল বক্তব্য দিয়ে সঙ্কটকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। জাপানা যেভাবে নিঃশর্ত ঋণ দেয় তারা তো গণতন্ত্র দেখতে চাইবেই। আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরে যাবেন। সে কারণে গতকালও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। সেখানে তো জাপানের কাছে আগামী বাজেটের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি তাদের চোখ খুলেছেন। তারা এখন দেখতে পাচ্ছেন যে, বাংলাদেশে কিছু হচ্ছে। বাংলাদেশ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। স্পার্টেড পারসেল অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল গেøাবাল কমিউনিটি; গোটা বিশ্বের একটা অংশ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • Monir Hossain ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    আমার বয়স ৪২ বছর, এখন পযর্ন্ত আমি আমার ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে দিতে পারি নাই বতর্মান সরকারের কারনেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Hossain ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    আমার বয়স ৪২ বছর, এখন পযর্ন্ত আমি আমার ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে দিতে পারি নাই বতর্মান সরকারের কারনেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Tamim Iqbal ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    ভারত পক্ষে থাকলে ই হবে আওয়ামী লীগের। এটা আওয়ামী লীগ জানে
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Islam Shaheen ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৭ এএম says : 0
    বিদেশি দের কাছে বাজেট সহায়তার নামে ঋণের টাকা চাইবেন আর ভোট চুরির কথা বললে অভ্যন্তরিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ!!
    Total Reply(0) Reply
  • Arman Hossain Kanon ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৭ এএম says : 0
    খেলা হবে বলে যারা হুমকি দিতো তাদের জন্য এটা কেবল ট্রেলার পিকচার আভি বাকিঁ হে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Omor Faruk ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৮ এএম says : 0
    জনগণ নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Ali ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৮ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগের নেতাদের কথা জনগণ বিশ্বাস করে না জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখতে চাই ।
    Total Reply(0) Reply
  • আরিফুল হক তিতাস ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    আগে সরকার পতন, তার পরে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটা সুন্দর সব দলের অংশ গ্রহনে মুলোক একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন।
    Total Reply(0) Reply
  • Jaher Ali ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩০ এএম says : 0
    বাংলাদেশের জনগণের ভিতরের কষ্টের কথা জাপানের রাষ্ট্রদূত প্রকাশ করেছে ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে নাই যারা দিনের ভোট রাত্রে করে তাদেরকে আল্লাহ হেদায়েত করুক
    Total Reply(0) Reply
  • F R. Omar Farok ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩০ এএম says : 0
    অনাকাঙ্ক্ষিত নয়,,অবশ্যই কাংখিত।। শুধু তিনিই নন,২০১৪,২০১৮ তে কিভাবে নির্বাচন হয়েছে তা দেশের প্রতিটি মানুষই জানে।।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohmmed Dolilur ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ৩:০৬ এএম says : 0
    কি এমন ক্ষতি হয়েছে ,রাষ্ট্র দূত কে বিদেশী ওরা আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করেন,একটি দুইটি কথা বললে কি একেবারে মহা ভারত অশুদ্ধ হয়েছে,ঠিক আছে নিরপক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা রেখে নির্বাচন করুন,তখন ওরা দেখবে পুলিশ বাক্স ভর্তি করে না কি জনগণ বাক্স ভর্তি করে,আসল কথা হলো আমি দরবার মানতে রাজি,কিন্তু তালগাছ দিমু না,বিদেশীরা কিছু করতে এবং বলতে পারবেনা ,তাদের থেকে রিন এবং সাহায্য সহযোগিতা কোন ও, তাদের কি ঠেকা পড়লেন তাহারা রিন ও সাহায্য দিয়ে আপনাকে ভালো থাকতে দেওয়ার আবার তাহারা কিছু বলতেও পারবে না,তাতে দেখা যাচ্ছে বর্তমান সরকার পৃথিবীর সোষ্ঠ সরকার,আরে ভাই আপনারা ক্ষমতা ছেড়ে দিন কি সমস্যা জনগণ যদি ভোটের মাধ্যমে আপনাদের চায় আবার চেয়ারটি পাবেন,এখন আপনাদের কথা হলো আমরা চোয়ারে বসে থাকমু আর আর ছাত্র ছাত্রীদের যে ভাবে পড়াইমু আর ছাত্র ছাত্রী সে ভাবে পড়ালেখা করতে হবে,তবে ছাত্র ছাত্রী পনর বসরে ক্লাস এখন ইউনিভার্সিটি পড়ে,ওরা কি এখনও ক্লাস ওয়ানে পড়ে না কি যে আগডুম বাগডুম ঘোড়া ডুম সাজে এই গুলি পড়বে,এত এব পনর বসর আগের জনগণ আর এখনকার জনগণের মধ্য অনেক ব্যবধান আছে,এখনকার জনগণ পনর বসর আগে বয়স ছিল পাঁচ ছয় বসরের,সেই টাইমের বয়সে ওরা দেখেছে ,শাপলা চততরে জুতা ছিড়ার কিছু ছিল না,এবং কেন্টমেনটে লাশ আর লাশ,কিন্তু এখন সেই জনগণের বয়স 15+7=22বসর আপনারা কি বলেন এখনও শাপলা চততরে জুতা থাকবে জনগণের লাশ পরিবহনে নিয়ে ভারতে পোড়া দিবে তাহা দেখবে,এবং কেন্টমেনটে জনগণের ভাইয়ের লাশ ড্রেন মধ্যে দেখবে জনগণ কি ঐ সমস্ত মেজর জেনারেল লেফটেন্যান্ট কর্নেলের ভাই বাবা আত্মীয় নয়,এরা কি বাংগালী সন্তান ছিল না,না কি,আর যারা ঘুম খুন ও হত্যা হয়েছে ওরা কি বাংগালী সন্তান নয়,যারা বিনা দোষে জেলে আছে এরা কি বাংগালী নয়,দয়া করে পনর বসর আগের সব বাদ দিন,বর্তমান চিন্তা করুন,ক্ষমতা ছেড়ে দিন নিরপক্ষ নির্বাচন করুন,আপনারা মনে করবেন না যে বর্তমান জনগণ অন্য দেশ থেকে আসছে,এরা আপনার ভাই বোন সন্তান,অবশ্যই আপনাদের সাথে থাকবে,দেশের ও জনগণের ক্ষতি করার কারোর অধিকার নেই,এত এব জোর জবরদস্তি করিয়েন না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ